ঢাকা , মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo বাংলাদেশের গতানুগতিক রাজনীতিবিদদের জন্য রাজনীতি কঠিন করে তুলবঃ-হান্নান মাসউদ Logo অবৈধ সম্পদঃ হানিফ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের ২ মামলা Logo বিএনপিতে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও দখলবাজদের স্থান নেইঃ -রুহুল কবির রিজভী Logo এবছর উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ হয়েছে কেশবপুর উপজেলা Logo ঝালকাঠিতে বিএনপির প্রাথমিক সদস্য ফরম বিতরণ কার্যক্রমে গতি আনতে জেলা সমন্বয়ক টিম গঠন Logo কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ফরিদপুরে জেলা ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল‌ অনুষ্ঠিত Logo লালপুরে অগ্নিকাণ্ডে পুড়লো খামারির স্বপ্ন Logo কালুখালীতে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস পালিত Logo নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে শিক্ষিকার দীর্ঘ অনুপস্থিতিঃ কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ ঝুঁকিতে Logo ফরিদপুরে ২৭টি “ভূমি সেবা সহায়তা কেন্দ্র” উদ্বোধন
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন আজ

ইসমাইল হোসেন বাবু:

আজ ২৫শে বৈশাখ, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মবার্ষিকী। ১২৬৮ বঙ্গাব্দের এই দিনে, কলকাতার জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র রবীন্দ্রনাথ। তার অসামান্য সৃষ্টি গল্প, কবিতা, উপন্যাস, নাটক এবং হাজারো গান- বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে বিশ্বদরবারে পরিচিত করে তুলেছে। তিনি শুধু একজন কবিই নন, ছিলেন একাধারে সংগীতস্রষ্টা, দার্শনিক ও মানবতাবাদী চিন্তক।

.

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম ব্রাহ্ম ধর্মগুরু দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও সারদাসুন্দরী দেবীর ঘরে। মাত্র আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন। ১৮৯১ সাল থেকে পিতার আদেশে তিনি নদীয়া, পাবনা, রাজশাহী ও ওড়িশার জমিদারি তদারকির দায়িত্ব নেন এবং কুষ্টিয়ার শিলাইদহের কুঠিবাড়িতে দীর্ঘ সময় কাটান। ১৯০১ সালে তিনি সপরিবারে চলে যান বীরভূমের বোলপুর শহরের উপকণ্ঠে শান্তিনিকেতনে, যেখানে গড়ে তোলেন এক অনন্য শিক্ষানিকেতন।

.

তার জীবদ্দশায় এবং মৃত্যুর পর প্রকাশিত হয়েছে ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস, ৩৬টি প্রবন্ধ ও বহু গদ্য সংকলন। সাহিত্যের এই অমর পুরুষ, যিনি বাংলা ভাষাকে পৌঁছে দিয়েছেন বিশ্বসাহিত্যের উচ্চতায়, আজ তার জন্মদিনে নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে স্মরণ করছেন অগণিত ভক্ত ও অনুরাগী।

.

এ বছর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মবার্ষিকীর প্রধান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে কুষ্টিয়ার শিলাইদহে, যেখানে কবি দীর্ঘ সময় কাটিয়েছিলেন জমিদারি তদারকির কাজে। পাশাপাশি, বিশ্বকবির স্মৃতিবিজড়িত স্থান- নওগাঁর পতিসর, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর এবং খুলনার দক্ষিণডিহি ও পিঠাভোগেও নানা আয়োজনে দিনটি উদ্‌যাপন করা হবে। এসব স্থানে অনুষ্ঠিত হবে রবীন্দ্রমেলা, রবীন্দ্রবিষয়ক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

.

এবারের রবীন্দ্র জন্মবার্ষিকীর প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে- ‘রবীন্দ্রনাথ ও বাংলাদেশ’। দিবসটি উপলক্ষে ঢাকার বিভিন্ন সড়কদ্বীপ ও দেশের সব জেলা শহরে বিশ্বকবির ছবি, কবিতা, পরিচিতি ও চিত্রকর্ম প্রদর্শনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি তিন দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ও চিত্রশিল্প প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। বাংলা একাডেমি ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেও আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের আয়োজন করা হয়েছে।

.

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্যজগৎ ছিল বৈচিত্র্যে ভরপুর- বর্ণ, মানসিকতা ও চেতনার অনন্য সংমিশ্রণে গঠিত। তার সৃষ্ট চরিত্রগুলো আজও জীবন্ত; নিঃসঙ্গতার প্রতিচ্ছবি ‘চারুলতা’, সামাজিক বাধা পেরিয়ে আত্মসচেতন হয়ে ওঠা ‘বিনোদিনী’, কিংবা স্বদেশপ্রেম ও জাতিসত্তার দ্বন্দ্বে জর্জরিত ‘গোরা’র মাঝে পাঠক এখনো খুঁজে ফেরে নিজের প্রতিচ্ছবি। বাংলার মাটিতে যেমন তিনি গৌরবের প্রতীক, তেমনি তার সাহিত্য দীপ্ত হয়ে উঠেছে বিশ্বমঞ্চেও। সাহিত্যে অনন্য অবদানের জন্য ১৯১৩ সালে এই নবজাগরণের পথপ্রদর্শককে প্রদান করা হয় নোবেল পুরস্কার, যা আজও বাঙালির এক গর্বিত ঐতিহ্য। দিনটি উদযাপনে দেশের বিভিন্ন স্থানে আয়োজন করা হয়েছে নানা কর্মসূচি।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

বাংলাদেশের গতানুগতিক রাজনীতিবিদদের জন্য রাজনীতি কঠিন করে তুলবঃ-হান্নান মাসউদ

error: Content is protected !!

