ঢাকা , মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo কালুখালীতে অগ্নিকান্ডে ৪ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভষ্মীভুতঃ ৪ কোটি টাকার সম্পদের ক্ষতি Logo বোয়ালমারীতে অবৈধ কয়লা কারখানায় ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা Logo মধুখালীতে বাবাকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে প্রাণ গেলো মেয়ের, আহত ২ জন Logo সদরপুরে ১০০ পিস ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক Logo ফরিদপুরে নয় দিনব্যাপী ধর্মীয় অনুষ্ঠান সম্পন্ন Logo ১৪ই মে কালুরঘাট নতুন সেতুর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস Logo চুয়াডাঙ্গার সদর উপজেলায় ভুট্টা ক্ষেত থেকে মরদেহ উদ্ধার Logo ফুলবাড়ীতে RUNNER EXPRESS এর স্বপ্ন অটো শোরুম উদ্বোধন Logo তানোরের হাটবাজারে অপরিপক্ব লিচু দাম আকাশছোঁয়া Logo রাজশাহীতে মোবাইল কোর্টে ৩ জন বালাইনাশক ব্যবসায়ীকে জরিমানা
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

ভারত থেকে পাইপলাইনে ডিজেল আসছে ১৮ মার্চ

-ভারত থেকে পাইপলাইনে ডিজেল আসতে প্রস্তুত প্রকল্পের কাজ।

পাইপলাইনের মাধ্যমে ভারত থেকে ডিজেল আমদানি শুরু হচ্ছে আগামী ১৮ মার্চ। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই ডিজেল আমদানির কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন। বর্তমানে ভারতের শিলিগুড়িতে চলছে ডিজেল সরবরাহের প্রস্তুতি, আর বাংলাদেশের পার্বতীপুরে প্রস্তুত হচ্ছে ডিজেল সংরক্ষণ ও সরবরাহ ব্যবস্থা। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এদিকে সময়মতো নির্মাণসামগ্রী আমদানি করতে না পারায় পার্বতীপুরে নতুন ডিপোর কাজ চলতি বছর শেষ হচ্ছে না। সক্ষমতা থাকায় পুরনো ডিপোতেই সংরক্ষণ করা হবে ভারত থেকে আমদানি করা এই ডিজেল। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ভারত থেকে পাইপলাইনে ডিজেল আমদানি শুরু হলে একদিকে সাশ্রয় হবে সময়, অন্যদিকে কমবে জ্বালানি পরিবহন ব্যয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বিপিসির চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদ গতকাল শনিবার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘চলতি মাসের ১৮ তারিখ ভারত থেকে ডিজেল আসা শুরু হচ্ছে। প্রথম দিকে এক হাজার টন করে ডিজেল আমদানি করা হলেও ধীরে ধীরে পরিমাণ বাড়ানো হবে। উদ্বোধনের এক সপ্তাহ আগে থেকে পরীক্ষামূলকভাবে পাইপলাইনে ডিজেল আসা শুরু হবে।’

তিনি বলেন, ‘পার্বতীপুরের পুরনো ডিপোতে যথেষ্ট জায়গা থাকায় সেখানেই আমদানি করা ডিজেল সংরক্ষণ করা হবে। পার্বতীপুর ডিপোর সক্ষমতা রয়েছে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টন। নতুন ডিপোর কাজ চলমান। এর আগে এখানেই ডিজেল সংরক্ষণ করা হবে। পাইপলাইনে ডিজেল আসা শুরুর পর আমাদের অনেক সময় সাশ্রয় এবং পরিবহন ব্যয় কমবে। এতে খুব সহজে উত্তরবঙ্গে ডিজেল সরবরাহ করা যাবে।’

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) পক্ষে মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড (এমপিএল) ও ভারতের নুমালীগড় রিফাইনারি লিমিটেড (এনআরএল) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এরই মধ্যে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী পাইপলাইন স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। নতুন ডিপোর নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় আপাতত পুরনো ডিপোতেই ডিজেল সংরক্ষণের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন স্থাপন প্রকল্পের পরিচালক টিপু সুলতান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আশা করছি চলতি বছরই নতুন ডিপো নির্মাণকাজ শেষ করা যাবে। আপাতত পুরনো ডিপোতে ডিজেল রাখা হবে।’

বিপিসি সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দেশে বছরে জ্বালানি তেলের চাহিদা রয়েছে ৭০ থেকে ৭২ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে ডিজেলের চাহিদা ৪৮ থেকে ৪৯ লাখ মেট্রিক টন, যার ৮০ শতাংশ সরকার আমদানি করে। বর্তমানে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করা হচ্ছে। আর পরিশোধিত তেল আমদানি করা হয় সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, আরব আমিরাত, কুয়েত, থাইল্যান্ড ও ভারত থেকে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলের বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়। এমন পরিস্থিতিতে কম খরচে নতুন উৎস থেকে ডিজেল আমদানির পথ খুঁজছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে রাশিয়া ও ব্রুনেইর সঙ্গেও আলোচনা করছে সরকার।

বিপিসির কর্মকর্তারা বলছেন, জ্বালানি তেল আমদানির ক্ষেত্রে প্রতি ব্যারেলে (১৫৯ লিটার) জাহাজভাড়াসহ অন্য খরচ দিতে হয় গড়ে ১০ ডলার। ভারত থেকে আমদানির ফলে এটি আট ডলার হতে পারে। প্রতি ব্যারেলে দুই ডলার সাশ্রয় করা গেলে এক লাখ টনে সাশ্রয় করা সম্ভব প্রায় ১৫ লাখ ডলার। এর সুবিধা ভোগ করবে উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলার মানুষ।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ম. তামিম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘পাইপলাইনের মাধ্যমে ভারত থেকে ডিজেল আমদানিতে বাংলাদেশের জন্য বিকল্প উৎস তৈরি হচ্ছে। সামনে যদি আন্তর্জাতিক বাজারে সংকট তৈরি হয়, তাহলে আমরা ভারত থেকে বাড়তি ডিজেল আমদানি করতে পারব।’


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

কালুখালীতে অগ্নিকান্ডে ৪ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভষ্মীভুতঃ ৪ কোটি টাকার সম্পদের ক্ষতি

error: Content is protected !!

