ঢাকা , রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo কুষ্টিয়ায় শ্রমিক অধিকার, নিরাপত্তা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক মতবিনিময় Logo কুষ্টিয়ায় হত্যাসহ দেশব্যাপী চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল Logo ডিভোর্সী নারীকে বিয়ে নিয়ে দ্বন্দ্বঃ যশোরে ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত Logo পাংশায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে অবৈধ অস্ত্র-গুলিসহ চিহ্নিত সন্ত্রাসী বাবুল সরদার গ্রেফতার Logo শালিখায় বি.এন.পি’র মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত  Logo মহম্মদপুরে শিক্ষক প্রতিনিধি সমাবেশ অনুষ্ঠিত Logo বাগাতিপাড়ায় জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের ছাত্রশিবিরের সংবর্ধনা Logo UK parliamentarians engage in dialogue for a truth and reconciliation for Bangladesh’s future Logo শান্তিতে নোবেলজয়ীর ব্যর্থতায় দেশে সহিংসতা বাড়ছেঃ -মোমিন মেহেদী Logo এসএসসি ফলাফলে খুশি নয় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

মাগুরার মহম্মদপুরে চলছে অবৈধ মাটি কাটার হিড়িক

রনি আহমেদ রাজুঃ

 

মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার বাবুখালি ইউনিয়নের মাধবপুর ও চালিমিয়া গ্রামে এবং দীঘা ইউনিয়নের আউনাড়া গ্রামে, ফসলি জমি থেকে অবৈধভাবে মাটি কেটে তা বিক্রি করা হচ্ছে ইটভাটা ও ভরাট কাজে। স্থানীয় প্রভাবশালী আউনাড়া গ্রামের গোপাল ও বেথুলিয়া গ্রামের মিলন এসব মাটি ইটভাটায় সরবরাহ করছেন। অনুমোদন ছাড়াই ট্রাক্টর ও ইঞ্জিনচালিত লাটা গাড়ির মাধ্যমে মাটি পরিবহন চলছে, যা স্থানীয় পরিবেশ ও জনজীবনে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

 

সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অবৈধ মাটি কাটার ফলে রাস্তা-ঘাট নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, চারপাশ ধুলাবালিতে ছেয়ে যাচ্ছে, এবং এতে ঘরবাড়ি, আসবাবপত্র ও খাবারও দূষিত হচ্ছে। এলাকার একাধিক বাসিন্দা বলেন, “আমাদের ঘরে থাকা দুষ্কর হয়ে গেছে। খাবার খেতে গেলে মনে হয় ধুলা-বালি খাচ্ছি। এমনকি পানির পাত্রেও ধুলাবালি জমে থাকে।”

 

এছাড়া মাটি পরিবহনের ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে শিশু ও বয়োবৃদ্ধদের শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে। পাশাপাশি স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থীদের জন্য রাস্তা পার হওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে, ছোট শিশুদের নিয়ে রাস্তায় আসা দুষ্কর হয়ে পড়েছে এবং যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

 

মাটি ব্যবসায়ী বেথুলিয়া গ্রামের মিলন ও চালিমিয়া গ্রামের আলাউদ্দিনের মতে, “আমাদের মাটি কাটতে কোনো অনুমতি লাগে না। আমরা নিজেদের জায়গা থেকে মাটি কাটছি, এতে অনুমতির প্রয়োজন কেন?”

 

তবে এ বিষয়ে মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শাহিনুর আক্তারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি বা পরে কলব্যাকও করেননি।

 

মহম্মদপুরের উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বাসুদেব কুমার মালো জানান, “আমি মাটি কাটার কোনো অনুমতি দিইনি। তবে আমাদের উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ বিষয়ে কোনো অনুমতি দিয়েছেন কিনা, তা আমার জানা নেই। এখন বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

 

স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বাসুদেব কুমার মালো যখন ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দায়িত্বে ছিলেন, তখনও তিনি মাটি কাটার বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেননি। গণমাধ্যম কর্মীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলে মাটি কাটা বন্ধ থাকে, কিন্তু পরবর্তীতে আবারও তা শুরু হয়।

 

এলাকাবাসী জেলা প্রশাসনের কাছে দ্রুত কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন, যাতে অবৈধ মাটি কাটাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয় এবং এলাকার পরিবেশ ও জনজীবন রক্ষা পায়।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

কুষ্টিয়ায় শ্রমিক অধিকার, নিরাপত্তা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক মতবিনিময়

error: Content is protected !!

