ঢাকা , শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

খাদ্যের তালিকা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ‘কাউন’

কাউন হচ্ছে পুষ্টিগুন সমৃধ্য দানা জাতীয় খাদ্য। কাউন দিয়ে হরেক রকমের সু-স্বাদু খাবার তৈরী করা যায়। যেমনঃ পায়েস, বিস্কুট, কাউনের বিরানী ও ঘুমনি সহ অনেক খাদ্য তৈরীতে কাউন ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কাউন চাষে পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা পুরণের পাশাপাশি অধিক উৎপাদিত শষ্য বাজারে বিক্রি করে অর্থিকভাবে লাভবান হওয়া যায়। কাউনের চাহিদা বিদেশেও রয়েছে। কাউন বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।

কাউন চাষে বীজ বপন করার উপযোগী সময় হলো অগ্রহায়ণ থেকে মাঘ মাস পর্যন্ত। প্রায় সব ধরণের জমিতেই কাউন চাষ করা যায়। তবে পানি জমে না এমন জমিতে বা বেলে দোআঁশ মাটিতে এর ফলন ভালো হয়। কাউনের দেশী বিদেশী জাতের তুলনা মূলক মূল্যায়নের পর ১৯৮৯সালে তিতাস নামের জাতটির অনুমোদন দেওয়া হয়। এটি উচ্চ ফলনশীল জাত। আগাম রোগ ও কীট-পতঙ্গ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন। গাছ মাঝারী ও লম্বা পাতা সবুজ রঙ্গের কান্ড শক্ত গাছ নুয়িয়ে পড়ে না। এর শীষ লম্বা ও মোটা হয়। বীজ মাঝারী আকারের এবং হলুদ রঙ্গের লোকার জাতের চেয়ে বেশী ফলন হয়ে থাকে। এজাত গোড়া পচা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা রাখে। এই জাতটি রবি মৌসুমে ১১৫দিন ও খড়া মৌসুমে ৮৫-৯৫ দিনের মধ্যে তোলা যায়।

রবি মৌসুমে তিতাসের ফলন বিঘা প্রতি ৭-৮ মণের মত হয়। তবে খড়া মৌসুমে এর ফলন একটু কমে যায়। ৩-৪টি চাষ দিয়ে মই দেওয়ার পর জমি তৈরী করতে হয়। জমিতে কাউনের বীজ ছিটিয়ে বা সারি করে বপন করা যায়। তবে সারি করে বীজ বপণ করলে আগাছা পরিষ্কার করার সময় সুবিধা হয় এবং বেশী ফলনপাওয়া যায়। অধিক ফলন পেতে গেলে জমিতে জৈব সার প্রয়োগ করলে ভালো। কাউন একটি খড়া সহিষ্ণু ফসল। রবি মৌসুমে ২-১টি সেচ দিলে ভালো হয়। জমিতে কীট-পতঙ্গের আক্রমণ হলে কীটনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে।

আরও পড়ুনঃ ফরিদপুরে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে গিয়ে প্রাণ গেল নিরাপত্তা প্রহরীর

বীজ বপণের ১৫-২০দিনের মধ্যে আগাছা পরিষ্কার করতে হবে। কাউনের রং খড়ের আকার ধারণ করলে কাউন কাটার সময় হয়েছে। বিঘা প্রতি ৭-৮মণ কাউন পাওয়া যায়। ১বিঘা জমিতে কাউন উৎপাদনের খরচ প্রায় ৫০০০/- টাকা। কাউন চাষ সংক্রান্ত কোনো তথ্য জানতে হলে স্থানীয় কৃষি অধিদপ্তর বা ইউনিয়ন পর্যায়ে কৃষিকর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে। নদীর চরাঞ্চলে কম ঊর্বর জমিতে কাউন উৎপাদন করা যায়। কাউন চাষ করে পারিবারিক পুষ্টির অভাব পূরণ করার পাশাপাশি বাজারে বিক্রি করে বাড়তি আয় করা সম্ভব। কাউন হচ্ছে পুষিটকর দানাদার জাতীয় খাদ্য শষ্য। কাউন চাষে কৃষি বিভাগ কৃষকদের পূনরায় উজ্জিবীত করুক এ দাবি স্থানীয় কৃষকদের।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

খাদ্যের তালিকা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ‘কাউন’

