ঢাকা , সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

ভূরুঙ্গামারীর চরাঞ্চলে ভুট্টা চাষে দ্বিগুণ লাভের সম্ভাবনায় কৃষকরা

আরিফুল ইসলাম জয়ঃ

 

শুরুতে বিভিন্ন রকমের ফসল উৎপাদন করে লোকসানের মুখে পড়েছিলেন চরাঞ্চলের কৃষকরা। তবে গত কয়েক বছর ধরে ভুট্টা চাষে এসেছে স্বস্তি ও সফলতা। সোনাহাট চরে এ বছর ২০ একর জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন এক কৃষক। উৎপাদন ভালো হওয়ায় তিনি আশা করছেন প্রায় ৮ লাখ টাকা লাভ করবেন।

.

চরাঞ্চলের কৃষকদের পাশাপাশি অনেক শিক্ষিত বেকার যুবকও এখন ঝুঁকছেন ভুট্টা চাষের দিকে। সোনাহাট চরে গিয়ে দেখা গেল, চলছে ভুট্টা উত্তোলন ও মারাইয়ের ব্যস্ততা। কৃষকদের ধারণা, প্রতি একরে এবার ভুট্টার ফলন হবে ১৭ থেকে ২০ মন পর্যন্ত। একজন চাষি বলেন, ‘এবার ফলন ভালো হয়েছে। আমরা চাই, আমাদের দেখে অন্যরাও উদ্বুদ্ধ হোক।’

.

দুধ কুমর, ফুল কুমর ও গদাধর নদীর অববাহিকায় ব্যাপক ভুট্টা চাষ হয়েছে।

.

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, এ বছর উপজেলায় ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১,২৭০ হেক্টর। তবে সেই লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে। আগামীতে চাষ আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

.

চরের অনুর্বর বালু মাটিতে এবার যেন ভুট্টার বিপ্লব ঘটেছে। নদী বেষ্টিত এই উপজেলায় রয়েছে বেশ কিছু চরাঞ্চল, যেখানে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ভুট্টা আবাদ। উৎপাদন ব্যয়ের তুলনায় লাভ বেশি হওয়ায় কৃষকরা ভুট্টা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।

.

প্রতিদিন ভুট্টার ক্ষেত পরিচর্যা, উত্তোলনসহ নানা কাজে নারী-পুরুষ শ্রমিকদের কর্মযজ্ঞ চলছে। প্রতিদিন কাজের বিনিময়ে পুরুষ শ্রমিকরা পাচ্ছেন ৫০০ টাকা এবং নারী শ্রমিকরা পাচ্ছেন ৪০০ টাকা করে। ভুট্টার গাছ জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহৃত হচ্ছে, তাই অনেকেই কিষাণ না হয়েও গাছ, পাতান ও মোচার বিনিময়ে কাজ করছেন।

.

এখানে শুধুমাত্র ভুট্টার মোছার বিনিময়ে কাজ করা মোঃ মতিন মিয়া বলেন, ‘ভুট্টার আবাদে যেমন কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন, তেমনি আমরা শ্রমিকরাও কাজের সুযোগ পাচ্ছি।’ মোছাঃ আঞ্জুমান বেগম বলেন, ‘আমরা ভুট্টার গাছ কেটে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করি। এ জন্য গাছ কাটছি।’

.

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোঃ সরোয়ার তৌহিদ বলেন, ‘চরাঞ্চলের আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর কুড়িগ্রাম জেলায় ভুট্টা চাষ ভালো হয়েছে। ভুট্টা একটি লাভজনক ফসল। কৃষকদের আমরা পরামর্শ দিচ্ছি অনুর্বর চরাঞ্চলে ভুট্টা চাষ করতে। তবে উর্বর ধানি জমিতে ভুট্টা চাষ করতে আমরা নিরুৎসাহিত করছি।’


