আজ ৯ নভেম্বর নগরকান্দা শত্রু মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক বাহিনীর কাছ থেকে মুক্ত হয় ফরিদপুরের বৃহৎ এই উপজেলা।
১৯৭১ সালে বাংলার মাটিতে পাক-হানাদার বাহিনীর নগ্ন থাবা, যা সমাপ্ত হয় এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে। মুক্তিযুদ্ধের দীর্ঘ ৮ মাস পর ৯ নভেম্বর নগরকান্দার মুক্তিযোদ্ধারা জীবন বাজী রেখে সম্মুখ সমরে যুদ্ধ করে নগরকান্দা থানাকে পুরোপুরি শট্রু মুক্ত করতে সক্ষম হন।
২৯ মে নগরকান্দার দিঘোলিয়া বিলে সম্মুখ যুদ্ধে শুধুমাত্র দেশীয় অস্ত্র ঢাল-সড়কি, বল্লম নিয়ে বিলের কাদার মধ্যে কুপিয়ে কুপিয়ে ২৯ জন পাক-সেনাকে হত্যা করতে সক্ষম হন।
৫ নভেম্বর নগরকান্দা কুমার নদের খেয়া ঘাটে এক সম্মুখ যুদ্ধে নির্ভিক মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বারেক মিয়া শহীদ হয়। শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বারেক মিয়ার রক্তের শপথ নিয়ে ৮ নভেম্বর নগরকান্দা থানার মুক্তিযোদ্ধারা থানা ঘেরাও করার জন্য তিনটি গ্রুপের বিভক্ত হন।গ্রুপের পৃথক নেতৃত্বে ছিলেন মেজর আজিজ, আলতাফ হোসেন খান ও হামিদ জোমাদ্দার।
মুক্তিযোদ্ধারা ৮ নভেম্বর গভীররাতে বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্তি হয়ে থানার চারদিকে অবস্থান নেয়। শুরু হয় হামলা পাল্টা হামলা। সারারাত দুই গ্রুপের গুলি বিনিময়ের এক পর্যায়ে ৯ নভেম্বর সকাল ১০টায় শত্রু পক্ষরা মুক্তিযোদ্ধাদের নিকট আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। সে সময় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আক্কেল আলী পরাজয়ের গ্লানি সইতে না পেরে পিস্তল দিয়ে নিজের মাথায় গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করে।
শত্রু মুক্ত হওয়ার আনন্দে মুক্তিযোদ্ধারা তখন বাংলার মানচিত্র খচিত জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে নগরকান্দাকে স্বাধীন ঘোষণা করেন।
নগরকান্দার মুক্তিযোদ্ধা ও নতুন প্রজন্ম গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে দিনটিকে প্রতি বছর স্মরণ করে আসছে।
প্রিন্ট