আব্দুল হামিদ মিঞাঃ
রাজশাহীর বাঘায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছবিসহ পোস্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে বাঘায় একই দলের দুই জনের মারামারিতে ৯জন আহত হয়েছে।
বুধবার (২৬ মার্চ) রাত ৮ টার দিকে উপজেলার মনিগ্রাম বাজারে এই ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের ৯ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে একজনের শারীরিক অবস্থা অবনতি হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
.
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি কর্মী বকুল হোসেন পক্ষের কর্মী জাহিদ হাসান নামের এক ব্যক্তি তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে দুটি ছবিসহ একটি পোস্ট দিয়ে লিখেছেন ‘গতকাল ২৪ শে রমজান মনিগ্রাম ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আয়নাল হক পিন্টুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের শীর্ষ সন্ত্রাসী গোলাপের বাড়িতে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়। ফেজবুকের পোস্টটি আয়নাল হক পিন্টু ও তার সমর্থকদের নজরে আসে। ওইদিন বিষয়টি নিয়ে মনিগ্রাম বাজারে উভয়ই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কির এক পর্যায়ে ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের ৯ জন আহত হয়েছেন। আহত নেতাকর্মীরা হলেন, উপজেলার মনিগ্রামের সোহাগ আলী (১৮), বকুল হোসেন (৩৮), রনি হোসেন (৩১), আলিফ হোসেন (২০), ফারুক হোসেন (৪০) কুদরত আলী (৪১), সোহেল রানা (৩০) এবং উপজেলার তুলশিপুর গ্রামের জাহিদ হোসেন(৩০) ও মজিবর রহমান (৪১)। এদের মধ্যে সোহাগ আলী (১৮) এর অবস্থার অবনতি হলে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
.
আয়নাল হক পিন্টু বলেন, ‘ এটা অপপ্রচার। আসল ঘটনা হচ্ছে, ‘আমিসহ এলাকার অনেক লোকের কাছে বকুল হোসেন ও তার সমর্থকেরা ঈদ উপলক্ষে চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দেওয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমার বিরুদ্ধে নানা রকম অপপ্রচার করে। তার মধ্য ফেসবুকে লিখেছেন, আমি আওয়ামী লীগের নেতার বাড়িতে ইফতার করে বেড়াচ্ছি। এ বিষয়ে মনিগ্রাম বাজারে জানতে তার কাছে জবাব চাইলে তারা আমার ও আমার লোকজনের ওপর হামলা চালিয়ে অনেককে আহত করে এবং বাজারে রাশিদুলের গুড়ের আড়ত ভাংচুর করে।’
.
এ ব্যাপারে বকুল হোসন বলেন, ওয়ার্ডের সভাপতি আয়নাল হক পিন্টু ইউনিয়নের বিএনপির সভাপতিসহ নেতাদের নিয়ে আওয়ামী লীগের গোলাপের বাড়িতে ইফতারে যাওয়ায় জাহিদ ফেসবুকে লেখালেখি করে। এ জন্য আয়নাল হক মনিগ্রাম বাজারের দক্ষিণ মাথায় যেতে নিষেধ করেন। ওইদিন রাতে জাহিদ বাজারের গেলে আয়নাল হক ও তার লোকজন হামলা করে। এতে উভয়ের মধ্যে মারামারি ঘটনায় অনেকেই আহত হয়েছে। এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ করিনি।
.
আওয়ামী লীগ নেতার পুরো নাম গোলাম মোস্তফা। তার বাড়িতে দাওয়াত খাওয়া নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের মারামারির বিষয়ে তিনি বলেন, তিনি একজন সার ব্যবসায়ী। যখন যে দল ক্ষমতায় আসে তাদের সঙ্গে চলতে হয়। আগে বিএনপির সঙ্গে চলেছেন। আওয়ামী লীগের সময় তাদের সঙ্গেও চলতে হয়েছে। তিনি কোনো নেতা নন। প্রতি বছর তার বাবা-মায়ের দোয়ার একটি অনুষ্ঠান রমজানের শেষের দিকে করে থাকেন। এবার গড় ২৪ মার্চ সেই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন। তিনি বলেন, তার ফুফাত ভাই কালু বিএনপির রাজনীতি করে। সে কয়েকজন বিএনপি নেতাকে দাওয়াত করেছিলেন। তিনি নিজেও কয়েকজনকে করেছেন। এই অনুষ্ঠানে বকুল হোসেন দাওয়াত পাননি। এই ক্ষোভে তিনি ফেসবুকের তাকে আওয়ামী লীগের শীর্ষ সন্ত্রাসী বলে প্রচার করেছেন। এখন কী করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না।
.
বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ ফ ম আছাদুজ্জামান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রিন্ট