সংবিধান অনুযায়ী সংসদের মেয়াদ প্রথম অধিবেশন থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর। সে অনুযায়ী ২০২৪ সালের ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত বর্তমান সংসদের মেয়াদ রয়েছে। নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে সংবিধানে সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৯০ দিনের কথা বলা হয়েছে। সে হিসেবে ২০২৪ সালের ৩০ জানুয়ারির পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
এদিকে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করতে সরকারের কাছে বরাদ্দ চাইবে নির্বাচন কমিশন। ইভিএম কেনার প্রকল্পে সিসি ক্যামেরার জন্যও প্রায় ২১ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছিল ইসি। কিন্তু আপাতত ইভিএম প্রকল্প স্থগিত হওয়ায় আসন্ন সংসদ নির্বাচনে অন্যান্য নির্বাচনী ব্যয়ের সঙ্গে সিসি ক্যামেরা ব্যবহারের জন্য বরাদ্দ চাওয়ার চিন্তা করছে ইসি।
এ ছাড়া আগামী সংসদ নির্বাচনে ৫০ থেকে ৭০ আসনে ইভিএম ব্যবহার হতে পারে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের হাতে যে ইভিএম আছে সেগুলো দিয়ে আমরা নির্বাচন করব। এটা আমাদের সিদ্ধান্ত। তবে ৫০ থেকে ৭০-এর মধ্যে (ইভিএম ব্যবহারের) বিষয়টা থাকবে।’ সিসি ক্যামেরা ব্যবহারের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেছেন, ‘আমাদের হানড্রেড পারসেন্ট ইচ্ছা আছে। কমিশন অবশ্যই সিসি ক্যামেরা চায়।’ অর্থনীতি এখানে বড় জিনিস বলে মনে করেন এই কমিশনার। তিনি বলেন, ‘ইভিএম প্রজেক্ট পাস করার বিষয় আছে। কিন্তু সিসি ক্যামেরার জন্য প্রজেক্ট পাস করতে হবে না। এটা নির্বাচনের বাজেটের ব্যাপার। সিসি ক্যামেরা বাদ দিছি এমনও ডিসিশন হয় নাই। আমরা আনবই এমন ডিসিশনও হয় নাই।’
ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, ইভিএম কেনার নতুন প্রকল্প স্থগিত হওয়ায় প্রায় ২৫০ আসনে কাগজের ব্যালটে ভোট হতে পারে; এজন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। বাকি আসনে ইভিএম ব্যবহারের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সেই সিদ্ধান্ত কবে পাওয়া যাবে, সেজন্য অপেক্ষা করছে ইসি সচিবালয়। ব্যালটে ভোটের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে মাঠপর্যায়ে থাকা স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স পরীক্ষা করা হয়েছে। ৩ লাখ ২ হাজার ব্যালট বাক্স ব্যবহার উপযোগী পাওয়া গেছে। বেশ কিছু ব্যালট বাক্স ভেঙে গেছে। যা আছে তা দিয়ে ৩০০ আসনেই ব্যালটে ভোট গ্রহণ সম্ভব হবে।
ইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, বিগত একাদশ সংসদ নির্বাচনে দেশে ভোট কেন্দ্র ছিল ৪০ হাজার ১৮৩টি। ভোটকক্ষ ছিল ২ লাখ ৭ হাজার ৩১২টি। এ ছাড়া ইভিএমে ভোট নিতে প্রতি ভোটকক্ষের জন্য একটি ইভিএম প্রয়োজন হয়। যান্ত্রিক ত্রুটি বিবেচনায় রেখে প্রতি কেন্দ্রের জন্য মোট কক্ষের অর্ধেকসংখ্যক ইভিএম অতিরিক্ত সংরক্ষণ করা হয়। তাই ইসির হাতে যেসব ইভিএম আছে তা দিয়ে ৫০ থেকে ৭০ আসনে ভোট করা সম্ভব হবে।