আলিফ হোসেনঃ
রাজশাহীর তানোরের বহুল আলোচিত ও বির্তকিত মহানগর ক্লিনিকে ফের ভূল চিকিৎসায় প্রসূতি মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।একের পর এক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটলেও এই ক্লিনিকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। সাধারণের প্রশ্ন মহানগর ক্লিনিকে মৃত্যুর মিছিল আরো কত বড় হলে এদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের টনক নড়বে ?
স্থানীয়রা জানান,এখানে চিকিৎসকের পরিবর্তে আয়া-কর্মচারী দিয়ে অপারেশন করাতে গিয়ে এমন অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে। এই মৃত্যুর দায় নিবে কে-? এদিকে তালন্দ ইউনিয়নের (ইউপি) এক ইউপি সদস্যর মাধ্যমে নিহতের পরিবারের মুখ বন্ধ রাখতে রফাদফা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।অন্যদিকে ক্লিনিকে সার্বক্ষনিক একজন এমবিবিএস চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও এখানে কোনো চিকিৎসক থাকে না।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত ১২ জুলাই শনিবার সকালে তালন্দ ইউপির দেউল গ্রামের জনৈক ব্যক্তির কন্যার (১৮) প্রসব বেদনা নিয়ে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র যান।তবে তার শারীরিক অবস্থা ঝুঁকিপুর্ণ হওয়ায় স্বাস্থ্য কর্মীরা তাকে ভর্তি না করে দ্রুত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) যাবার পরামর্শ দেন। এ সময় ক্লিনিকের এক দালাল তাকে ফুঁসলিয়ে মহানগর ক্লিনিকে নিয়ে ভর্তি করায়।
এদিন বিকেলে মহানগর ক্লিনিকে চিকিৎসকের অনুপস্থিতিতেই প্রসূতির সিজার করা হলে সন্তানের জন্ম দেয়, তবে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে রোগীকে দ্রুত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে দেন ক্লিনিক মালিক। রামেকের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসারত অবস্থায় গত ১৪ জুলাই সোমবার সকালে আইসিইউতে প্রসূতি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
নিহতের পিতা বলেন, মহানগর ক্লিনিকের ভুল চিকিৎসায় তার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। তিনি এর কঠোর বিচার চান। যাতে করে আর কোন বাপ মায়ের কোল খালি না হয়। এরা ক্লিনিকের নামে দোকান খোলে বসেছে,এদের কঠিন শাস্তি হওয়া দরকার।
এবিষয়ে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও মহানগর ক্লিনিকের দায়িত্বশীল কারো কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এবিষয়ে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (টিএইচও) বার্নাবাস হাসদাকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনিও ফোন রিসিভ করেনি। এবিষয়ে রাজশাহী জেলা সিভিল সার্জন বলেন, এখানো তারা কোনো অভিযোগ পাননি,তবে এবিষয়ে বিস্তারিত খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত,তানোরে স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে এ ধরনের অব্যবস্থাপনা দীর্ঘদিনের। প্রশাসনের কার্যকর নজরদারি এখন সময়ের দাবি।
প্রিন্ট