ঢাকা , মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo লালপুরের পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১, আহত ৫ Logo ফরিদপুরে আ.লীগের ব্যানারে মিছিল দেওয়ার প্রস্তুতিকালে বিএনপি নেতার ছেলেসহ আটক ৮ Logo বহলবাড়ীয়া ইউনিয়ন বিএনপি’র সম্মেলন Logo শ্রমিকদল নেতাদের সহযোগীতায় জোরপূর্বক জমি দখলে শসস্ত্র হামলা Logo ডিপ্লোমা ইন্টার্ন নার্সদের একদফা দাবিতে দেশব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত Logo ছাত্রদল নেতা পারভেজ হত্যার প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল Logo সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার আমিনুল হকের ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া ও আলোচনা সভা Logo আলফাডাঙ্গায় শিক্ষকদের সংবর্ধনা ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করলেন জেলা প্রশাসক Logo মুকসুদপুর উপজেলা পরিষদের ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ Logo ভূরুঙ্গামারীতে নাশকতা বিরোধী বিশেষ অভিযানে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৫ নেতা গ্রেফতার
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

কুমারখালীতে ১৪৭ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের ৫১ পদ শূন্য

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় ১৪৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। তার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে ৫১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। সেই সাথে সহকারী শিক্ষকের ৪৬টি ও দফতরি কাম প্রহরীর ৩টি পদ শূন্য রয়েছে। আবার প্রতিটি বিদ্যালয়ে ন্যূনতম ৪ জন শিক্ষক থাকার বিধান থাকলেও উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বিদ্যালয়গুলোতে ২-৩ জন শিক্ষক রয়েছেন। এতে পাঠদানের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, কর্মরত শিক্ষকরা বার্ষিক নিয়মিত ছুটি, মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং পিটিআই ট্রেনিংসহ উপজেলার রিসোর্স সেন্টারে বিভিন্ন ট্রেনিংয়ে ব্যস্ত রয়েছেন। দাফতরিক কাজে অনেক প্রধান শিক্ষককে ব্যস্ত থাকতে হয়। এতে অনেক বিদ্যালয়ে স্বল্প শিক্ষক দিয়ে কয়েকটি শিফটে ক্লাস চালিয়ে নেওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে যাচ্ছে।

উপজেলার পান্টি বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পীতামবরবশী, লক্ষ্মীপুর, জোতমোড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি বিদ্যালয় ঘুরে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের শিক্ষকের পদ থাকলেও শিক্ষক নেই। ব্যক্তিগত সুযোগ-সুবিধার জন্য ডেপুটেশন নিয়ে অনেকে অন্য প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন। কেউ আবার বছরের পর বছর মেডিকেল ছুটি কাটাচ্ছেন। ফলে শিক্ষক-স্বল্পতায় ব্যাহত হচ্ছে মানসম্মত পাঠদান। এছাড়া প্রধান শিক্ষক বিহীন স্কুলগুলোতে সহকারী শিক্ষকরা ইচ্ছামতো যাওয়া-আসা করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

পান্টি ইউনিয়নের পীতামবরবশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মশিউর রহমান বলেন, বর্তমানে বিদ্যালয়ে ২৩০ জন শিক্ষার্থী আছেন। শিক্ষক নিয়োগের ৭টি পদের বিপরীতে আমিসহ মাত্র ২ জন শিক্ষক রয়েছেন। প্রায় ২০ বছর বিদ্যালয়ে শিক্ষক নেই। খুব বিপাকে আছি।

যদুবয়রা ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৬৭ জন।  শিক্ষকের ৯টি পদ আছে। বিপরীতে ৫ জন শিক্ষক আছেন। শিক্ষক সংকট থাকায় শিক্ষার স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

স্থানীয়রা ও অভিভাবকরা জানান, অনেক শিক্ষকই গ্রামীণ স্কুলগুলো থেকে শহরে বদলির চেষ্টায় ব্যস্ত থাকেন। যাতায়াতের সুব্যবস্থা থাকার পরও গ্রামে স্থায়ী হচ্ছেন না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন সহকারী শিক্ষক জানান, ৫০০ কিংবা তার চেয়েও বেশি শিক্ষার্থীকে মাত্র ২-৩ জন শিক্ষক দিয়ে পাঠদান করাতে হয়। এতে পাঠদানে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। শিক্ষার্থীরা মানসম্মত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, উপজেলার ১৪৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মোট ৩২ হাজার ২৭৬ জন শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। তাদের মধ্যে ছাত্র ১৫ হাজার ৩২৯ জন এবং ছাত্রী ১৬ হাজার ৯৪৭ জন ।

তিনি আরও বলেন, প্রতিষ্ঠানগুলো সবে খুলেছে আর আমি সদ্য যোগদান করেছি। শিক্ষক স্বল্পতায় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে এমন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে যেখানে বেশি শিক্ষক আছেন, সেখান থেকে ডেপুটেশন করে শিক্ষক স্বল্প প্রতিষ্ঠানে দেওয়া হবে।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

লালপুরের পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১, আহত ৫

error: Content is protected !!

