গোলাম রাব্বীঃ
৪৪টি স্লুইচ গেট খুলেছে তিস্তা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ, তবুও নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে; মহিপুর ব্রিজ এলাকায় আশঙ্কা প্রবল
তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার এক সেন্টিমিটার উপরে (পানি স্তর ৫২.১৬ মি) পৌঁছে গেছে, যা রংপুর জেলার মহিপুর এলাকায় অবস্থিত গঙ্গাচড়া উপজেলার তিস্তা তীরবর্তী এলাকায় ব্যাপক ভাঙন ও প্লাবনের আশঙ্কা তৈরি করেছে ।
সর্বশেষ পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, নদীর পানি মাত্র ১৬ ঘণ্টায় ২৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। দ্রুত বাড়ন্ত প্রবাহে নিম্নাঞ্চলের বাড়ি ও কৃষি জমি প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে ।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (PWDB) তিস্তা ব্যারেজে অবস্থিত ৪৪টি স্লুইচ গেট সম্পূর্ণভাবে খুলে দিয়েছে যাতে পানির চাপ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। তবে উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাত বৃদ্ধি অব্যাহত থাকে, কী হবে তা বলা কঠিন ।
গঙ্গাচড়া উপজেলার মহিপুর, লক্ষিটারী, নোহালী, গজঘন্টা ও মর্নেয়া ইউনিয়নগুলোর নিচু চরাঞ্চল ইতোমধ্যেই পানিতে তলিয়ে গেছে। কদিন আগেই চারা ওঠা ধানক্ষেত এবং সবজি ক্ষেত প্লাবিত হয়েছে, এবং কয়েকশ পরিবার বন্যাকবলিত হয়েছেন ।
স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, ভারতীয় সীমানায় অবস্থিত গজলডোবা ব্যারেজ থেকে হঠাৎ পানি ছাড়া হলে তাদের এলাকাগুলো অজানা কিছু সময়ের মধ্যে প্লাবিত হয়ে যায়। “হঠাৎ পানি এসে ঘরবাড়ি ও রাস্তা ডুবে গেছে… কোথাও যেতে পারছি না,”
বলেন নোহালী ইউনিয়নের স্থানীয় এক বাসিন্দা ।
তিস্তা ব্যারেজে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ইনচার্জ নুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার নিচে প্রবাহিত হলেও খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং যে কোনো সময় বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। তাই তীরবর্তী বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে ।
ফ্লাড ফোরকাস্টিং অ্যান্ড ওয়ার্নিং সেন্টার (FFWC) পূর্বাভাস দিয়েছে যে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও নীলফামারীজুড়ে হালকা থেকে ভারি বৃষ্টিপাত এবং ভারতীয় উজানে উত্তাল বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে ।
সরকারি ও স্থানীয় প্রশাসন প্লাবন শামিল এলাকার জন্য খাদ্য, আশ্রয় ও জরুরি ত্রাণ প্রদানে প্রস্তুতি নিচ্ছে, যেখানে পানিবন্দি পরিবারগুলিকে দ্রুত সহায়তা পৌঁছে দেয়ার পরিকল্পনা আছে।
প্রিন্ট