আপডেট টাইম : ১২:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ জুন ২০২২
মোঃ আব্দুল জব্বার (ফারুক), আত্রাই, (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ :

কাউন হচ্ছে পুষ্টিগুন সমৃধ্য দানা জাতীয় খাদ্য। কাউন দিয়ে হরেক রকমের সু-স্বাদু খাবার তৈরী করা যায়। যেমনঃ পায়েস, বিস্কুট, কাউনের বিরানী ও ঘুমনি সহ অনেক খাদ্য তৈরীতে কাউন ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কাউন চাষে পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা পুরণের পাশাপাশি অধিক উৎপাদিত শষ্য বাজারে বিক্রি করে অর্থিকভাবে লাভবান হওয়া যায়। কাউনের চাহিদা বিদেশেও রয়েছে। কাউন বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।

কাউন চাষে বীজ বপন করার উপযোগী সময় হলো অগ্রহায়ণ থেকে মাঘ মাস পর্যন্ত। প্রায় সব ধরণের জমিতেই কাউন চাষ করা যায়। তবে পানি জমে না এমন জমিতে বা বেলে দোআঁশ মাটিতে এর ফলন ভালো হয়। কাউনের দেশী বিদেশী জাতের তুলনা মূলক মূল্যায়নের পর ১৯৮৯সালে তিতাস নামের জাতটির অনুমোদন দেওয়া হয়। এটি উচ্চ ফলনশীল জাত। আগাম রোগ ও কীট-পতঙ্গ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন। গাছ মাঝারী ও লম্বা পাতা সবুজ রঙ্গের কান্ড শক্ত গাছ নুয়িয়ে পড়ে না। এর শীষ লম্বা ও মোটা হয়। বীজ মাঝারী আকারের এবং হলুদ রঙ্গের লোকার জাতের চেয়ে বেশী ফলন হয়ে থাকে। এজাত গোড়া পচা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা রাখে। এই জাতটি রবি মৌসুমে ১১৫দিন ও খড়া মৌসুমে ৮৫-৯৫ দিনের মধ্যে তোলা যায়।

রবি মৌসুমে তিতাসের ফলন বিঘা প্রতি ৭-৮ মণের মত হয়। তবে খড়া মৌসুমে এর ফলন একটু কমে যায়। ৩-৪টি চাষ দিয়ে মই দেওয়ার পর জমি তৈরী করতে হয়। জমিতে কাউনের বীজ ছিটিয়ে বা সারি করে বপন করা যায়। তবে সারি করে বীজ বপণ করলে আগাছা পরিষ্কার করার সময় সুবিধা হয় এবং বেশী ফলনপাওয়া যায়। অধিক ফলন পেতে গেলে জমিতে জৈব সার প্রয়োগ করলে ভালো। কাউন একটি খড়া সহিষ্ণু ফসল। রবি মৌসুমে ২-১টি সেচ দিলে ভালো হয়। জমিতে কীট-পতঙ্গের আক্রমণ হলে কীটনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে।

আরও পড়ুনঃ ফরিদপুরে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে গিয়ে প্রাণ গেল নিরাপত্তা প্রহরীর

বীজ বপণের ১৫-২০দিনের মধ্যে আগাছা পরিষ্কার করতে হবে। কাউনের রং খড়ের আকার ধারণ করলে কাউন কাটার সময় হয়েছে। বিঘা প্রতি ৭-৮মণ কাউন পাওয়া যায়। ১বিঘা জমিতে কাউন উৎপাদনের খরচ প্রায় ৫০০০/- টাকা। কাউন চাষ সংক্রান্ত কোনো তথ্য জানতে হলে স্থানীয় কৃষি অধিদপ্তর বা ইউনিয়ন পর্যায়ে কৃষিকর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে। নদীর চরাঞ্চলে কম ঊর্বর জমিতে কাউন উৎপাদন করা যায়। কাউন চাষ করে পারিবারিক পুষ্টির অভাব পূরণ করার পাশাপাশি বাজারে বিক্রি করে বাড়তি আয় করা সম্ভব। কাউন হচ্ছে পুষিটকর দানাদার জাতীয় খাদ্য শষ্য। কাউন চাষে কৃষি বিভাগ কৃষকদের পূনরায় উজ্জিবীত করুক এ দাবি স্থানীয় কৃষকদের।


প্রিন্ট