ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

জমির দখল পেয়ে পাঁচ বছর পর আবার দুশ্চিন্তায় ভূমিহীন পরিবারগুলো

মুকসুদপুরে ভূমি কর্মকর্তাকে ‘ঘুষ’ না দিলে বন্দোবস্ত বাতিলের হুমকি

বাদশাহ মিয়াঃ

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার জলিরপাড় ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা রিমন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে ঘুষ দাবির অভিযোগ করেছেন পাঁচ ভূমিহীন পরিবার। তাদের দাবি, ঘুষ না দিলে বন্দোবস্ত পাওয়া জমির দলিল বাতিল করে দেওয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছেন তিনি।

 

এ নিয়ে জলিরপাড় এলাকার ভূমিহীনদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর গত ১৩ এপ্রিল লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। তবে অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত কর্মকর্তা রিমন বিশ্বাস।

 

অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার জলিরপাড় এলাকার ৯টি ভূমিহীন পরিবার ২০১৯ সালে বন্দোবস্ত দলিল বুঝে পান। কিন্তু স্থানীয় কিছু ভূমিদস্যুর হামলা-মামলার কারণে দখলে যেতে পারেননি তারা।

 

পরবর্তীতে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ২০২৪ সালের অক্টোবরে জলিরপাড় ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. ইমারত হোসেন মিয়া ও সার্ভেয়ার বাবুল হোসেন জমি পরিমাপ করে বুঝিয়ে দেন এবং লাল পতাকা টাঙিয়ে দেন। তবে এখন আবারও দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ভূমিহীন পরিবারগুলো।

 

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, হঠাৎ করে ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা রিমন বিশ্বাস তাদেরকে জানান, জমির বিষয়ে অভিযোগ এসেছে এবং তিনি বন্দোবস্ত দলিল বাতিলের সুপারিশ করে প্রতিবেদন দেবেন। প্রতিবেদন নিজের পক্ষে নিতে হলে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে ঘুষ দিতে হবে। অন্যথায়, দলিল বাতিল করবেন বলেও হুমকি দেন তিনি।

 

ভুক্তভোগী জামেলা খানম বলেন, “আমরা গরিব মানুষ, সরকার থেকে ভূমি পেয়েছি। পাঁচ বছর পর দখল বুঝে পেয়েছি। এখন আবার রিমন বিশ্বাস আমাদের অফিসে ডেকে বলেন, ‘আপনাদের জমির বিষয়ে অভিযোগ এসেছে, দলিল বাতিলের প্রতিবেদন দেব। প্রতিবেদন পক্ষে নিতে ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে।’ আমরা গরীব মানুষ, এত টাকা কোথায় পাব?”

 

একই অভিযোগ করেছেন সেলিনা বেগম, রিনা বেগম, কহিনুর বেগম ও বাবুল প্রধান।

 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রিমন বিশ্বাস বলেন, “স্থানীয় কিছু লোক সরকারি জমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। ডিসি স্যারের নির্দেশে আমি সরেজমিন তদন্ত করে প্রতিবেদন পাঠিয়েছি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছে।”

 

তিনি আরও বলেন, “অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। প্রমাণ না করতে পারলে আমি তাদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করব।”

 

মুকসুদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাসনিম আক্তার বলেন, “বিষয়টি আপনার (সাংবাদিক) মাধ্যমে জানলাম। খোঁজ নিয়ে পরে বলতে পারব।”


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

error: Content is protected !!

জমির দখল পেয়ে পাঁচ বছর পর আবার দুশ্চিন্তায় ভূমিহীন পরিবারগুলো

মুকসুদপুরে ভূমি কর্মকর্তাকে ‘ঘুষ’ না দিলে বন্দোবস্ত বাতিলের হুমকি

আপডেট টাইম : ০১:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫
বাদশাহ মিয়া, মুকসুদপুর (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি :

বাদশাহ মিয়াঃ

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার জলিরপাড় ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা রিমন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে ঘুষ দাবির অভিযোগ করেছেন পাঁচ ভূমিহীন পরিবার। তাদের দাবি, ঘুষ না দিলে বন্দোবস্ত পাওয়া জমির দলিল বাতিল করে দেওয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছেন তিনি।

 

এ নিয়ে জলিরপাড় এলাকার ভূমিহীনদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর গত ১৩ এপ্রিল লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। তবে অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত কর্মকর্তা রিমন বিশ্বাস।

 

অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার জলিরপাড় এলাকার ৯টি ভূমিহীন পরিবার ২০১৯ সালে বন্দোবস্ত দলিল বুঝে পান। কিন্তু স্থানীয় কিছু ভূমিদস্যুর হামলা-মামলার কারণে দখলে যেতে পারেননি তারা।

 

পরবর্তীতে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ২০২৪ সালের অক্টোবরে জলিরপাড় ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. ইমারত হোসেন মিয়া ও সার্ভেয়ার বাবুল হোসেন জমি পরিমাপ করে বুঝিয়ে দেন এবং লাল পতাকা টাঙিয়ে দেন। তবে এখন আবারও দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ভূমিহীন পরিবারগুলো।

 

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, হঠাৎ করে ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা রিমন বিশ্বাস তাদেরকে জানান, জমির বিষয়ে অভিযোগ এসেছে এবং তিনি বন্দোবস্ত দলিল বাতিলের সুপারিশ করে প্রতিবেদন দেবেন। প্রতিবেদন নিজের পক্ষে নিতে হলে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে ঘুষ দিতে হবে। অন্যথায়, দলিল বাতিল করবেন বলেও হুমকি দেন তিনি।

 

ভুক্তভোগী জামেলা খানম বলেন, “আমরা গরিব মানুষ, সরকার থেকে ভূমি পেয়েছি। পাঁচ বছর পর দখল বুঝে পেয়েছি। এখন আবার রিমন বিশ্বাস আমাদের অফিসে ডেকে বলেন, ‘আপনাদের জমির বিষয়ে অভিযোগ এসেছে, দলিল বাতিলের প্রতিবেদন দেব। প্রতিবেদন পক্ষে নিতে ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে।’ আমরা গরীব মানুষ, এত টাকা কোথায় পাব?”

 

একই অভিযোগ করেছেন সেলিনা বেগম, রিনা বেগম, কহিনুর বেগম ও বাবুল প্রধান।

 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রিমন বিশ্বাস বলেন, “স্থানীয় কিছু লোক সরকারি জমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। ডিসি স্যারের নির্দেশে আমি সরেজমিন তদন্ত করে প্রতিবেদন পাঠিয়েছি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছে।”

 

তিনি আরও বলেন, “অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। প্রমাণ না করতে পারলে আমি তাদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করব।”

 

মুকসুদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাসনিম আক্তার বলেন, “বিষয়টি আপনার (সাংবাদিক) মাধ্যমে জানলাম। খোঁজ নিয়ে পরে বলতে পারব।”


প্রিন্ট