আলিফ হোসেনঃ
রাজশাহীর তানোরে ভাল ফলন ও দাম থাকায় গম চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।এতে প্রতি মৌসুমেই গম চাষ বাড়ছে।চলতি বছরে আবহাওয়া অনুকুল থাকায় গম চাষে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। তানোরে অন্য বছর থেকে এ বছর অনেক বেশী পরিমাণ জমিতে গম চাষ করা হয়েছে। গমের সবুজ পাতার সমারোহ মাঠ জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে।
গম চাষিরা আসা করছেন, এবার প্রতি বিঘা জমিতে ১০ থেকে ১২ মন করে গমের ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। একই সঙ্গে বাজারে দামও তুলনামূলক অনেক ভাল রয়েছে। যারা এবার গম চাষ করেছেন তারা ভালো দাম পাবেন বলে আশা করছেন।জানা গেছে, অনেক কৃষক আমন ধান কাটার পর পরই আলু বা সরিষা রোপণ না করে গম চাষ করেছেন।
উপজেলার কলমা ইউনিয়ন (ইউপি), বাধাইড় ও পাঁচন্দর ইউনিয়নের (ইউপি) বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, গম চাষের সমারোহ। মাঠ জুড়ে গমের সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে শোভা পাচ্ছে শীষ। অল্প কিছুদিনের মধ্যে গমের শীষ পাকা শুরু হবে। অল্প খরচে গম চাষে ভালো লাভবান হওয়া যায়।
জানা গেছে, বরেন্দ্র অঞ্চলের শস্য ভান্ডার হিসেবে পরিচিত তানোরে কালের বিবর্তনে একটা সময় প্রায় হারিয়ে গিয়েছিল। তবে বাজারে ভাল দাম থাকায় ধীরে ধীরে গম চাষের সুদিন ফিরে আসছে।
উপজেলার বাধাইড় ইউনিয়নের (ইউপি) হাঁপানিয়া মাঠে কয়েকজন গম চাষির সঙ্গে কথা বলা হলে তারা বলেন, গম চাষ করে গত বছর তারা ভালো দামের পাশাপাশি ভালো ফলন পেয়েছেন। এক বিঘা জমিতে ১০ থেকে ১২ মণ করে গম পাওয়া গেছে। তারা আশা করছেন, এবছরও গমের ভালো ফলনের পাশাপাশি ভালো দাম পাওয়া যাবে।কলমা ইউনিয়নের (ইউপি) চৌরখৈর গ্রামের গম চাষি সোহাগ আলী, রিপন ও মিজানুর রহমান জানান, তারা এবছর আলু চাষ না করে সেই জমিতে গম চাষ করেছেন। গমের গাছও খুব ভালো হয়েছে।
প্রতি বিঘা জমিতে গম চাষে খরচ হয়েছে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। তবে সার বিষের দাম বেশি না হলে গম চাষে আরো খরচ কম হবে। এবার গম চাষে তেমন রোগবালাই নাই। কিন্তু বেড়েছে ইঁদুরের হানা। কিছুতেই রোধ করা যাচ্ছে না ইঁদুরকে। গমের গাছ কেটে সাবাড় করে দিচ্ছে ইঁদুর। তারা বলেন, কৃষি দপ্তর থেকেও তারা তেমন কোন ফলপ্রসূ পরামর্শ পাচ্ছেন না। যার জন্য গমের শীষ বের হতে না হতেই ইঁদুরের উপদ্রুব্রে অতিষ্ঠ হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন গম চাষিরা। শংকরপুর এলাকার গম চাষি শরিফুল ইসলাম বলেন,বোরো চাষে সেচ সংকট দেখা যায়। যে কারণে তারা গম ও সরিষা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
এদিকে উপজেলায় গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা কত, কত হেক্টর জমিতে গম চাষ করা হয়েছে, এবং গম চাষিদের পরামর্শ দিতে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পরিদর্শনে যান কি-না, মাঠে গমের কি অবস্থা ইত্যাদি বিষয়ে জানতে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি কল গ্রহণ না করায় কৃষি দপ্তরের কারো কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
প্রিন্ট