হুমায়ন আহমেদঃ
আলমডাঙ্গার ডা. আফসার উদ্দিন কলেজের প্রভাষক রাবেয়া আক্তার ও জান্নাতুল আরা-র বিরুদ্ধে বিএমটি শিক্ষার্থীরা কটুক্তিমূলক বক্তব্য, অসদাচরণ ও অবমূল্যায়নের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ করেছে।
আজ রবিবার বেলা ১১টার দিকে আলমডাঙ্গার গোকুলখালী বাজারে কলেজের বিএমটি (এইচএসসি বিএমটি একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণী) শিক্ষার্থীরা লিখিত ও মৌখিকভাবে জানান, উক্ত দুই প্রভাষক শিক্ষার্থীদের ‘কুলাঙ্গার, টুকাই, ঝড়-জঙ্গল থেকে আসা’ ইত্যাদি ভাষায় অপমান করেছেন। তাদের অভিযোগ, শিক্ষকদ্বয় শিক্ষার্থীদের চরিত্র ও বংশপরিচয় নিয়েও কটুক্তি করেন।
শিক্ষার্থীরা দুই প্রভাষকের পদত্যাগ দাবি করে কলেজ প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ করে এবং তাদের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকে।
এছাড়াও শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, বিজ্ঞান শাখায় কোনো শিক্ষার্থী না থাকা সত্ত্বেও এবং ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ২-৩ জন শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা সরকারি বেতন-ভাতা ভোগ করছেন, যা অনৈতিক ও অনাকাঙ্ক্ষিত।
দুপুর ১২টার দিকে কলেজের প্রিন্সিপাল মাহবুবুল ইসলাম সেলিম শিক্ষার্থীদের শান্ত করতে এবং ক্ষমা চাওয়ার মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করেন। তবে শিক্ষার্থীরা ওই দুই প্রভাষকের পদত্যাগ দাবি করে কলেজের তৃতীয় তলা থেকে মাঠে নেমে আবারো বিক্ষোভ শুরু করে।
অভিযুক্ত প্রভাষক রাবেয়া আক্তার ও জান্নাতুল আরা বলেন, “শিক্ষার্থীদের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। তারা আমাদের সন্তানের মতো। কেন আমরা এমন কথা বলব? বরং আমাদের এক সহকর্মী শিক্ষার্থীদের উসকানি দিচ্ছেন।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজের ৭-৮ জন প্রভাষক জানান, শিক্ষার্থীরা বিষয়টি বাড়িয়ে প্রচার করছে। এটি কিছু শব্দগত ভুল বোঝাবুঝির কারণে ঘটেছে এবং এটি দুঃখজনক।
এদিকে দুপুর ১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক সজিবুল ইসলাম, সদর উপজেলার আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম, এবং সদস্য সচিব ফাহিম উদ্দীন মভিন কলেজে উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের শান্ত করেন এবং শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনার ব্যবস্থা করেন।
উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর, ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যেন পুনরাবৃত্তি না হয়, সে বিষয়ে আশ্বস্ত করে অভিযুক্ত শিক্ষকদের লিখিতভাবে ক্ষমা চাইতে বলা হয়।
তবে শিক্ষার্থীরা পুনরায় কলেজ মাঠে এসে দুই প্রভাষকের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করলে, আন্দোলনকারীরা জানিয়ে দেন—আগামীকাল সোমবার সকাল ১০টার মধ্যে অভিযুক্ত শিক্ষকদ্বয় লিখিতভাবে ক্ষমা না চাইলে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।
ডা. আফসার উদ্দিন কলেজের প্রিন্সিপাল মাহবুবুল ইসলাম সেলিম বলেন, “বিষয়টি যাতে আর না বাড়ে, সে দিকেই আমরা নজর রাখছি। আগামীকাল সকাল ১০টার দিকে সকল শিক্ষক একত্রিত হয়ে আলোচনার মাধ্যমে লিখিতভাবে মীমাংসার চেষ্টা করা হবে।”
প্রিন্ট