ঢাকা , শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ, প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন Logo দিনাজপুর জেলা প্রশাসকের ফুলবাড়ী উপজেলায় মতবিনিময় সভা Logo তানোরে যাতায়াতের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগ Logo মাগুরাতে এসএমসি’র পরিচ্ছন্নতা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত Logo রূপগঞ্জে সাংবাদিকের উপর হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবীতে মানববন্ধন Logo অর্থনৈতিক শুমারি উপলক্ষে স্থায়ী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত Logo প্রত্যন্ত গ্রামে নারী ফুটবল প্রীতি ম্যাচ উপভোগ করলেন হাজারো দর্শক Logo বাঘায় উপজেলা শুমারি স্থায়ী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত Logo কুষ্টিয়ায় দুর্নীতি দমন কমিশনের ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা Logo ফরিদপুরে দুই দিনব্যাপী তথ্য মেলা অনুষ্ঠিত
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন মহম্মদপুরের কামার শিল্পীরা

দরজায় কড়া নাড়ছে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসবের অন্যতম ঈদুল আযহা। আর মাত্র দু’দিন পরেই কুরবানির ঈদ। পশু কুরবানির মাধ্যমে ইসলামের আলোকে পরিপূর্ণ হয় এই ঈদ। ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে পশু জবাইয়ের সরঞ্জাম প্রস্তুতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার কামার শিল্পের কারিগররা। কয়লার দগদগে আগুনে লোহাকে পুড়িয়ে পিটিয়ে তৈরি করছেন সব ধারালো সামগ্রী। তবে এসব তৈরিতে এখনো আধুনিকতার কোন ছোঁয়া লাগেনি।
পুরানো সেকালের নিয়মেই চলছে আগুনে পুড়ে লোহা হতে ধারালো সামগ্রী তৈরির কাজ। মুসলিম ধর্মের অনুসারীরা আল্লাহকে রাজিখুশি করতে পশু জবাই করে থাকেন। এই পশু জবাইয়ের জন্য প্রয়োজন হয় বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জামাদি। মাংস কাটা ও কুরবানির পশু জবাই করার বিভিন্ন ধাপে ছুরি, দা, চাপাতি এসব ব্যবহার করা হয়। তাই পশু কুরবানিকে কেন্দ্র করে কামার শিল্পীরা বিরামহীন কাজ করছেন।
