ঢাকা , বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo পাংশায় ডায়াগনস্টিক এন্ড ক্লিনিক এ্যাসোসিয়েশনের নবগঠিত কমিটির পরিচিতি সভা Logo বাংলাদেশ ও ঘানার জন্য আইএইচডিএফ গ্লোবাল মেডিকেল ক্যাম্প ইনিশিয়েটিভ ঘোষণা Logo বোয়ালমারীতে অরক্ষিত রেলক্রসিং ট্রেনের ধাক্কায় নছিমন চালক নিহত Logo হাতিয়ায় শিক্ষার্থীদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ Logo মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনায় চন্দ্রপাড়া দরবার শরীফে ওরছ অনুষ্ঠিত Logo চার দফা দাবী আদায়ের লক্ষ্যে ফরিদপুর ম্যাটস শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ কর্মসূচী পালন Logo চট্টগ্রামের পটিয়ায় অপহরণের ঘটনা বৃদ্ধিতে জনমনে আতঙ্ক Logo নড়াইল পৌর বিএনপি’র দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন ঘিরে চলছে উৎসবের আমেজ, চলছে প্রার্থীদের জোর প্রচারণা Logo যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টারের পদ থেকে টিউলিপের পদত্যাগ Logo সদরপুরে হত্যা মামলার আসামী গ্রেফতার
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

কুষ্টিয়ায় প্রেম করে বিয়ের পর স্ত্রীকে হত্যা, স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের ২৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।

রোববার দুপুরে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. তাজুল ইসলাম এ রায় দেন।

আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আজিজুল ইসলাম (৩৭) কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউপির চর বানিয়াপাড়া গ্রামের আফজাল হোসেনের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, আসামি আজিজুল ইসলামের সঙ্গে প্রতিবেশী জেসমিনের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরস্পর ভালোবেসে ২০১৩ সালে গোপনে বিয়ে করে তারা। বিয়ের বিষয়টি জানাজানি হলে জেসমিন আক্তারের পরিবার তার মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে জামাই হিসেবে আজিজুল ইসলামকে মেনে নেয়। কিন্তু আজিজুল ইসলামের পরিবার জেসমিনকে মন থেকে মানেন না। অকারণে জেসমিনের ওপর অত্যাচার করে। পরে স্বামী আজিজুল ইসলামও তার স্ত্রী জেসমিন আক্তারের ওপর অত্যাচার করা শুরু করে। সব অত্যাচার, নির্যাতন, দুর্ব্যবহার মেনে নিয়ে স্বামীর ঘর সংসার করতে থাকে।

এমতাবস্থায় তিন-চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর স্বামী ও স্বামীর পরিবারের লোকজন অত্যাচার-নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। বিয়ের প্রায় সাত-আট মাসের মাথায় স্বামী আজিজুল তার নিজ ঘরে নির্যাতন করে খুন করে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর জেসমিন আক্তারকে।

জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১৮ এপ্রিল গভীর রাতে স্ত্রী জেসমিন আক্তারকে নির্মম নির্যাতন ও মারপিট করে হত্যা করে স্বামী আজিজুল ইসলাম। হত্যাকাণ্ডের পর বিষয়টি ভোরের দিকে জানাজানি হয়। আসামির ঘর থেকে কুমারখালী থানা পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। পরে নিহতের বাবা ও চর বানিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রওশন আলী মালিথা বাদী হয়ে আজিজুল ইসলামসহ তার পরিবারের ৫ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা দায়ের করেন।

মামলার তদন্ত শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে ৩১ অক্টোবর রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। এ মামলায় ৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে রোববার আদালত এ রায় দেন। রায় ঘোষণার পরপরই দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আজিজুল ইসলামকে পুলিশ পাহারায় জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। এদিকে জেসমিন আক্তারের স্বজনরা রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

তার স্বজনরা জানান, জেসমিনকে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করে আসামি। ছয় বছর আদালতে মামলার কার্যক্রম শেষে আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায়ে তারা খুশি। তবে আসামির ফাঁসি হলে  আরো বেশি খুশি হতেন।

আদালতের পিপি অনুপ কুমার নন্দী বলেন, হত্যা মামলায় দোষী প্রমাণিত হওয়ায় আসামি আজিজুল ইসলামকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ১ বছর সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

পাংশায় ডায়াগনস্টিক এন্ড ক্লিনিক এ্যাসোসিয়েশনের নবগঠিত কমিটির পরিচিতি সভা

error: Content is protected !!

কুষ্টিয়ায় প্রেম করে বিয়ের পর স্ত্রীকে হত্যা, স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

আপডেট টাইম : ০৫:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২১
ইসমাইল হোসেন বাবু, কুষ্টিয়া প্রতিনিধিঃ :

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের ২৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।

রোববার দুপুরে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. তাজুল ইসলাম এ রায় দেন।

আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আজিজুল ইসলাম (৩৭) কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউপির চর বানিয়াপাড়া গ্রামের আফজাল হোসেনের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, আসামি আজিজুল ইসলামের সঙ্গে প্রতিবেশী জেসমিনের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরস্পর ভালোবেসে ২০১৩ সালে গোপনে বিয়ে করে তারা। বিয়ের বিষয়টি জানাজানি হলে জেসমিন আক্তারের পরিবার তার মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে জামাই হিসেবে আজিজুল ইসলামকে মেনে নেয়। কিন্তু আজিজুল ইসলামের পরিবার জেসমিনকে মন থেকে মানেন না। অকারণে জেসমিনের ওপর অত্যাচার করে। পরে স্বামী আজিজুল ইসলামও তার স্ত্রী জেসমিন আক্তারের ওপর অত্যাচার করা শুরু করে। সব অত্যাচার, নির্যাতন, দুর্ব্যবহার মেনে নিয়ে স্বামীর ঘর সংসার করতে থাকে।

এমতাবস্থায় তিন-চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর স্বামী ও স্বামীর পরিবারের লোকজন অত্যাচার-নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। বিয়ের প্রায় সাত-আট মাসের মাথায় স্বামী আজিজুল তার নিজ ঘরে নির্যাতন করে খুন করে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর জেসমিন আক্তারকে।

জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১৮ এপ্রিল গভীর রাতে স্ত্রী জেসমিন আক্তারকে নির্মম নির্যাতন ও মারপিট করে হত্যা করে স্বামী আজিজুল ইসলাম। হত্যাকাণ্ডের পর বিষয়টি ভোরের দিকে জানাজানি হয়। আসামির ঘর থেকে কুমারখালী থানা পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। পরে নিহতের বাবা ও চর বানিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রওশন আলী মালিথা বাদী হয়ে আজিজুল ইসলামসহ তার পরিবারের ৫ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা দায়ের করেন।

মামলার তদন্ত শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে ৩১ অক্টোবর রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। এ মামলায় ৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে রোববার আদালত এ রায় দেন। রায় ঘোষণার পরপরই দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আজিজুল ইসলামকে পুলিশ পাহারায় জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। এদিকে জেসমিন আক্তারের স্বজনরা রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

তার স্বজনরা জানান, জেসমিনকে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করে আসামি। ছয় বছর আদালতে মামলার কার্যক্রম শেষে আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায়ে তারা খুশি। তবে আসামির ফাঁসি হলে  আরো বেশি খুশি হতেন।

আদালতের পিপি অনুপ কুমার নন্দী বলেন, হত্যা মামলায় দোষী প্রমাণিত হওয়ায় আসামি আজিজুল ইসলামকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ১ বছর সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।


প্রিন্ট