কুমারখালীতে ১৪৭ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের ৫১ পদ শূন্য

আপডেট টাইম : ০২:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১
ইসমাইল হোসেন বাবু, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধিঃ :

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় ১৪৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। তার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে ৫১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। সেই সাথে সহকারী শিক্ষকের ৪৬টি ও দফতরি কাম প্রহরীর ৩টি পদ শূন্য রয়েছে। আবার প্রতিটি বিদ্যালয়ে ন্যূনতম ৪ জন শিক্ষক থাকার বিধান থাকলেও উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বিদ্যালয়গুলোতে ২-৩ জন শিক্ষক রয়েছেন। এতে পাঠদানের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, কর্মরত শিক্ষকরা বার্ষিক নিয়মিত ছুটি, মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং পিটিআই ট্রেনিংসহ উপজেলার রিসোর্স সেন্টারে বিভিন্ন ট্রেনিংয়ে ব্যস্ত রয়েছেন। দাফতরিক কাজে অনেক প্রধান শিক্ষককে ব্যস্ত থাকতে হয়। এতে অনেক বিদ্যালয়ে স্বল্প শিক্ষক দিয়ে কয়েকটি শিফটে ক্লাস চালিয়ে নেওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে যাচ্ছে।

উপজেলার পান্টি বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পীতামবরবশী, লক্ষ্মীপুর, জোতমোড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি বিদ্যালয় ঘুরে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের শিক্ষকের পদ থাকলেও শিক্ষক নেই। ব্যক্তিগত সুযোগ-সুবিধার জন্য ডেপুটেশন নিয়ে অনেকে অন্য প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন। কেউ আবার বছরের পর বছর মেডিকেল ছুটি কাটাচ্ছেন। ফলে শিক্ষক-স্বল্পতায় ব্যাহত হচ্ছে মানসম্মত পাঠদান। এছাড়া প্রধান শিক্ষক বিহীন স্কুলগুলোতে সহকারী শিক্ষকরা ইচ্ছামতো যাওয়া-আসা করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

পান্টি ইউনিয়নের পীতামবরবশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মশিউর রহমান বলেন, বর্তমানে বিদ্যালয়ে ২৩০ জন শিক্ষার্থী আছেন। শিক্ষক নিয়োগের ৭টি পদের বিপরীতে আমিসহ মাত্র ২ জন শিক্ষক রয়েছেন। প্রায় ২০ বছর বিদ্যালয়ে শিক্ষক নেই। খুব বিপাকে আছি।

যদুবয়রা ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৬৭ জন।  শিক্ষকের ৯টি পদ আছে। বিপরীতে ৫ জন শিক্ষক আছেন। শিক্ষক সংকট থাকায় শিক্ষার স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

স্থানীয়রা ও অভিভাবকরা জানান, অনেক শিক্ষকই গ্রামীণ স্কুলগুলো থেকে শহরে বদলির চেষ্টায় ব্যস্ত থাকেন। যাতায়াতের সুব্যবস্থা থাকার পরও গ্রামে স্থায়ী হচ্ছেন না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন সহকারী শিক্ষক জানান, ৫০০ কিংবা তার চেয়েও বেশি শিক্ষার্থীকে মাত্র ২-৩ জন শিক্ষক দিয়ে পাঠদান করাতে হয়। এতে পাঠদানে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। শিক্ষার্থীরা মানসম্মত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, উপজেলার ১৪৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মোট ৩২ হাজার ২৭৬ জন শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। তাদের মধ্যে ছাত্র ১৫ হাজার ৩২৯ জন এবং ছাত্রী ১৬ হাজার ৯৪৭ জন ।

তিনি আরও বলেন, প্রতিষ্ঠানগুলো সবে খুলেছে আর আমি সদ্য যোগদান করেছি। শিক্ষক স্বল্পতায় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে এমন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে যেখানে বেশি শিক্ষক আছেন, সেখান থেকে ডেপুটেশন করে শিক্ষক স্বল্প প্রতিষ্ঠানে দেওয়া হবে।


প্রিন্ট