জানা গেছে, উপজেলার শতাধিক পরিবার কামারশিল্পের সঙ্গে জড়িত এবং ৭০ বছরের অধিক সময় ধরে এই শিল্পীরা তাঁদের এই ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন। দগদগে আগুনে গরম লোহা পিটাপিটিতে মুখর হয়ে উঠেছে মহম্মদপুরের কামার পল্লীগুলো। প্রস্তুত করছেন জবাই সামগ্রী। ঈদে শত শত গরু, খাসি, ভেড়া, মহিষ ইত্যাদি পশু কুরবানি করা হয়ে থাকে। এসব পশু জবাই থেকে শুরু করে রান্নার চুড়ান্ত প্রস্তুতি প্রর্যন্তু দা-বঁটি, ছুরি, চাপাতি ইত্যাদি ধাতব হাতিয়ার আবশ্যকীয় হয়ে যায়। ঈদের আগেই পশু জবাই করার ছুরি, চামড়া ছাড়ানোর ছুরি, চাপাতি, চাটাই, গাছের গুঁড়িসহ সবকিছু প্রস্তুত রাখতে হয়।
আজ রবিবার দুপুরে উপজেলা সদরসহ লক্ষিপুর, ভোলানাথপুর, রুইজানি এলাকার বিভিন্নি বাজার এলাকার কামারের দোকান ঘুরে দেখা যায় প্রতিটিা দোকানে ক্রেতাদের ভীড়। এছাড়াও গ্রামের কিছু কিছু বাড়িতে কামার শিল্পীদের অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সবাই এখন কাজে ব্যস্ত। উপজেলা সদর বাজারের অরেবিন্দু ও পরিতোষ কর্মকার জানান, এসব ধারালো সামগ্রীর মধ্যে ওজন ও প্রকারভেদে দাম নির্ধারণ হয়ে থাকে। দা প্রতিটি ৩০০-৬০০ টাকা। ছুরি আকার ভেদে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্তু বিক্রি হয়। উপজেলার গ্রামীন হাটবাজারেও কামার কারিগরদের উৎপাদিত দা-ছুরি বিক্রি করা হয়।
তারা আরো জানান, এ পেশায় অধিক শ্রম দিতে হয়। জীবিকা নির্বাহে কষ্ট হলেও শুধু বাপ-দাদার ঐতিহ্য ধরে রাখতে এ পেশাটিকে তারা এখনও আঁকড়ে ধরে আছেন। বিভিন্ন সময় এসবের চাহিদা কম থাকলেও কুরবানির পশুর জন্য বেশি প্রয়োজন হওয়ায় সকলেই এখন ছুটছেন কামারদের কাছে। আর এতেই এক মাসে পেশাটি জমজমাট হয়ে উঠেছে। তবে বর্তমানে এসব সামগ্রী তৈরির উপকরণ কয়লা ও লোহার দাম বেশি হওয়ায় লাভের পরিমাণ কমে গেছে।
এদিকে ঈদকে সামনে রেখে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মৌসুমী কামারের দেখা মিলছে। তারা গ্রামের বাজারের খোলা জায়গায় বসে দা, ছুরি, চাকু তৈরি, শান ও মেরামত করতে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করলেও ঈদের পরে আর তাদের দেখা মিলে না। সদর বাজারের কর্মকারের দোকানে অপেক্ষামান বাবুল শিকদার জানান, কুরবানির পশু জবেহ করা, মাংস কাটা, ও চামড়া ছিলানোর জন্য ধারাল ছুরির প্রয়োজন। ঘরে থাকা দা, বঁটি, ছুরিতে মরিচা থাকায় শানয়ের জন্য নিয়ে এসেছি। তবে কেউ কেউ আবার নতুন সামগ্রী আগ্রহ দেখিয়েছেন। তবে মহামারি করোনা ভাইরাসের কারনে এবছর বেচাবিক্রি কম বলে জানিয়েছেন বেশীর ভাগ কামার শিল্পীরা।

