প্রজনন মৌসুম হওয়ায় এবার ৭ থেকে ২৮ অক্টোবব পর্যন্ত ইলিশ মাছ ধরা, পরিবহন, ক্রয়-বিক্রয়, মজুদ ও বিনিময় বন্ধ থাকার কথা থাকলেও ভেড়ামারা পদ্মা নদীতে কোনো ধরনের বাধা ছাড়াই দেদারছে চলছে ইলিশ মাছ শিকার। ফলে ভেড়ামারার আনাচে-কানাচে হাত বাড়ালেই মিলছে বিভিন্ন আকারের ইলিশ মাছ।
এদিকে, ইলিশ মাছ ধরা বন্ধে তেমন কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। ইলিশ শিকার ও বিক্রয় বন্ধে অভিযানের বিষয়েও দায়সারা কথা বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয়দের মতে, নদীতে ইলিশ মাছ শিকার বন্ধে প্রতি বছর যে ধরনের কার্যক্রম চালানো হয়। যা এ বছর তেমন একটা দেখা যাচ্ছে না। নদীতে অভিযানের পরিবর্তে সভা-সেমিনার করেই দায় শেষ করছেন উপজেলা মৎস্য অফিসসহ সংশ্লিষ্টরা। ফলে সরকারের উদ্দেশ্য তেমন বাস্তবায়ন দেখা যাচ্ছে না। তবে উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা শাম্মী শিরীন বলছেন মাঝে মাঝে অভিযান চালানো হচ্ছে।
পদ্মার মাছ শিকারি একাধিক জেলে ও মাছ বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নিষেধাজ্ঞার শুরুতে দু’একদিন নদীতে মাছ শিকার বন্ধ থাকলেও এখন স্বাভাবিক ভাবেই মাছ ধরা হচ্ছে। রাতে নদী থেকে ইলিশ মাছ ধরে দিনে তা বিক্রয় করা হয়। শিকারি জেলে বা বিক্রেতার সাথে যোগাযোগের মাধমে যে কোন আকারের ইলিশ কিনছেন ক্রেতারা। প্রতিদিন কয়েক মন ইলিশ মাছ পদ্মা থেকে ধরা হচ্ছে বলে তারা জানান। হাটবাজারে এসব ইলিশ বিক্রয় না হলেও নির্ধারিত জায়গায় প্রতিদিন মাছ ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে। দাম একটু বেশি দিলে ক্রেতার বাড়িতেও মাছ পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।
জেলেরা জানান, এবার নদীতে তেমন কার্যক্রম না থাকায় অনায়াসেই ইলিশ শিকার করা যাচ্ছে। জাটকা থেকে শুরু করে দেড় কেজি পর্যন্ত ওজনের ইলিশ পদ্মায় ধরা পড়ছে। বন্ধের সময় হওয়ায় নদী ও এর আশপাশে সোর্স রাখা হয়। নদীতে প্রশাসনের অভিযানের খবর পেলেই ওইসব সোর্সরা নদীতে মাছ শিকারি জেলেদের দ্রুত খবর পৌঁছে দেন। ফলে মাছ শিকার করে নিরাপদে চলে যেতে পারেন জেলেরা।
স্থানীয় এক মাছ বিক্রেতা জানান, ভোরে নদীর পাড়ে গিয়ে সরাসরি মাছ ক্রয় করতে পারছেন। এছাড়াও মোবাইলে যোগাযোগ করেও মাছ বিক্রয় করা হচ্ছে। মাছের সাইজ অনুযায়ী দাম হাকা হয়। দাম একটু বেশি হলেও নিষিদ্ধ সময়ে মাছ ক্রয়-বিক্রয় করতে পারায় খুশি ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ে।
ভেড়ামারা উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা শাম্মী শিরীন বলেন, নদীপাড়ের জেলেদের নিয়ে সচেতনতা সভা করা হয়েছে। নদীতে দু’একটি অভিযানও চালানো হয়েছে। কম লোকবল থাকার পরও ইলিশ শিকার বন্ধে কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। গত এক সপ্তাহে নদীতে কয়টি অভিযান হয়েছে কিনা তা জানতে চাইলে নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি এই কর্মকর্তা।
প্রিন্ট