ঢাকা , শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo প্রশ্ন সারজিসের; কুকুর কীভাবে সচিবালয়ে ঢুকল ! Logo গোপালগঞ্জে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের মানববন্ধন Logo নাটোরে আন্তঃ ক্যাডার বৈষম্য নিদর্শন এর দাবিতে মানববন্ধন Logo বাঘার পদ্মায় ধরা পড়ছে বাঘাইড়, কপাল খুলছে জেলেদের Logo বালিয়াকান্দিতে স্পোর্টস একাডেমির উদ্যগে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট এর উদ্বোধন Logo আন্ত:ক্যাডার বৈষম্য নিরসনের জন্য কালুখালীতে মানব বন্ধন কর্মসূচি পালন Logo কালুখালীর ৮৪ কৃষান কিষানী পেল পুষ্টি বাগানের উপকরণ Logo বাঘায় রোটারি ক্লাব অফ মেট্রোপলিটনের শীত বস্ত্র বিতরণ Logo ছাত্রদল নেতার নেতৃত্বে ৯ কৃষকের জমি দখলের চেষ্টা! Logo দৌলতদিয়া যৌনপল্লীর বয়স্ক নারীদের শীতবস্ত্র ও শিশুদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাবে ছটফট করছে রোগীরা

কুষ্টিয়ায় বেড়েই চলেছে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু। ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালকে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার কারণে হাসপাতালটির মেঝেও এখন করোনা আক্রান্ত রোগীতে পূর্ণ।

সোমবার (৫ জুলাই) সকাল ৯ টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত ঘুরে দেখা যায় হাসপাতালে প্রচণ্ড রোগীর চাপ। কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা করোনা ওয়ার্ডটি পরিচালনা করছেন। রোগীর যখন যা প্রয়োজন তা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এনে দিচ্ছেন। তবে রোগীর স্বজনদের অভিযোগ পর্যাপ্ত সেবা দেওয়া হচ্ছে না। অক্সিজেনের অভাবে ভূগছেন রোগীরা।

রোগীর স্বজনদের দাবী, করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসা পর্যাপ্ত নেই। অক্সিজেনের অভাবে রোগীরা ছটফট করছে সব সময়। ডাক্তাররাও ঠিকমতো রোগীদের দেখছেন না। শুধুমাত্র ছাত্রলীগের ছেলেদের হাতে হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডের দায়িত্ব দিয়ে ডাক্তাররা রোগী দেখছেন না।

খোকসা উপজেলার নাসিরুল হক করোনা আক্রান্ত হয়ে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গত কয়েকদিন আগে তিনি কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। তার অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। তিনি হাসপাতালের বারান্দায় প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট নিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। প্রতিনিয়ত দেওয়া হচ্ছে অক্সিজেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন প্রায় প্রতিটি রোগির জন্যই প্রয়োজন হচ্ছে অক্সিজেন সিলিন্ডারের।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তথ্য মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ১৪ জন মারা গেছেন। সেই সঙ্গে করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন আরো ৪ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট ২৬২ জন করোনায় মারা গেছেন।

হাসপাতালের পিসি আর ল্যাব সূত্রে জানা যায়, জেলায় ২৪ ঘন্টায় ২৯২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন কুষ্টিয়া সদরের ১৫৩ জন, মিরপুরের ২৯ জন, ভেড়ামারার ৩৪ জন, দৌলতপুরের ৪৪ জন, কুমারখালীর ২৪ জন এবং খোকসা উপজেলায় ৮ জন।

হাসপাতালের সিনিয়র নার্স ফিরোজা খাতুন বলেন, এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি কোনোদিন দেখিনি। প্রায় প্রতিটি রোগীর অক্সিজেন প্রয়োজন। আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি।

হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. তাপস কুমার সরকার জানান, করোনা রোগীর চাপ দিন দিন বেড়েই চলেছে। প্রতিঘণ্টায় অন্তত ৩০-৪০ জন করে করোনা রোগী ভর্তি হচ্ছে। বর্তমানে হাসপাতালে ২৫৯ জন করোনা রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

প্রতিদিন গড়ে ৫শ সিলিন্ডার অক্সিজেন প্রয়োজন।  আমাদের কাছে ৫৪৭টি সিলিন্ডার রয়েছে। এছাড়া একটি ছয় হাজার লিটারের সেন্টার সিলিন্ডার রয়েছে যা দিয়ে ১০জন রোগিকে ২৪ ঘণ্টা অক্সিজেন সাপোর্ট দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, এভাবে করোনা রোগির সংখ্যা বাড়তে থাকলে খুবই ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে। আমরা চিকিৎসক, নার্স সার্বক্ষনিক রোগীদের সবোর্চ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর স্বজনদের অভিযোগের ব্যপারে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক ডা. আব্দুল মোমেনকে একাধিকবার মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বার বার মিটিং এ আছেন বলে জানান।

কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম জানান, সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণে রোগীর মৃত্যুর হার বাড়ছে। আক্রান্তদের মধ্যে শতকরা ২ জন মারা যাচ্ছেন।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রশ্ন সারজিসের; কুকুর কীভাবে সচিবালয়ে ঢুকল !

error: Content is protected !!

