ঢাকা , শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

বোয়ালমারীতে উচ্ছেদকৃত সড়ক ওজনপথ’র জায়গা ফের বেদখল 

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে সওজের জায়গা উচ্ছেদের পর ফের দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করছেন প্রভাবশালীরা। বোয়ালমারী পৌরসভার ওয়াপদা মোড় থেকে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন পর্যন্ত এ ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে চরম ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন স্থানীয় জনগণ।
স্থানীয়রা জানান, বোয়ালমারীতে সওজের জায়গায় অবৈধ দোকান ঘর করে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী দীর্ঘদিন ধরে মাসে লাখ লাখ টাকা ভাড়া আদায় করছিলেন। কোন কোন অবৈধ দখলদাররা নিজেরাও সওজের জায়গা দখল করে ঘর তুলে ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন।
গত ২ এপ্রিল সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাইজকান্দি-ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের বোয়ালমারী পৌরসভার ওয়াপদা মোড় থেকে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন পর্যন্ত এ অভিযান চালানো হয়। এ সময় ওই সড়কের উভয়পাশে থাকা প্রায় শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে সওজ কর্তৃপক্ষ। এতে সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রায় দুই থেকে আড়াই একর জমি দখলমুক্ত করা সম্ভব হয়, যার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা বলে জানা যায়।
সেই সময় যেসব অবৈধ দখলকারদের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয় তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন, পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর শেখ আতিকুল ইসলাম, মো. রেজাউল করিম, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হাদি হুমায়ুন কবির বাবু, রাজবাড়ি খানখানাপুরের মো. আমির হোসেন, ছোলনা সালামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা, ডা. দিলীপ রায় হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ, মো. আহাদুল করিম প্রমুখ।
ওই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার পর মাস খানেকের মধ্যেই আবার পূর্বের দখলদারদের অবৈধ দখলে চলে গেছে অধিকাংশ উচ্ছেদকৃত জায়গা। দখলদাররা আবার তুলছেন তাদের দোকান ঘর।
বোয়ালমারী চৌরাস্তা সংলগ্ন বঙ্গবন্ধু চত্বরের পূর্ব পাশে ফরিদপুরের বাসিন্দা আতিকুল ইসলাম খানের তেল ও গ্যাসের দোকান ‘খান ট্রেডার্স’ উচ্ছেদের পর আবার অবৈধ দখলে চলে গেছে।
মাইজকান্দি-ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়ক সংলগ্ন বঙ্গবন্ধু সড়কের মোড়ে অবস্থিত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পর আবার দখল করে ভাড়া দিয়েছেন ছোলনা গ্রামের ইকবাল। এছাড়া আল হাসান মহিলা মাদ্রাসার সন্নিকটে বটতলা নামক স্থানে আধারকোঠা নিবাসী সামাদ মৃধা, পংকজ রাজবংশী, চতুল নিবাসী আকরামুজ্জামান মৃধা রুকু, পুরনো বাসস্ট্যান্ডের সামনে অবস্থিত মীর টাইলসের মালিক আবুল বাশার মীর, চৌরাস্তায় আমির হোসেন, শেফা এন্টারপ্রাইজের শরিফুল ইসলাম উচ্ছেদের পর ফের অবৈধ দখল নিয়েছেন।
পুরনো বাসস্ট্যান্ডের সামনে অবস্থিত ছোলনা সালামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার মালিকানাধীন দোকানঘর এবং চৌরাস্তায় অবস্থিত আমিরুল ইসলাম চৌধুরীর ভবনের অংশবিশেষ সরকারি জায়গায় হওয়ায় তা ভেঙে দিলেও ফের দখলে চলে গেছে সংশ্লিষ্ট মালিকদের।
আল হাসান মহিলা মাদ্রাসার সন্নিকটে বটতলা নামক স্থানে আধারকোঠা নিবাসী সামাদ মৃধার মালিকানাধীন দোকান ঘরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক ভাড়াটিয়া বলেন, সবাই আবার ঘর তুলে আগের অবস্থানে ফিরে গেছে, তাই আমার মালিকও আগের অবস্থানে ফিরে গেছে। তিনি আরো বলেন, আবার উচ্ছেদ করতে এলে দোকানের মালামাল সরিয়ে নেব।
সওজের উচ্ছেদকৃত জায়গা ফের বেদখল হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মী কামরুল সিকদার বলেন, উচ্ছেদের কয়েক দিন পরেই সওজের জায়গায় আবার অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে। আমাদের অবৈধ দখলের এই মানসিকতা ত্যাগ করতে হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা গৃহবধূ লাভলী বেগম বলেন, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পর ফের দখলদারীত্বের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।
এ ব্যাপারে ফরিদপুর জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের ফরিদপুর সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ইমরান ফারহান সুমেল রবিবার (১২ জুন) দুপুরে জানান, উচ্ছেদকৃত জায়গা ফের বেদখল হলে আবার নোটিশ দিয়ে অবৈধ স্থাপনা পুনরায় উচ্ছেদ করা হবে।

