ঢাকা , শনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

কেরোসিনের সিগন্যাল বাতি নিভে গেলে ট্রেন থামে অন্ধকার ফাঁকা মাঠে

কালীগঞ্জ মোবারকগঞ্জ স্টেশনে ঘটছে বিভিন্ন দুর্ঘটনা!

পুরাতন সিগন্যাল ব্যবস্থা, অপারেটিং ত্রুটি, চালকদের অসচেতনতাসহ নানা কারণে প্রায়ই ট্রেন লাইনচ্যুতির ঘটনা!

অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে মোবারকগঞ্জ রেলষ্ট্রেশনে ট্রেন প্রবেশ করবে। কিন্তু বাতাসে নিভে গেছে কেরোসিনের সিগন্যাল ল্যাম্প। পয়েন্টম্যান দ্রুত সিগন্যাল পিলারে উঠে ল্যাম্পেটি পুনরায় জ্বালিয়ে দিলেন। ট্রেনটি যথাসময়ে সিগন্যাল দেখতে না পাওয়ায় স্টেশন ইয়ার্ডে প্রবেশ না করে অন্ধকার ভূতুড়ে মাঠে দাঁড়িয়ে ছিল।

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ মোবারকগঞ্জ স্টেশনের প্রতিদিন এমন ঘটনা ঘটছে। সামান্য বাতাস হলেই নিভে যায় কেরোসিন দিয়ে জালানো সিগন্যাল বাতি। ব্রিটিশ আমলের সিগন্যাল বাতির ওপর ভর করেই বহুকাল ধরে চলছে এ অঞ্চলের রাতের ট্রেন। পুরাতন সিগন্যাল ব্যবস্থা, অপারেটিং ত্রুটি, চালকদের অসচেতনতাসহ নানা কারণে প্রায়ই ট্রেন লাইনচ্যুতির ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনা এড়াতে সিগন্যাল ব্যবস্থা আধুনিকীকরণ জরুরি হয়ে পড়েছে।

জেলায় ৪৫ কিলোমিটার রেল সড়কে পাঁচটি স্টেশন রয়েছে। এরমধ্যে সুন্দরপুর রেলস্টেশনটি বর্তমানে বন্ধ। তবে সচল বাকি চারটি স্টেশন এলাকায় সিগন্যাল বাতি রয়েছে ৪২টি। এরমধ্যে ৩০টি কেরোসিন বাতির আলো এবং ১২টি সোলার সিস্টেমে চলে। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন খুলনা, ঢাকা, পুড়াদহ, ঈশ^রদি, কুষ্টিয়া, রাজশাহীসহ বিভিন্ন রুটে আপ ও ডাউন মিলিয়ে গড়ে ৩০টি ট্রেন যাতায়াত করে প্রতিদিন।

মোবারকগঞ্জ রেলস্টেশনের পয়েন্টম্যান মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, প্রতিদিনই সন্ধ্যার আগে বাতি জ্বালিয়ে দিলেও বেশিরভাগ বাতির আলো বাতাস কিংবা নানা কারণে নিভে যায়। ট্রেন আসার আগে রাতে সে গুলো আবার জ্বালিয়ে দেওয়া হলেও আবার নিভে যায়। ফলে প্রায়ই সিগন্যাল দেখতে না পাওয়ায় স্টেশন ইয়ার্ডে প্রবেশ না করে মাঠের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকে ট্রেন। কখনও লাইনচ্যুতি কিংবা অন্য দুর্ঘটনাও ঘটে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে বেশি সমস্যা হয়ে থাকে।

ট্রেন চালকরা বলেন, সিগন্যাল সমস্যার কারণে রাতে দূর থেকে কিছু দেখা যায় না। সিগন্যাল না পেয়ে প্রায়ই স্টেশনে প্রবেশের আগে ট্রেন মাঠের মধ্যে দাঁড় করিয়ে রাখতে হয়। আর রাতে মাঠের মধ্যে দাঁড়িয়ে পড়লে যাত্রীরা ভিত হয়ে পড়ে।

মালবাহী ট্রেনের চালক আমিরুল ইসলাম বলেন, যেসব স্টেশনে সিগন্যাল বাতি রঙিন না সেসব স্টেশনে ট্রেন থামাতে হলে ৪৪০ গজ জায়গা লাগে। কিন্তু দেখা যায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সিগন্যাল ঠিকমতো জ্বলে না। ফলে নির্দিষ্ট জায়গা না পাওয়ায় ট্রেন ঠিকমতো থামাতে বা নিয়ন্ত্রণ করতে ঝামেলা হয়। যে কারণে ঘটছে বিভিন্ন দুর্ঘটনা ।

কালীগঞ্জ মোবারকগঞ্জ স্টেশন মাস্টার শাজাহান শেখ বলেন, সিগন্যাল ব্যবস্থা আধুনিকীকরণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো আছে। এটি আধুনিক হলে বিদ্যমান সমস্যা গুলো সমাধান হবে। এ বিষয়ে অচিরেই কাজ হবে বলে আমরা আশা করছি।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

গোমস্তাপুরে বজ্রপাতে এক কৃষকের মৃত্যু

error: Content is protected !!

