মোঃ আলম মৃধাঃ
নরসিংদীতে ২০২৩ সালের ৩ ডিসেম্বর সদর উপজেলার বানিয়াছলে মাদক ও ডিস ব্যবসা নিয়ে প্রভাব বিস্তারের দ্বন্দ্বে নির্মমভাবে খুন হন আল-আমিন ওরফে চান্দু আল-আমিন। এ ঘটনায় দায়েরকৃত হত্যা মামলায় তিনজন ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেও সুজন ভূঁইয়ার সম্পৃক্ততার কথা কেউ উল্লেখ করেননি।
.
অথচ, নরসিংদী জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুজন ভূঁইয়া দাবি করেছেন-তৎকালীন নরসিংদী সদর আসনের এমপি হিরোর ‘নির্দেশে’ পরিকল্পিতভাবে তাকে এই মামলায় জড়ানো হয়েছে।
.
সুজনের অভিযোগ, এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নরসিংদী সদর থানার তৎকালীন এসআই আব্দুল গাফফার তার কাছে ১০ লক্ষ টাকা ঘুষ দাবি করেন। কিন্তু সুজন ঘুষ দিতে অস্বীকৃতি জানালে ২০২৪ সালের ২০ জুলাই ছাত্র আন্দোলনের সময়ে তাকে টার্গেট করে পুলিশের একটি দল মধ্যরাতে তার বাড়িতে হামলা চালায়। এর একদিন আগেই নরসিংদীতে জেলা কারাগার ছাত্ররা ভেঙে পুড়িয়ে দেয়। জুলাই আন্দোলনের সুজন সক্রিয় ভূমিকাও রেখেছিলেন বলে জানান।
.
স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, সেদিন গভীর রাতে-প্রায় রাত ১২টার পরে- ২০-২৫ জনের একটি পুলিশ বাহিনী সুজনের বাড়িতে ঢুকে বারিন্দার গ্রিল কেটে প্রবেশ করে। ঘরের ফ্রিজ, টেলিভিশন, স্টিলের আলমারিসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র ভাঙচুর করে এবং তার স্ত্রীর সাথেও অশালীন আচরণ করে।
.
এ প্রসঙ্গে সুজনের স্ত্রী বলেন, “আমার স্বামী বাড়িতে না থাকায় পুলিশ ক্ষিপ্ত হয়ে ঘরের সবকিছু ভাঙচুর করেছে। এসআই আব্দুল গাফফারের নেতৃত্বেই পুরো অভিযানটি পরিচালিত হয়।”
.
ঘটনার ব্যাপারে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে, এসআই আব্দুল গাফফার বলেন, “আমি একদিন দিনের বেলা সুজনের স্ত্রীর সাথে কথা বলেছি, তবে রাতের ঘটনাটি আমি জানি না। মোবাইলে ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা চাওয়ার অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।”
.
স্থানীয়রা বলছেন, রাজনৈতিকভাবে একজন ছাত্রনেতাকে নিশ্চিহ্ন করতে এই হামলা ছিল পরিকল্পিত। সুজনকে ঐদিন পুলিশ পেলে মেরে ফেলতো বলেও ধারণা তাদের। অনেকেই বলছেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও ঘুষ দাবির মত ঘটনার বিরুদ্ধে যথাযথ তদন্ত হওয়া উচিত।
.
নরসিংদীর সচেতন নাগরিকমহল প্রশাসনের এই আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত দাবি করেছেন।
প্রিন্ট