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

ভূরুঙ্গামারীর চরাঞ্চলে ভুট্টা চাষে দ্বিগুণ লাভের সম্ভাবনায় কৃষকরা

আপডেট টাইম : ৫ ঘন্টা আগে
আরিফুল ইসলাম জয়, ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি :

আরিফুল ইসলাম জয়ঃ

 

শুরুতে বিভিন্ন রকমের ফসল উৎপাদন করে লোকসানের মুখে পড়েছিলেন চরাঞ্চলের কৃষকরা। তবে গত কয়েক বছর ধরে ভুট্টা চাষে এসেছে স্বস্তি ও সফলতা। সোনাহাট চরে এ বছর ২০ একর জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন এক কৃষক। উৎপাদন ভালো হওয়ায় তিনি আশা করছেন প্রায় ৮ লাখ টাকা লাভ করবেন।

.

চরাঞ্চলের কৃষকদের পাশাপাশি অনেক শিক্ষিত বেকার যুবকও এখন ঝুঁকছেন ভুট্টা চাষের দিকে। সোনাহাট চরে গিয়ে দেখা গেল, চলছে ভুট্টা উত্তোলন ও মারাইয়ের ব্যস্ততা। কৃষকদের ধারণা, প্রতি একরে এবার ভুট্টার ফলন হবে ১৭ থেকে ২০ মন পর্যন্ত। একজন চাষি বলেন, ‘এবার ফলন ভালো হয়েছে। আমরা চাই, আমাদের দেখে অন্যরাও উদ্বুদ্ধ হোক।’

.

দুধ কুমর, ফুল কুমর ও গদাধর নদীর অববাহিকায় ব্যাপক ভুট্টা চাষ হয়েছে।

.

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, এ বছর উপজেলায় ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১,২৭০ হেক্টর। তবে সেই লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে। আগামীতে চাষ আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

.

চরের অনুর্বর বালু মাটিতে এবার যেন ভুট্টার বিপ্লব ঘটেছে। নদী বেষ্টিত এই উপজেলায় রয়েছে বেশ কিছু চরাঞ্চল, যেখানে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ভুট্টা আবাদ। উৎপাদন ব্যয়ের তুলনায় লাভ বেশি হওয়ায় কৃষকরা ভুট্টা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।

.

প্রতিদিন ভুট্টার ক্ষেত পরিচর্যা, উত্তোলনসহ নানা কাজে নারী-পুরুষ শ্রমিকদের কর্মযজ্ঞ চলছে। প্রতিদিন কাজের বিনিময়ে পুরুষ শ্রমিকরা পাচ্ছেন ৫০০ টাকা এবং নারী শ্রমিকরা পাচ্ছেন ৪০০ টাকা করে। ভুট্টার গাছ জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহৃত হচ্ছে, তাই অনেকেই কিষাণ না হয়েও গাছ, পাতান ও মোচার বিনিময়ে কাজ করছেন।

.

এখানে শুধুমাত্র ভুট্টার মোছার বিনিময়ে কাজ করা মোঃ মতিন মিয়া বলেন, ‘ভুট্টার আবাদে যেমন কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন, তেমনি আমরা শ্রমিকরাও কাজের সুযোগ পাচ্ছি।’ মোছাঃ আঞ্জুমান বেগম বলেন, ‘আমরা ভুট্টার গাছ কেটে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করি। এ জন্য গাছ কাটছি।’

.

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোঃ সরোয়ার তৌহিদ বলেন, ‘চরাঞ্চলের আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর কুড়িগ্রাম জেলায় ভুট্টা চাষ ভালো হয়েছে। ভুট্টা একটি লাভজনক ফসল। কৃষকদের আমরা পরামর্শ দিচ্ছি অনুর্বর চরাঞ্চলে ভুট্টা চাষ করতে। তবে উর্বর ধানি জমিতে ভুট্টা চাষ করতে আমরা নিরুৎসাহিত করছি।’


প্রিন্ট