ঢাকা , সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo দুর্নীতিবাজ-মাফিয়াদের রাজনীতি চাই না”— ঝালকাঠিতে এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের ঘোষণা Logo চাঁপাইনবাবগঞ্জে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ছেলের বউকে ধর্ষণের অভিযোগে শ্বশুর গ্রেফতার Logo কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে অস্ত্র-মাদকসহ আটক ১ Logo কুষ্টিয়া পৌরসভার গেটে আবর্জনা ফেলে কর্মবিরতিতে পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা Logo ভূরুঙ্গামারীতে ট্রাক-অটোর মুখোমুখি সংঘর্ষে একই পরিবারের শিশুসহ নিহত ২, আহত ৩ Logo ফরিদপুরে সাধারণ জনগণের ব্যানারে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত  Logo মুকসুদপুরে গৌতম হত্যার বিচারের দাবীতে মানববন্ধন Logo তানোরে আলুর বস্তার ভাড়া ১২ টাকা ! Logo দিনাজপুর জেলা শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং রাজ ২৪৫ ফুলবাড়ী থানা উপ কমিটির পরিচিতি ও সংবর্ধনা Logo কুষ্টিয়া ছাগলের ঘাঁস কাঁটতে গিয়ে নরসুন্দরের রহস্যজনক মৃত্যু
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

মুদি দোকান তার সাইনবোর্ডঃ লিবিয়ার পাসপোর্ট, টিকিট, ভিসা’ই শান্তি বেগমের বিক্রয়পন্য

অপি মুন্সীঃ

মাদারীপুর সদর উপজেলা বাহাদুরপুর ইউনিয়নের কাঠের পোল এলাকার মুদি দোকানদার শান্তি বেগম। চিপস্ আর কয়েকটি বিস্কুটের প্যাকেট ছাড়া দোকানে নেই কোনো মালামাল। দোকানের পিছনেই টিনের ঘরে বসবাস করেন শান্তি বেগম। দোকান করার ছলে এখানেই চলে ইতালি নেয়ার প্রাথমিক আলোচনা। আর পেছনে টিনের ঘরে বসে হয় চুক্তির লাখ লাখ টাকার লেনদেন।

.

লিবিয়ার সাগর যখন উত্তাল থাকে শান্তি বেগমের দোকানও তখন বন্ধ থাকে। আর সাগর যখন নিরব যাত্রীদের ঝুঁকি কম, ফের দোকান খুলে বসেন শান্তি বেগম। এ যেনো লিবিয়া, ইতালি পারাপারের দোকান। এমনটাই জানান শান্তি বেগমের থেকে প্রতারনার শিকার এক ভুক্তভোগী।

.

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী বলেন,লিবিয়ার প্রভাবশালী বাংলাদেশী দালালদের একজন ফরহাদের বাড়ি এই এলাকায়। কয়েক বছরে দালাল ফরহাদ হাজার লোক পাঁচার করেছেন ইতালিতে। বেশীরভাগ যাত্রী পৌঁছালেও মারা যাওয়ার সংখ্যাও নেহাত কম নয়। ফরহাদের নামে একাধিক মানবপাচার মামলা থাকলেও দেশের বাইরে অবস্থান করায় প্রশাসন তাকে খুঁজে পায়না। যেকারণে দীর্ঘ বছর যাবৎ ধারাবাহিক ভাবে অবৈধ পথ লিবিয়ায় লোক নিচ্ছেন এই ফরহাদ।

.

আর এই ফরহাদের হয়েই এই অঞ্চলে কাজ করছে শান্তি বেগম। মানবপাচারে সরাসরি জড়িত শান্তি বেগমের এই দোকানটি হচ্ছে একটি সাইনবোর্ড।

.

এসময় তিনি বলেন, মূলত শান্তি বেগমের এই দোকানটি হচ্ছে পাসপোর্ট, টিকিট ও ভিসা বিক্রির দোকান। তাকে আটক করলে অনেক যাত্রীর পাসপোর্ট, টিকিট, ভিসা পাওয়া যাবে এই দোকানে।

.

শান্তি বেগমের এক ভুক্তভোগী বর্ণনা দেন যেখানে থাকা শান্তি বেগমের কথাগুলো ছিলো- “মোট টাহা দেবেন ২২ লাখ, বই (পাসপোর্ট ) দেওয়ার সময় দেবেন ২ লাখ, আর ৫০০ ডলারের বদলে দেবেন ৫৫০০০, মোট ২৫৫০০০ টাহা দেবেন বই দেওয়ার সময়। বাকি ১৯৪৫০০০ টাহা দেবেন লিবিয়া যাওয়ার পর, গেম দেওয়ার আগে। (ধরা আমার, মরা আল্লার)।

.

৬০ জনরে পাঠাইছি, হ্যারা এহন লাখ লাখ টাহা কামাইতাছে ইতালি বইয়া”। প্রতারনার শিকার ভুক্তভোগী এসময় মহিলা মানবপাচারকারী দালাল শান্তি বেগমের গ্রেপ্তারের দাবী জানান।

.

