-শামীম আহমেদ
শীতের বিদায় আর বসন্তের আগমনের সন্ধিক্ষণ। ফাল্গুনের শেষ বিকেল। হালকা মেঘের ছোঁয়া লেগেছে আকাশের গায়ে, রোদের তেজ বেড়েছে এসেছে অনেকটাই। শিমুল আর পলাশের লাল-কমলা ছড়িয়ে পড়েছে চারদিকে, যেন আগুনের ফুলকি!
শ্রেয়া কলেজ থেকে ফিরছে। তার মনের ভেতর আজ এক অদ্ভুত অনুভূতি খেলা করছে। প্রতিদিনের মতোই পথচলা, কিন্তু আজ বাতাসে যেন একটা অন্যরকম সুবাস! মনে হচ্ছে, এই বিকেলে কিছু একটা হবে—অজানা, অদেখা কিছু…।
রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে ছিল মেঘরাজ। অনেকদিন পর দেখা। একসময় তারা একে অপরের কত কাছের ছিল! অথচ সময়ের সাথে সাথে দুরত্ব বেড়েছে। ভুল বোঝাবুঝি, ব্যস্ততা—সবকিছুই যেন তাদের আলাদা করে দিয়েছে। কিন্তু আজ এই ফাল্গুনের শেষ বিকেলে আবার মুখোমুখি!
মেঘরাজ এগিয়ে এলো, একটু দ্বিধা নিয়ে বলল, “কেমন আছো?”
শ্রেয়া একটু হেসে বলল, “ভালো। তুমিও?”
কথাগুলো খুব সাধারণ, কিন্তু তার ভেতরে ছিল আবেগের এক অদৃশ্য টান। কিছুক্ষণের জন্য দুজনেই চুপ। বাতাসে উড়ে যাচ্ছে শিমুলের তুলোর মতো জমে থাকা পুরোনো স্মৃতিগুলো।
মেঘরাজ আস্তে করে বলল, “আমাদের কি নতুন করে শুরু করা যায় না?”
শ্রেয়ার চোখে এক মুহূর্তের জন্য দোদুল্যমানতা। সে জানে, সময় সবকিছু বদলে দেয়, কিন্তু কিছু অনুভূতি কি সত্যিই হারিয়ে যায়?
বিকেলের শেষ আলোয় মুখ তুলে তাকাল শ্রেয়া। চারপাশে বসন্তের রঙ ছড়িয়ে আছে, তার মনে হলো—ফুল ঝরলেও বসন্ত আবার আসে। সে একটু হেসে বলল, “হয়তো পারি!”
ফাল্গুনের শেষ বিকেলে বাতাসে এক নতুন গানের সুর বয়ে গেল…।
লেখকঃ শামীম আহমেদ
-কবি, লেখক ও সাহিত্যিক।
প্রিন্ট