প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ, প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

error: Content is protected !!

ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন মহম্মদপুরের কামার শিল্পীরা

আপডেট টাইম : ০৬:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ জুলাই ২০২১
শফিকুল ইসলাম জীবন, মহম্মদপুর (মাগুরা) প্রতিনিধিঃ :
দরজায় কড়া নাড়ছে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসবের অন্যতম ঈদুল আযহা। আর মাত্র দু’দিন পরেই কুরবানির ঈদ। পশু কুরবানির মাধ্যমে ইসলামের আলোকে পরিপূর্ণ হয় এই ঈদ। ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে পশু জবাইয়ের সরঞ্জাম প্রস্তুতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার কামার শিল্পের কারিগররা। কয়লার দগদগে আগুনে লোহাকে পুড়িয়ে পিটিয়ে তৈরি করছেন সব ধারালো সামগ্রী। তবে এসব তৈরিতে এখনো আধুনিকতার কোন ছোঁয়া লাগেনি।
পুরানো সেকালের নিয়মেই চলছে আগুনে পুড়ে লোহা হতে ধারালো সামগ্রী তৈরির কাজ। মুসলিম ধর্মের অনুসারীরা আল্লাহকে রাজিখুশি করতে পশু জবাই করে থাকেন। এই পশু জবাইয়ের জন্য প্রয়োজন হয় বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জামাদি। মাংস কাটা ও কুরবানির পশু জবাই করার বিভিন্ন ধাপে ছুরি, দা, চাপাতি এসব ব্যবহার করা হয়। তাই পশু কুরবানিকে কেন্দ্র করে কামার শিল্পীরা বিরামহীন কাজ করছেন।
জানা গেছে, উপজেলার শতাধিক পরিবার কামারশিল্পের সঙ্গে জড়িত এবং ৭০ বছরের অধিক সময় ধরে এই শিল্পীরা তাঁদের এই ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন। দগদগে আগুনে গরম লোহা পিটাপিটিতে মুখর হয়ে উঠেছে মহম্মদপুরের কামার পল্লীগুলো। প্রস্তুত করছেন জবাই সামগ্রী। ঈদে শত শত গরু, খাসি, ভেড়া, মহিষ ইত্যাদি পশু কুরবানি করা হয়ে থাকে। এসব পশু জবাই থেকে শুরু করে রান্নার চুড়ান্ত প্রস্তুতি প্রর্যন্তু দা-বঁটি, ছুরি, চাপাতি ইত্যাদি ধাতব হাতিয়ার আবশ্যকীয় হয়ে যায়। ঈদের আগেই পশু জবাই করার ছুরি, চামড়া ছাড়ানোর ছুরি, চাপাতি, চাটাই, গাছের গুঁড়িসহ সবকিছু প্রস্তুত রাখতে হয়।
আজ রবিবার দুপুরে উপজেলা সদরসহ লক্ষিপুর, ভোলানাথপুর, রুইজানি এলাকার বিভিন্নি বাজার এলাকার কামারের দোকান ঘুরে দেখা যায় প্রতিটিা দোকানে ক্রেতাদের ভীড়। এছাড়াও গ্রামের কিছু কিছু বাড়িতে কামার শিল্পীদের অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সবাই এখন কাজে ব্যস্ত। উপজেলা সদর বাজারের অরেবিন্দু ও পরিতোষ কর্মকার জানান, এসব ধারালো সামগ্রীর মধ্যে ওজন ও প্রকারভেদে দাম নির্ধারণ হয়ে থাকে। দা প্রতিটি ৩০০-৬০০ টাকা। ছুরি আকার ভেদে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্তু বিক্রি হয়। উপজেলার গ্রামীন হাটবাজারেও কামার কারিগরদের উৎপাদিত দা-ছুরি বিক্রি করা হয়।
তারা আরো জানান, এ পেশায় অধিক শ্রম দিতে হয়। জীবিকা নির্বাহে কষ্ট হলেও শুধু বাপ-দাদার ঐতিহ্য ধরে রাখতে এ পেশাটিকে তারা এখনও আঁকড়ে ধরে আছেন। বিভিন্ন সময় এসবের চাহিদা কম থাকলেও কুরবানির পশুর জন্য বেশি প্রয়োজন হওয়ায় সকলেই এখন ছুটছেন কামারদের কাছে। আর এতেই এক মাসে পেশাটি জমজমাট হয়ে উঠেছে। তবে বর্তমানে এসব সামগ্রী তৈরির উপকরণ কয়লা ও লোহার দাম বেশি হওয়ায় লাভের পরিমাণ কমে গেছে।
এদিকে ঈদকে সামনে রেখে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মৌসুমী কামারের দেখা মিলছে। তারা গ্রামের বাজারের খোলা জায়গায় বসে দা, ছুরি, চাকু তৈরি, শান ও মেরামত করতে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করলেও ঈদের পরে আর তাদের দেখা মিলে না। সদর বাজারের কর্মকারের দোকানে অপেক্ষামান বাবুল শিকদার জানান, কুরবানির পশু জবেহ করা, মাংস কাটা, ও চামড়া ছিলানোর জন্য ধারাল ছুরির প্রয়োজন। ঘরে থাকা দা, বঁটি, ছুরিতে মরিচা থাকায় শানয়ের জন্য নিয়ে এসেছি। তবে কেউ কেউ আবার নতুন সামগ্রী আগ্রহ দেখিয়েছেন। তবে মহামারি করোনা ভাইরাসের কারনে এবছর বেচাবিক্রি কম বলে জানিয়েছেন বেশীর ভাগ কামার শিল্পীরা।

প্রিন্ট