কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় গত কয়েক মাস ধরে নিত্যপণ্যের দাম লাগামহীন। এক সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে সব ধরনের সবজির দাম। সবজির প্রকারভেদে দাম বেড়েছে কেজিতে দ্বিগুণ। ফলে সাধারণ ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে।
বাজারে শীতকালীন সবজি উটতে শুরু করেছে কিন্তু দাম অনেক। বছরের অন্য সময়ে অর্থাৎ শীতের কাছাকাছি সময়ে শীতের আগাম সবজির সরবরাহ বাড়ে। এতে কমতে থাকে দাম। কিন্তু এবার তা ব্যতিক্রম।
বাজারে শীতের আগাম সবজির সরবরাহ থাকলেও দাম বাড়তি। ঊর্ধ্বমুখী ভেড়ামারার কাঁচাবাজারগুলো। দামের দিক থেকে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে শিম, বেগুন, টমেটো ও গাজর। অন্যান্য সবজির সর্বনিম্ন দাম ৫০ টাকা। বাজারে সবচেয়ে কমদামে পাওয়া যাচ্ছে শুধু মুলা আর আলু। গতকাল শনিবার ভেড়ামারার বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
ফারাকপুর গ্রামের সবজি বিক্রেতারা লিটন বলছেন, শীতকালীন কিছু সবজি বাজারে আসতে শুরু করেছে। সরবরাহ কম থাকায় সেগুলো দাম আকাশচুম্বী। তবে, চলতি মাসের শেষের দিকে সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে আসবে। তখন বাজার স্থিতিশীল হবে এবং দামও কমবে। সপ্তাহের ছুটির দিনে ভেড়ামারা বাজারে শিম বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা কেজিতে। ভারত থেকে আমদানি করা টমেটোর দাম ১০০ টাকা। ৯০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে গাঁজর। জাতভেদে বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজিতে।
এছাড়া লতি ৭০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৭০ থেকে ৮০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, পটল ৫৫ টাকা ও মুলা ৫০ টাকায় কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে। এককেজি দেশি কাঁচা মরিচের দাম ৮০ টাকা, আর ভারতীয় মরিচ ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর পুঁইশাকের আটি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, পালং শাক ৩০ টাকা, লাউ শাক ৩০ টাকা, কলমি ও লালশাক ২৫ টাকায়।
ভেড়ামারা কলেজ বাজারের সবজি বিক্রেতা শাহিন আলী বলেন, সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে সবজির দাম বেড়েছে। শিম বাজারে নতুন সবজি, তাই দামও একটু বেশি। বাজারে এখন পর্যন্ত শুধু বার মাইল ও ঝিনাইদহ অঞ্চলের শিম পাওয়ার যাচ্ছে। বেগুন ও টমেটোর দাম আগের মতোই আছে। গত সপ্তাহেও একই দামে সবজি দুটি বিক্রি হয়েছে।
তবে বাজারে আসা ক্রেতা শিক্ষক আব্দুল জব্বার বলেন, কোনো সবজির দামই কমেনি, বরং বেড়েছে। গত সপ্তাহে ৮০ টাকা করে ফুলকপি কিনেছি। এখন সেটা ৬৫ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। দিন যত যাচ্ছে মধ্যবিত্তের অবস্থা তত খারাপ হচ্ছে।
শুধু সবজি নয়, লাগামহীনভাবে বাড়ছে মাছের দাম। বাজারে ছোট সাইজের রুই মাছের কেজি এখন ৩২০ টাকা। যা গত মাসেও বিক্রি হয়েছে ২৮০ থেকে ২৯০ টাকায়। মাছ যত বড় হয়, তার দামও তত বাড়তে থাকে। পাবদা মাছ সর্বনিম্ন সাড়ে ৪০০ টাকা থেকে শুরু করে আকার ভেদে ৬০০ টাকা কেজি। বেলে মাছ সাড়ে ৬০০ টাকা কেজি। টেংরা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা কেজি দরে।
এছাড়া চিংড়ি ৪০০ থেকে শুরু করে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। বেড়েছে ডিমের দামও। ডজন প্রতি পাইকারি ১৪৩ থেকে ১৪৫ ও খুচরা ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা কেজি।
প্রিন্ট