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাবে ছটফট করছে রোগীরা

আপডেট টাইম : ০৬:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ জুলাই ২০২১
ইসমাইল হোসেন বাবু, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধিঃ :

কুষ্টিয়ায় বেড়েই চলেছে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু। ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালকে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার কারণে হাসপাতালটির মেঝেও এখন করোনা আক্রান্ত রোগীতে পূর্ণ।

সোমবার (৫ জুলাই) সকাল ৯ টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত ঘুরে দেখা যায় হাসপাতালে প্রচণ্ড রোগীর চাপ। কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা করোনা ওয়ার্ডটি পরিচালনা করছেন। রোগীর যখন যা প্রয়োজন তা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এনে দিচ্ছেন। তবে রোগীর স্বজনদের অভিযোগ পর্যাপ্ত সেবা দেওয়া হচ্ছে না। অক্সিজেনের অভাবে ভূগছেন রোগীরা।

রোগীর স্বজনদের দাবী, করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসা পর্যাপ্ত নেই। অক্সিজেনের অভাবে রোগীরা ছটফট করছে সব সময়। ডাক্তাররাও ঠিকমতো রোগীদের দেখছেন না। শুধুমাত্র ছাত্রলীগের ছেলেদের হাতে হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডের দায়িত্ব দিয়ে ডাক্তাররা রোগী দেখছেন না।

খোকসা উপজেলার নাসিরুল হক করোনা আক্রান্ত হয়ে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গত কয়েকদিন আগে তিনি কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। তার অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। তিনি হাসপাতালের বারান্দায় প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট নিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। প্রতিনিয়ত দেওয়া হচ্ছে অক্সিজেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন প্রায় প্রতিটি রোগির জন্যই প্রয়োজন হচ্ছে অক্সিজেন সিলিন্ডারের।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তথ্য মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ১৪ জন মারা গেছেন। সেই সঙ্গে করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন আরো ৪ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট ২৬২ জন করোনায় মারা গেছেন।

হাসপাতালের পিসি আর ল্যাব সূত্রে জানা যায়, জেলায় ২৪ ঘন্টায় ২৯২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন কুষ্টিয়া সদরের ১৫৩ জন, মিরপুরের ২৯ জন, ভেড়ামারার ৩৪ জন, দৌলতপুরের ৪৪ জন, কুমারখালীর ২৪ জন এবং খোকসা উপজেলায় ৮ জন।

হাসপাতালের সিনিয়র নার্স ফিরোজা খাতুন বলেন, এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি কোনোদিন দেখিনি। প্রায় প্রতিটি রোগীর অক্সিজেন প্রয়োজন। আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি।

হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. তাপস কুমার সরকার জানান, করোনা রোগীর চাপ দিন দিন বেড়েই চলেছে। প্রতিঘণ্টায় অন্তত ৩০-৪০ জন করে করোনা রোগী ভর্তি হচ্ছে। বর্তমানে হাসপাতালে ২৫৯ জন করোনা রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

প্রতিদিন গড়ে ৫শ সিলিন্ডার অক্সিজেন প্রয়োজন।  আমাদের কাছে ৫৪৭টি সিলিন্ডার রয়েছে। এছাড়া একটি ছয় হাজার লিটারের সেন্টার সিলিন্ডার রয়েছে যা দিয়ে ১০জন রোগিকে ২৪ ঘণ্টা অক্সিজেন সাপোর্ট দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, এভাবে করোনা রোগির সংখ্যা বাড়তে থাকলে খুবই ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে। আমরা চিকিৎসক, নার্স সার্বক্ষনিক রোগীদের সবোর্চ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর স্বজনদের অভিযোগের ব্যপারে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক ডা. আব্দুল মোমেনকে একাধিকবার মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বার বার মিটিং এ আছেন বলে জানান।

কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম জানান, সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণে রোগীর মৃত্যুর হার বাড়ছে। আক্রান্তদের মধ্যে শতকরা ২ জন মারা যাচ্ছেন।


প্রিন্ট