কেরোসিনের সিগন্যাল বাতি নিভে গেলে ট্রেন থামে অন্ধকার ফাঁকা মাঠে

কালীগঞ্জ মোবারকগঞ্জ স্টেশনে ঘটছে বিভিন্ন দুর্ঘটনা!

আপডেট টাইম : ১০:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ অগাস্ট ২০২১
মোঃ জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধিঃ :

পুরাতন সিগন্যাল ব্যবস্থা, অপারেটিং ত্রুটি, চালকদের অসচেতনতাসহ নানা কারণে প্রায়ই ট্রেন লাইনচ্যুতির ঘটনা!

অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে মোবারকগঞ্জ রেলষ্ট্রেশনে ট্রেন প্রবেশ করবে। কিন্তু বাতাসে নিভে গেছে কেরোসিনের সিগন্যাল ল্যাম্প। পয়েন্টম্যান দ্রুত সিগন্যাল পিলারে উঠে ল্যাম্পেটি পুনরায় জ্বালিয়ে দিলেন। ট্রেনটি যথাসময়ে সিগন্যাল দেখতে না পাওয়ায় স্টেশন ইয়ার্ডে প্রবেশ না করে অন্ধকার ভূতুড়ে মাঠে দাঁড়িয়ে ছিল।

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ মোবারকগঞ্জ স্টেশনের প্রতিদিন এমন ঘটনা ঘটছে। সামান্য বাতাস হলেই নিভে যায় কেরোসিন দিয়ে জালানো সিগন্যাল বাতি। ব্রিটিশ আমলের সিগন্যাল বাতির ওপর ভর করেই বহুকাল ধরে চলছে এ অঞ্চলের রাতের ট্রেন। পুরাতন সিগন্যাল ব্যবস্থা, অপারেটিং ত্রুটি, চালকদের অসচেতনতাসহ নানা কারণে প্রায়ই ট্রেন লাইনচ্যুতির ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনা এড়াতে সিগন্যাল ব্যবস্থা আধুনিকীকরণ জরুরি হয়ে পড়েছে।

জেলায় ৪৫ কিলোমিটার রেল সড়কে পাঁচটি স্টেশন রয়েছে। এরমধ্যে সুন্দরপুর রেলস্টেশনটি বর্তমানে বন্ধ। তবে সচল বাকি চারটি স্টেশন এলাকায় সিগন্যাল বাতি রয়েছে ৪২টি। এরমধ্যে ৩০টি কেরোসিন বাতির আলো এবং ১২টি সোলার সিস্টেমে চলে। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন খুলনা, ঢাকা, পুড়াদহ, ঈশ^রদি, কুষ্টিয়া, রাজশাহীসহ বিভিন্ন রুটে আপ ও ডাউন মিলিয়ে গড়ে ৩০টি ট্রেন যাতায়াত করে প্রতিদিন।

মোবারকগঞ্জ রেলস্টেশনের পয়েন্টম্যান মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, প্রতিদিনই সন্ধ্যার আগে বাতি জ্বালিয়ে দিলেও বেশিরভাগ বাতির আলো বাতাস কিংবা নানা কারণে নিভে যায়। ট্রেন আসার আগে রাতে সে গুলো আবার জ্বালিয়ে দেওয়া হলেও আবার নিভে যায়। ফলে প্রায়ই সিগন্যাল দেখতে না পাওয়ায় স্টেশন ইয়ার্ডে প্রবেশ না করে মাঠের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকে ট্রেন। কখনও লাইনচ্যুতি কিংবা অন্য দুর্ঘটনাও ঘটে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে বেশি সমস্যা হয়ে থাকে।

ট্রেন চালকরা বলেন, সিগন্যাল সমস্যার কারণে রাতে দূর থেকে কিছু দেখা যায় না। সিগন্যাল না পেয়ে প্রায়ই স্টেশনে প্রবেশের আগে ট্রেন মাঠের মধ্যে দাঁড় করিয়ে রাখতে হয়। আর রাতে মাঠের মধ্যে দাঁড়িয়ে পড়লে যাত্রীরা ভিত হয়ে পড়ে।

মালবাহী ট্রেনের চালক আমিরুল ইসলাম বলেন, যেসব স্টেশনে সিগন্যাল বাতি রঙিন না সেসব স্টেশনে ট্রেন থামাতে হলে ৪৪০ গজ জায়গা লাগে। কিন্তু দেখা যায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সিগন্যাল ঠিকমতো জ্বলে না। ফলে নির্দিষ্ট জায়গা না পাওয়ায় ট্রেন ঠিকমতো থামাতে বা নিয়ন্ত্রণ করতে ঝামেলা হয়। যে কারণে ঘটছে বিভিন্ন দুর্ঘটনা ।

কালীগঞ্জ মোবারকগঞ্জ স্টেশন মাস্টার শাজাহান শেখ বলেন, সিগন্যাল ব্যবস্থা আধুনিকীকরণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো আছে। এটি আধুনিক হলে বিদ্যমান সমস্যা গুলো সমাধান হবে। এ বিষয়ে অচিরেই কাজ হবে বলে আমরা আশা করছি।


প্রিন্ট