প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

বোয়ালমারীতে উচ্ছেদকৃত সড়ক ওজনপথ’র জায়গা ফের বেদখল 

আপডেট টাইম : ০৬:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ জুন ২০২২
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা ডেস্ক রিপোর্টঃ :
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে সওজের জায়গা উচ্ছেদের পর ফের দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করছেন প্রভাবশালীরা। বোয়ালমারী পৌরসভার ওয়াপদা মোড় থেকে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন পর্যন্ত এ ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে চরম ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন স্থানীয় জনগণ।
স্থানীয়রা জানান, বোয়ালমারীতে সওজের জায়গায় অবৈধ দোকান ঘর করে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী দীর্ঘদিন ধরে মাসে লাখ লাখ টাকা ভাড়া আদায় করছিলেন। কোন কোন অবৈধ দখলদাররা নিজেরাও সওজের জায়গা দখল করে ঘর তুলে ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন।
গত ২ এপ্রিল সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাইজকান্দি-ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের বোয়ালমারী পৌরসভার ওয়াপদা মোড় থেকে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন পর্যন্ত এ অভিযান চালানো হয়। এ সময় ওই সড়কের উভয়পাশে থাকা প্রায় শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে সওজ কর্তৃপক্ষ। এতে সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রায় দুই থেকে আড়াই একর জমি দখলমুক্ত করা সম্ভব হয়, যার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা বলে জানা যায়।
সেই সময় যেসব অবৈধ দখলকারদের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয় তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন, পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর শেখ আতিকুল ইসলাম, মো. রেজাউল করিম, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হাদি হুমায়ুন কবির বাবু, রাজবাড়ি খানখানাপুরের মো. আমির হোসেন, ছোলনা সালামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা, ডা. দিলীপ রায় হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ, মো. আহাদুল করিম প্রমুখ।
আরও পড়ুনঃ নড়াইলে ইভটিজিং এর দায়ে-৩ বখাটেকে জরিমানা অনাদায়ে কারাদন্ড
ওই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার পর মাস খানেকের মধ্যেই আবার পূর্বের দখলদারদের অবৈধ দখলে চলে গেছে অধিকাংশ উচ্ছেদকৃত জায়গা। দখলদাররা আবার তুলছেন তাদের দোকান ঘর।
বোয়ালমারী চৌরাস্তা সংলগ্ন বঙ্গবন্ধু চত্বরের পূর্ব পাশে ফরিদপুরের বাসিন্দা আতিকুল ইসলাম খানের তেল ও গ্যাসের দোকান ‘খান ট্রেডার্স’ উচ্ছেদের পর আবার অবৈধ দখলে চলে গেছে।
মাইজকান্দি-ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়ক সংলগ্ন বঙ্গবন্ধু সড়কের মোড়ে অবস্থিত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পর আবার দখল করে ভাড়া দিয়েছেন ছোলনা গ্রামের ইকবাল। এছাড়া আল হাসান মহিলা মাদ্রাসার সন্নিকটে বটতলা নামক স্থানে আধারকোঠা নিবাসী সামাদ মৃধা, পংকজ রাজবংশী, চতুল নিবাসী আকরামুজ্জামান মৃধা রুকু, পুরনো বাসস্ট্যান্ডের সামনে অবস্থিত মীর টাইলসের মালিক আবুল বাশার মীর, চৌরাস্তায় আমির হোসেন, শেফা এন্টারপ্রাইজের শরিফুল ইসলাম উচ্ছেদের পর ফের অবৈধ দখল নিয়েছেন।
পুরনো বাসস্ট্যান্ডের সামনে অবস্থিত ছোলনা সালামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার মালিকানাধীন দোকানঘর এবং চৌরাস্তায় অবস্থিত আমিরুল ইসলাম চৌধুরীর ভবনের অংশবিশেষ সরকারি জায়গায় হওয়ায় তা ভেঙে দিলেও ফের দখলে চলে গেছে সংশ্লিষ্ট মালিকদের।
আরও পড়ুনঃ বোয়ালমারীতে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ব্যবসায়ীর সংবাদ সম্মেলন 
আল হাসান মহিলা মাদ্রাসার সন্নিকটে বটতলা নামক স্থানে আধারকোঠা নিবাসী সামাদ মৃধার মালিকানাধীন দোকান ঘরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক ভাড়াটিয়া বলেন, সবাই আবার ঘর তুলে আগের অবস্থানে ফিরে গেছে, তাই আমার মালিকও আগের অবস্থানে ফিরে গেছে। তিনি আরো বলেন, আবার উচ্ছেদ করতে এলে দোকানের মালামাল সরিয়ে নেব।
সওজের উচ্ছেদকৃত জায়গা ফের বেদখল হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মী কামরুল সিকদার বলেন, উচ্ছেদের কয়েক দিন পরেই সওজের জায়গায় আবার অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে। আমাদের অবৈধ দখলের এই মানসিকতা ত্যাগ করতে হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা গৃহবধূ লাভলী বেগম বলেন, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পর ফের দখলদারীত্বের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।
এ ব্যাপারে ফরিদপুর জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের ফরিদপুর সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ইমরান ফারহান সুমেল রবিবার (১২ জুন) দুপুরে জানান, উচ্ছেদকৃত জায়গা ফের বেদখল হলে আবার নোটিশ দিয়ে অবৈধ স্থাপনা পুনরায় উচ্ছেদ করা হবে।
আরও পড়ুনঃ মাগুরায় ভারতীয় জনতা পার্টির নেতা নূপুর শর্মার শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ 

প্রিন্ট