রাশিদুল ইসলাম রাশেদঃ
নাটোরের লালপুরে প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও ফাজিল মাদ্রাসা পর্যায়ের ৬৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রধান না থাকায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও অধ্যক্ষ দিয়ে চলছে এ সব প্রতিষ্ঠান। এতে ব্যাহত হচ্ছে ওই সকল প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক ও শিক্ষা কার্যক্রম।
.
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় প্রাথমিক পর্যায়ে অনুমোদিত বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৯৪টি। এর মধ্যে ১১২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। বাকিগুলো বেসরকারি, এনজিও এবং কিন্ডারগার্টের (কেজি) স্কুল। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১৬টির প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন চলতি দায়িত্বপ্রাপ্তরা (পদোন্নতির জন্য অনুমোদনের অপেক্ষমান)। এছাড়া মামলা জনিত কারণে শূন্য ১১টিসহ মোট ৪৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কার্যক্রম ভারপ্রাপ্তদের দিয়ে চলমান রয়েছে।
.
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ৯৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে ৩টি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৪৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৯টি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, ৪টি উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ, ২টি ডিগ্রি কলেজ, ৩টি ডিগ্রি ও অনার্স কলেজ, ৩টি এবতেদায়ি মাদ্রাসা, ১৭টি দাখিল মাদ্রাসা, ৩টি আলিম মাদ্রাসা, ১টি ফাজিল মাদ্রাসা, ২টি স্বতন্ত্র কারিগরি ভোকেশনাল স্কুল এবং ৫টি কলেজ রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের ১৯টিতে ২০১৭ সাল থেকে ২০২৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত খালি হওয়া প্রতিষ্ঠান প্রধানের পদ শূন্য রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ১১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২টি দাখিল মাদ্রাসা, ১টি ফাজিল মাদ্রাসা, ১টি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ ও ৪টি সাধারণ কলেজ।
.
লালপুর কেএন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. হানিফ আলী খান বলেন, একই সঙ্গে শ্রেণী পাঠদান, প্রশাসনিক ও দাপ্তরিক কাজ করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এতে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। চকনাজিরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জিল্লুর রহমান বলেন, ২০২০ সাল থেকে প্রধান শিক্ষক না থাকায় একই সাথে পাঠদান ও দাপ্তরিক কাজে চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। দ্রুত নিয়মিত কমিটি গঠন করে প্রধান শিক্ষক নিয়োগে জোর দেন তিনি।
.
লালপুর ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ ফিরোজ হোসেন সময়ের প্রত্যাশাকে বলেন, কলেজের সকল কার্যক্রম সুন্দরভাবে পরিচালনার জন্য দ্রুত অধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন।
.
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোছা. নার্গিস সুলতানা সময়ের প্রত্যাশাকে জানান, প্রধান শিক্ষকের পদ খালি থাকায় পাঠের মানোন্নয়নে বিঘ্ন ঘটছে। ইতিমধ্যে সহকারী শিক্ষকদের পদোন্নতির মাধ্যমে শূন্য পদ পূরণের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে পত্র দেওয়া হয়েছে। পদগুলো পূরণ হলে শিক্ষা কার্যক্রম বেগবান হবে।
.
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ওয়াজেদ আলী মৃধা সময়ের প্রত্যাশাকে বলেন, প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদ থাকার দরুন প্রতিষ্ঠানে প্রশাসনিক কাজে এবং শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কমিটি না থাকায় কিংবা স্থানীয় ও রাজনৈতিক সমস্যার কারণে প্রধান শিক্ষকের পদ পূরণ ও নিয়োগ দেওয়া যাচ্ছে না।
.
এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানসমূহের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মেহেদি হাসান সময়ের প্রত্যাশাকে বলেন, বর্তমানে এডহক কমিটি গঠনের কাজ চলছে। এরপর নিয়মিত কমিটি গঠন হলে তারা দ্রুত প্রধান শিক্ষিক নিয়োগ দিবেন বলে আশা করেন তিনি।
প্রিন্ট