রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার কলিমহর ইউনিয়নের দুরশুন্দিয়া গ্রামের এক স্কুল ছাত্রীকে (১৭) জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে একই ইউনিয়নের ভাগবিষ্ণুপুর গ্রামের পিয়াস বিশ্বাসের (২২) বিরুদ্ধে পাংশা মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গত ২৯ আগস্ট ভিকটিম নিজে বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেছে। মামলা নং ১৮, ধারা ২০০৩ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ৯(৪)(খ)। আসামী পিয়াস বিশ্বাস ভাগবিষ্ণুপুর গ্রামের আছমত বিশ্বাসের ছেলে। সে পাংশা সরকারী কলেজের অনার্সে লেখাপড়া করে। ভিকটিম স্থানীয় একটি হাইস্কুলের ১০ম শ্রেণির ছাত্রী। ভিকটিম অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে আসামী পিয়াসের বাড়ীতে প্রাইভেট পড়তো।
মামলার বিবরণীতে বাদী অভিযোগ করেছেন, আসামী পিয়াস বিশ্বাস বাড়ীতে বিভিন্ন শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের প্রাইভেট পড়ায়। গত চার মাস ধরে আসামী পিয়াসের নিকট প্রাইভেট পড়তে যায় ভিকটিম। প্রাইভেট পড়া শুরু করার অনুমান একমাস পর হতে আসামী পিয়াস ভিকটিমের দিকে কুনজরে তাকাতে থাকে। এক পর্যায় আসামী তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। তার প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় সে তাকে প্রেমের সম্পর্কে রাজী হওয়ার জন্য মানসিকভাবে চাপ দিতে থাকে। ঘটনার দিন গত ২৭আগস্ট সকাল অনুমান ৬টার সময় ভিকটিম আসামীর বাড়ীতে প্রাইভেট পড়তে যায়।
প্রাইভেট পড়া শেষে আসামী তাকে বলে যে, তোমাকে পরীক্ষার জন্য কিছু সাজেশন দিব তুমি একটু পরে যাও। ভিকটিম আসামীর কথায় সরল বিশ্বাসে প্রাইভেট পড়ার ঘরে বসে থাকে। ২৭আগস্ট সকাল আনুমানিক ৮টার দিকে আসামী পিয়াস ভিকটিমকে তার শয়ন কক্ষে যেতে বলে কুপ্রস্তাব দেয়। তখন ভিকটিম শয়ন কক্ষে যেতে রাজী না হওয়ায় আসামী ভিকটিমকে জোরপূর্বক হাত ধরে তার শয়ন কক্ষে নিয়ে যায় এবং ভিকটিমের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করে।
এ ব্যাপরে আসামী পিয়াস বিশ্বাসের (২২) পিতা আসমত বিশ্বাস জানান, থানায় মামলার বিষয়টি আমরা জেনেছি। ঘটনাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক। গ্রামে সামাজিক বিরোধ ও দলাদলি রয়েছে। প্রতিপক্ষের লোকজনের সাথে আমাদের সামাজিক বিরোধ চলছে। পূর্বের গোলযোগ ও বিরোধ নিয়ে বিজ্ঞ আদালতে একাধিক মামলাও রয়েছে। তিনি আরো জানান, সরিষা বাজারে তার চায়ের দোকান আছে। তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে। বড় ছেলে টুটুল বিশ্বাস ঢাকায় ফার্নিচারের ব্যবসা করে। ছোট ছেলে পিয়াস পাংশা সরকারী কলেজে অনার্সে লেখাপড়া করে। পিয়াস বাড়ীতে সকালে দুটি ব্যাচ ও বিকেলে ১টি ব্যাচে টিউশনি করে। এছাড়া ছাত্র-ছাত্রীদের বাড়ীতে গিয়েও সে টিউশনি করে। সবমিলে প্রায় ৭০ জন ছাত্র-ছাত্রীর টিউশনি করে সে। মা তারাবানু (৬৫), স্ত্রী শাহানা বেগম (৪৫), বড় ছেলের মেয়ে খাদিজা (৭) বাড়ীতে থাকে। এছাড়া বাড়ীতে আমার তিন ভাইয়ের পরিবারসহ অন্যান্যরা রয়েছে।
আমার নিজের তিন কক্ষ বিশিষ্ট একটি টিনের বসতঘর। বাড়ীতে সব সময় লোকজন থাকে। আমি প্রতিদিন সকাল ৮/৯টার দিকে বাড়ী থেকে দোকানে যাই। প্রায়ই পিয়াস তার নিজের মোটরসাইকেলে আমাকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ী থেকে বের হয়। আমাকে সরিষা বাজারে দোকানে রেখে পিয়াস কলেজে ক্লাস করতে ও বিভিন্ন স্থানে টিউশনি করতে যায়। পূর্ব দ্বন্দ্বের জের ধরেই নতুন করে আবার মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে পিয়াসের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হয়েছে। এলাকার স্বার্থান্বেষী মহলের ইন্দনে আমার পরিবারের লোকজনকে ফাঁসাতে এ মামলা করা হয়েছে। তিনি মামলার সুষ্ঠু তদন্ত দাবী করেন।
আরও পড়ুনঃ পাংশায় কাজী আব্দুল মাজেদ একাডেমীতে অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পাংশা মডেল থানার এসআই মো. আকরাম হোসেন জানান, মামলার অভিযোগের তদন্ত করা হচ্ছে এবং আসামী গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
প্রিন্ট