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন আজ

আপডেট টাইম : ১২:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ মে ২০২৫
ইসমাইল হোসেন বাবু, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার :

ইসমাইল হোসেন বাবু:

আজ ২৫শে বৈশাখ, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মবার্ষিকী। ১২৬৮ বঙ্গাব্দের এই দিনে, কলকাতার জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র রবীন্দ্রনাথ। তার অসামান্য সৃষ্টি গল্প, কবিতা, উপন্যাস, নাটক এবং হাজারো গান- বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে বিশ্বদরবারে পরিচিত করে তুলেছে। তিনি শুধু একজন কবিই নন, ছিলেন একাধারে সংগীতস্রষ্টা, দার্শনিক ও মানবতাবাদী চিন্তক।

.

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম ব্রাহ্ম ধর্মগুরু দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও সারদাসুন্দরী দেবীর ঘরে। মাত্র আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন। ১৮৯১ সাল থেকে পিতার আদেশে তিনি নদীয়া, পাবনা, রাজশাহী ও ওড়িশার জমিদারি তদারকির দায়িত্ব নেন এবং কুষ্টিয়ার শিলাইদহের কুঠিবাড়িতে দীর্ঘ সময় কাটান। ১৯০১ সালে তিনি সপরিবারে চলে যান বীরভূমের বোলপুর শহরের উপকণ্ঠে শান্তিনিকেতনে, যেখানে গড়ে তোলেন এক অনন্য শিক্ষানিকেতন।

.

তার জীবদ্দশায় এবং মৃত্যুর পর প্রকাশিত হয়েছে ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস, ৩৬টি প্রবন্ধ ও বহু গদ্য সংকলন। সাহিত্যের এই অমর পুরুষ, যিনি বাংলা ভাষাকে পৌঁছে দিয়েছেন বিশ্বসাহিত্যের উচ্চতায়, আজ তার জন্মদিনে নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে স্মরণ করছেন অগণিত ভক্ত ও অনুরাগী।

.

এ বছর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মবার্ষিকীর প্রধান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে কুষ্টিয়ার শিলাইদহে, যেখানে কবি দীর্ঘ সময় কাটিয়েছিলেন জমিদারি তদারকির কাজে। পাশাপাশি, বিশ্বকবির স্মৃতিবিজড়িত স্থান- নওগাঁর পতিসর, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর এবং খুলনার দক্ষিণডিহি ও পিঠাভোগেও নানা আয়োজনে দিনটি উদ্‌যাপন করা হবে। এসব স্থানে অনুষ্ঠিত হবে রবীন্দ্রমেলা, রবীন্দ্রবিষয়ক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

.

এবারের রবীন্দ্র জন্মবার্ষিকীর প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে- ‘রবীন্দ্রনাথ ও বাংলাদেশ’। দিবসটি উপলক্ষে ঢাকার বিভিন্ন সড়কদ্বীপ ও দেশের সব জেলা শহরে বিশ্বকবির ছবি, কবিতা, পরিচিতি ও চিত্রকর্ম প্রদর্শনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি তিন দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ও চিত্রশিল্প প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। বাংলা একাডেমি ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেও আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের আয়োজন করা হয়েছে।

.

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্যজগৎ ছিল বৈচিত্র্যে ভরপুর- বর্ণ, মানসিকতা ও চেতনার অনন্য সংমিশ্রণে গঠিত। তার সৃষ্ট চরিত্রগুলো আজও জীবন্ত; নিঃসঙ্গতার প্রতিচ্ছবি ‘চারুলতা’, সামাজিক বাধা পেরিয়ে আত্মসচেতন হয়ে ওঠা ‘বিনোদিনী’, কিংবা স্বদেশপ্রেম ও জাতিসত্তার দ্বন্দ্বে জর্জরিত ‘গোরা’র মাঝে পাঠক এখনো খুঁজে ফেরে নিজের প্রতিচ্ছবি। বাংলার মাটিতে যেমন তিনি গৌরবের প্রতীক, তেমনি তার সাহিত্য দীপ্ত হয়ে উঠেছে বিশ্বমঞ্চেও। সাহিত্যে অনন্য অবদানের জন্য ১৯১৩ সালে এই নবজাগরণের পথপ্রদর্শককে প্রদান করা হয় নোবেল পুরস্কার, যা আজও বাঙালির এক গর্বিত ঐতিহ্য। দিনটি উদযাপনে দেশের বিভিন্ন স্থানে আয়োজন করা হয়েছে নানা কর্মসূচি।


প্রিন্ট