ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে র্যাগিংয়ের নামে ছাত্রলীগ নেত্রী ও তার সহযোগীদের ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় শাখা ছাত্রলীগের গঠিত তদন্ত কমিটির ডাকে সাড়া দেননি ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুন।
ঘটনার তদন্তে সাক্ষাৎকারের জন্য ভুক্তভোগী ফুলপরীকে রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ক্যাম্পাসে ডেকে পাঠান ছাত্রলীগ গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা।তবে নিরাপত্তার অভাব বোধ করে ছাত্রলীগের তদন্ত কমিটির ডাকে ক্যাম্পাসে আসেননি বলে জানিয়েছেন ফুলপরী।
এদিকে আজকেই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমা দেওয়ার শেষ দিন। তদন্ত কমিটির সদস্যরা জানান, ফুলপরীর সাক্ষাৎকার নিয়ে আজকে বিকেলেই প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ফুলপরী ক্যাম্পাসে আসেননি।
এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মুন্সী কামরুল হাসান অনিক জানান, আজকেই আমাদের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সর্বশেষ দিন। চেয়েছিলাম আজকে ফুলপরীর সরাসরি সাক্ষাৎকার নেব। সেজন্য তদন্ত কমিটির পক্ষ থেকে তাকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছিলাম। কিন্তু তারপরও তিনি আসেননি। এখন অনলাইনে তার বক্তব্য নেব আমরা। তারপর প্রতিবেদন রেডি করে সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কাছে পাঠাব।
এর আগে এ ঘটনায় গত ১৫ ফেব্রুয়ারি তদন্ত কমিটি গঠন করে শাখা ছাত্রলীগ। এতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মুন্সি কামরুল হাসানকে আহ্বায়ক করা হয়। কমিটির অপর সদস্যরা হলেন- সহ-সভাপতি বনি আমিন ও রাকিবুল ইসলাম এবং সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন। তদন্ত কমিটিকে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ১১ ফেব্রুয়ারি দেশরতœ শেখ হাসিনা হলে রাত সাড়ে ১১টা থেকে রাত প্রায় ৩টা পর্যন্ত শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন নবীন শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুন। ভুক্তভোগী ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
অভিযোগ ওঠে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীর অভিযোগ, তারা ওই শিক্ষার্থীকে মারধর করে তার বিবস্ত্র ভিডিও ধারণ করে রাখেন।
এ ঘটনায় ১৩ ফেব্রুয়ারি সকালে ভয়ে হল ছেড়ে বাসায় চলে যান ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। র্যাগিংয়ের নামে শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্তার বিচার ও নিরাপত্তা চেয়ে মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) হল প্রভোস্ট, প্রক্টর ও ছাত্র-উপদেষ্টা দপ্তর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন তিনি।
বিষয়টি নিয়ে হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং শাখা ছাত্রলীগ পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করে। বিষয়টি হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। উচ্চ আদালতের নির্দেশে ক্যাম্পাসও ছাড়েন অভিযুক্তরা।
প্রিন্ট