মাগুরার মহম্মদপুরে চলছে অবৈধ মাটি কাটার হিড়িক

আপডেট টাইম : ০৮:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
রনি আহমেদ রাজু, মাগুরা জেলা প্রতিনিধি :

রনি আহমেদ রাজুঃ

 

মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার বাবুখালি ইউনিয়নের মাধবপুর ও চালিমিয়া গ্রামে এবং দীঘা ইউনিয়নের আউনাড়া গ্রামে, ফসলি জমি থেকে অবৈধভাবে মাটি কেটে তা বিক্রি করা হচ্ছে ইটভাটা ও ভরাট কাজে। স্থানীয় প্রভাবশালী আউনাড়া গ্রামের গোপাল ও বেথুলিয়া গ্রামের মিলন এসব মাটি ইটভাটায় সরবরাহ করছেন। অনুমোদন ছাড়াই ট্রাক্টর ও ইঞ্জিনচালিত লাটা গাড়ির মাধ্যমে মাটি পরিবহন চলছে, যা স্থানীয় পরিবেশ ও জনজীবনে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

 

সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অবৈধ মাটি কাটার ফলে রাস্তা-ঘাট নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, চারপাশ ধুলাবালিতে ছেয়ে যাচ্ছে, এবং এতে ঘরবাড়ি, আসবাবপত্র ও খাবারও দূষিত হচ্ছে। এলাকার একাধিক বাসিন্দা বলেন, “আমাদের ঘরে থাকা দুষ্কর হয়ে গেছে। খাবার খেতে গেলে মনে হয় ধুলা-বালি খাচ্ছি। এমনকি পানির পাত্রেও ধুলাবালি জমে থাকে।”

 

এছাড়া মাটি পরিবহনের ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে শিশু ও বয়োবৃদ্ধদের শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে। পাশাপাশি স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থীদের জন্য রাস্তা পার হওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে, ছোট শিশুদের নিয়ে রাস্তায় আসা দুষ্কর হয়ে পড়েছে এবং যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

 

মাটি ব্যবসায়ী বেথুলিয়া গ্রামের মিলন ও চালিমিয়া গ্রামের আলাউদ্দিনের মতে, “আমাদের মাটি কাটতে কোনো অনুমতি লাগে না। আমরা নিজেদের জায়গা থেকে মাটি কাটছি, এতে অনুমতির প্রয়োজন কেন?”

 

তবে এ বিষয়ে মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শাহিনুর আক্তারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি বা পরে কলব্যাকও করেননি।

 

মহম্মদপুরের উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বাসুদেব কুমার মালো জানান, “আমি মাটি কাটার কোনো অনুমতি দিইনি। তবে আমাদের উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ বিষয়ে কোনো অনুমতি দিয়েছেন কিনা, তা আমার জানা নেই। এখন বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

 

স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বাসুদেব কুমার মালো যখন ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দায়িত্বে ছিলেন, তখনও তিনি মাটি কাটার বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেননি। গণমাধ্যম কর্মীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলে মাটি কাটা বন্ধ থাকে, কিন্তু পরবর্তীতে আবারও তা শুরু হয়।

 

এলাকাবাসী জেলা প্রশাসনের কাছে দ্রুত কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন, যাতে অবৈধ মাটি কাটাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয় এবং এলাকার পরিবেশ ও জনজীবন রক্ষা পায়।


প্রিন্ট