ভারত থেকে পাইপলাইনে ডিজেল আসছে ১৮ মার্চ

আপডেট টাইম : ০৭:২৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ মার্চ ২০২৩
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা ডেস্ক :
পাইপলাইনের মাধ্যমে ভারত থেকে ডিজেল আমদানি শুরু হচ্ছে আগামী ১৮ মার্চ। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই ডিজেল আমদানির কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন। বর্তমানে ভারতের শিলিগুড়িতে চলছে ডিজেল সরবরাহের প্রস্তুতি, আর বাংলাদেশের পার্বতীপুরে প্রস্তুত হচ্ছে ডিজেল সংরক্ষণ ও সরবরাহ ব্যবস্থা। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এদিকে সময়মতো নির্মাণসামগ্রী আমদানি করতে না পারায় পার্বতীপুরে নতুন ডিপোর কাজ চলতি বছর শেষ হচ্ছে না। সক্ষমতা থাকায় পুরনো ডিপোতেই সংরক্ষণ করা হবে ভারত থেকে আমদানি করা এই ডিজেল। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ভারত থেকে পাইপলাইনে ডিজেল আমদানি শুরু হলে একদিকে সাশ্রয় হবে সময়, অন্যদিকে কমবে জ্বালানি পরিবহন ব্যয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বিপিসির চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদ গতকাল শনিবার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘চলতি মাসের ১৮ তারিখ ভারত থেকে ডিজেল আসা শুরু হচ্ছে। প্রথম দিকে এক হাজার টন করে ডিজেল আমদানি করা হলেও ধীরে ধীরে পরিমাণ বাড়ানো হবে। উদ্বোধনের এক সপ্তাহ আগে থেকে পরীক্ষামূলকভাবে পাইপলাইনে ডিজেল আসা শুরু হবে।’

তিনি বলেন, ‘পার্বতীপুরের পুরনো ডিপোতে যথেষ্ট জায়গা থাকায় সেখানেই আমদানি করা ডিজেল সংরক্ষণ করা হবে। পার্বতীপুর ডিপোর সক্ষমতা রয়েছে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টন। নতুন ডিপোর কাজ চলমান। এর আগে এখানেই ডিজেল সংরক্ষণ করা হবে। পাইপলাইনে ডিজেল আসা শুরুর পর আমাদের অনেক সময় সাশ্রয় এবং পরিবহন ব্যয় কমবে। এতে খুব সহজে উত্তরবঙ্গে ডিজেল সরবরাহ করা যাবে।’

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) পক্ষে মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড (এমপিএল) ও ভারতের নুমালীগড় রিফাইনারি লিমিটেড (এনআরএল) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এরই মধ্যে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী পাইপলাইন স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। নতুন ডিপোর নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় আপাতত পুরনো ডিপোতেই ডিজেল সংরক্ষণের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন স্থাপন প্রকল্পের পরিচালক টিপু সুলতান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আশা করছি চলতি বছরই নতুন ডিপো নির্মাণকাজ শেষ করা যাবে। আপাতত পুরনো ডিপোতে ডিজেল রাখা হবে।’

বিপিসি সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দেশে বছরে জ্বালানি তেলের চাহিদা রয়েছে ৭০ থেকে ৭২ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে ডিজেলের চাহিদা ৪৮ থেকে ৪৯ লাখ মেট্রিক টন, যার ৮০ শতাংশ সরকার আমদানি করে। বর্তমানে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করা হচ্ছে। আর পরিশোধিত তেল আমদানি করা হয় সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, আরব আমিরাত, কুয়েত, থাইল্যান্ড ও ভারত থেকে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলের বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়। এমন পরিস্থিতিতে কম খরচে নতুন উৎস থেকে ডিজেল আমদানির পথ খুঁজছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে রাশিয়া ও ব্রুনেইর সঙ্গেও আলোচনা করছে সরকার।

বিপিসির কর্মকর্তারা বলছেন, জ্বালানি তেল আমদানির ক্ষেত্রে প্রতি ব্যারেলে (১৫৯ লিটার) জাহাজভাড়াসহ অন্য খরচ দিতে হয় গড়ে ১০ ডলার। ভারত থেকে আমদানির ফলে এটি আট ডলার হতে পারে। প্রতি ব্যারেলে দুই ডলার সাশ্রয় করা গেলে এক লাখ টনে সাশ্রয় করা সম্ভব প্রায় ১৫ লাখ ডলার। এর সুবিধা ভোগ করবে উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলার মানুষ।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ম. তামিম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘পাইপলাইনের মাধ্যমে ভারত থেকে ডিজেল আমদানিতে বাংলাদেশের জন্য বিকল্প উৎস তৈরি হচ্ছে। সামনে যদি আন্তর্জাতিক বাজারে সংকট তৈরি হয়, তাহলে আমরা ভারত থেকে বাড়তি ডিজেল আমদানি করতে পারব।’


প্রিন্ট