এ বিষয়ে মাদারীপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম জানান, মাদারীপুরে লিবিয়া দিয়ে ইতালি যাওয়ার প্রবণতা বেশি। এই অবৈধ পথে গিয়ে অনেকেই হারাচ্ছেন প্রাণ। আমরা এসব মানব পাচারকারী চক্রের সদস্যদের নিয়মিত আইনের আওতায় এনে বিচার চালিয়ে যাচ্ছি।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

দুর্নীতিবাজ-মাফিয়াদের রাজনীতি চাই না”— ঝালকাঠিতে এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের ঘোষণা

error: Content is protected !!

মুদি দোকান তার সাইনবোর্ডঃ লিবিয়ার পাসপোর্ট, টিকিট, ভিসা’ই শান্তি বেগমের বিক্রয়পন্য

আপডেট টাইম : ০৭:৫৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫
অপি মুন্সী, শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি :

অপি মুন্সীঃ

মাদারীপুর সদর উপজেলা বাহাদুরপুর ইউনিয়নের কাঠের পোল এলাকার মুদি দোকানদার শান্তি বেগম। চিপস্ আর কয়েকটি বিস্কুটের প্যাকেট ছাড়া দোকানে নেই কোনো মালামাল। দোকানের পিছনেই টিনের ঘরে বসবাস করেন শান্তি বেগম। দোকান করার ছলে এখানেই চলে ইতালি নেয়ার প্রাথমিক আলোচনা। আর পেছনে টিনের ঘরে বসে হয় চুক্তির লাখ লাখ টাকার লেনদেন।

.

লিবিয়ার সাগর যখন উত্তাল থাকে শান্তি বেগমের দোকানও তখন বন্ধ থাকে। আর সাগর যখন নিরব যাত্রীদের ঝুঁকি কম, ফের দোকান খুলে বসেন শান্তি বেগম। এ যেনো লিবিয়া, ইতালি পারাপারের দোকান। এমনটাই জানান শান্তি বেগমের থেকে প্রতারনার শিকার এক ভুক্তভোগী।

.

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী বলেন,লিবিয়ার প্রভাবশালী বাংলাদেশী দালালদের একজন ফরহাদের বাড়ি এই এলাকায়। কয়েক বছরে দালাল ফরহাদ হাজার লোক পাঁচার করেছেন ইতালিতে। বেশীরভাগ যাত্রী পৌঁছালেও মারা যাওয়ার সংখ্যাও নেহাত কম নয়। ফরহাদের নামে একাধিক মানবপাচার মামলা থাকলেও দেশের বাইরে অবস্থান করায় প্রশাসন তাকে খুঁজে পায়না। যেকারণে দীর্ঘ বছর যাবৎ ধারাবাহিক ভাবে অবৈধ পথ লিবিয়ায় লোক নিচ্ছেন এই ফরহাদ।

.

আর এই ফরহাদের হয়েই এই অঞ্চলে কাজ করছে শান্তি বেগম। মানবপাচারে সরাসরি জড়িত শান্তি বেগমের এই দোকানটি হচ্ছে একটি সাইনবোর্ড।

.

এসময় তিনি বলেন, মূলত শান্তি বেগমের এই দোকানটি হচ্ছে পাসপোর্ট, টিকিট ও ভিসা বিক্রির দোকান। তাকে আটক করলে অনেক যাত্রীর পাসপোর্ট, টিকিট, ভিসা পাওয়া যাবে এই দোকানে।

.

শান্তি বেগমের এক ভুক্তভোগী বর্ণনা দেন যেখানে থাকা শান্তি বেগমের কথাগুলো ছিলো- “মোট টাহা দেবেন ২২ লাখ, বই (পাসপোর্ট ) দেওয়ার সময় দেবেন ২ লাখ, আর ৫০০ ডলারের বদলে দেবেন ৫৫০০০, মোট ২৫৫০০০ টাহা দেবেন বই দেওয়ার সময়। বাকি ১৯৪৫০০০ টাহা দেবেন লিবিয়া যাওয়ার পর, গেম দেওয়ার আগে। (ধরা আমার, মরা আল্লার)।

.

৬০ জনরে পাঠাইছি, হ্যারা এহন লাখ লাখ টাহা কামাইতাছে ইতালি বইয়া”। প্রতারনার শিকার ভুক্তভোগী এসময় মহিলা মানবপাচারকারী দালাল শান্তি বেগমের গ্রেপ্তারের দাবী জানান।

.

এ বিষয়ে মাদারীপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম জানান, মাদারীপুরে লিবিয়া দিয়ে ইতালি যাওয়ার প্রবণতা বেশি। এই অবৈধ পথে গিয়ে অনেকেই হারাচ্ছেন প্রাণ। আমরা এসব মানব পাচারকারী চক্রের সদস্যদের নিয়মিত আইনের আওতায় এনে বিচার চালিয়ে যাচ্ছি।


প্রিন্ট