কাজী নূর, যশোর জেলা প্রতিনিধি
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেছেন, ‘একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য গত ১৭ বছর অপেক্ষা করেছি আমরা। সেই রাষ্ট্র এখনও আমরা পাইনি। এই সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা, দ্রুততম সময়ের মধ্যে সংস্কার কাজ শেষ করে তারা নির্বাচন দেবে। নির্বাচন নিয়ে ছিনিমিনি খেলবার কোন সুযোগ নেই। জনগণের বাংলাদেশ জনগণের হাতে তুলে দেয়ার জন্য সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে যশোর- চৌগাছা সড়কের পাশে বাগডাঙ্গা মাঠে যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ইউনিয়ন কৃষক দল আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।
অনিন্দ্য ইসলাম অমিত আরো বলেন, ‘গত ১৭ বছরে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা যশোরে মাদক ও সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে, তাদের আর এই জনপদে কোনো জায়গা হবে না। তিনি আরও বলেন, বিএনপির কেউ যদি আড়ালে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, গুন্ডাপান্ডা, দোসরদের আশ্রয় প্রশয় দেয়, তবে তার জায়গা বিএনপিতে আর থাকবে না।’
আগামীতে বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে কৃষি ও কৃষকের জন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত নানা পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘দেশে একমাত্র বিএনপি কৃষকদের নিয়ে ভাবে। বিএনপি ক্ষমতায় এলে জাতীয় বাজেটের ৮ শতাংশ কৃষিখাতে বরাদ্দ দেওয়া হবে। এটা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানে পরিকল্পনা। কৃষকদের তাদের উৎপাদিত পণ্য ন্যায্য দামের অভাবে ফেলে দেওয়া লাগবে না। বিএনপি ক্ষমতায় এলে কৃষকের উন্নয়নে নানা পরিকল্পনা নেওয়া হবে, যাতে সারা বছরই কৃষকদের মুখে হাসি থাকে।’
অনিন্দ্য ইসলাম অমিত আরো বলেন, ‘যশোর মেডিকেল কলেজ তরিকুল ইসলাম বেগম খালেদা জিয়ার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তবে দুঃখের বিষয়, গত ১৭ বছরে আওয়ামী লীগ এই মেডিকেল কলেজে একটি হাসপাতাল তৈরি করতে পারেনি। ঠিক একইভাবে, আপনাদের নেতা তরিকুল ইসলাম যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে করোনারি কেয়ার ইউনিট চালু করেছিলেন, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত যারা আপনাদের ভোটে নির্বাচিত হননি, তারা এই ইউনিটের পূর্ণাঙ্গ রূপ দান করেননি। তাই আগামীতে, যদি তারেক রহমান রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পান, তবে যশোর মেডিকেল কলেজে একটি হাসপাতাল তৈরি করা হবে এবং করোনারি কেয়ার ইউনিটকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দেওয়া হবে।’
চুড়ামনকাটি ইউনিয়ন কৃষক দলের সভাপতি অধ্যাপক আবু সাঈদের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে যশোর জেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, জেলা কৃষকদলের আহবায়ক উপাধ্যক্ষ মকবুল হোসেন, জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য, যশোর চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মিজানুর রহমান খান, গোলাম রেজা দুলু, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আনসারুল হক রানা, জেলা কৃষকদলের যুগ্ম আহবায়ক হাবিবুর রহমান কচি, জেলা সেচ্চাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা আমীর ফয়সাল, থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আঞ্জুরুল হক খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, আশরাফুজ্জামান মিঠু, থানা বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান শাহিন, আলাউদ্দিন আলা, ইদ্রিস আলী, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাপ্পি, চুড়ামনকাটি ইউনিয়ন বিএনপির সহ- সভাপতি আবু তালেব, থানা মহিলা দলের সিনিয়র সহ- সভাপতি সেলিনা পারভিন শেলী, থানা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক তানভির রায়হান তুহিন, থানা সেচ্চাসেবক দলের আহবায়ক শফিউল্লাহ, যুগ্ম আহবায়ক বুলবুল চৌধুরী, চুড়ামনকাটি ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মাসুদুর রহমান, কৃষক মহাসিন আলী, নজরুল ইসলাম, রাজিব দাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশকে ঘিরে ঢল নামে হাজারও কৃষক- কৃষাণী জনতার। কেউ গ্রামের মেঠো পথ দিয়ে সুসজ্জিত গরুর গাড়ি চড়ে, কেউবা জমির আইল বেয়ে লাঙল, জোয়াল, মাথাল, কাঁচি নিয়ে যোগ দেন সমাবেশে।
প্রিন্ট