ইসমাইল হোসেন বাবু, স্টাফ রিপোর্টার
বাংলা সাহিত্যকে বিশ্বব্যাপী যিনি তুলে ধরেছিলেন আজ পয়লা জানুয়ারি সেই পল্লীকবির জন্মদিন। পল্লীকবি জসীমউদ্দীন বাংলা সাহিত্যের এক অনন্য নাম। তাঁর লেখনীর মধ্যে ফুটে উঠেছে গ্রামবাংলার জীবনজীবিকা, শ্রমজীবী, পেশাজীবীসহ সমাজের নানা স্তরের মানুষের কথা। তাঁর কবিতায় দোল খায় প্রকৃতি, নদী, মাঠ, বেদে পল্লীসহ অনুপম সব কাব্যগাথা। আধুনিক শিল্পচেতনার ছাপ রয়েছে নকশীকাঁথার মাঠ, সোজন বাদিয়ার ঘাটসহ কবির প্রতিটি রচনায়।
পল্লী কবি জসীমউদ্দীন ১৯০৩ সালের পয়লা জানুয়ারি ফরিদপুরের সদর উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়নের তাম্বুলখানার নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৬ সালের ১৩ মার্চ ঢাকায় মারা যান তিনি।
কবির লেখনীতে বাংলা সাহিত্যের ভান্ডার সমৃদ্ধ হয়েছে সেই কবির বাড়িটি এখনো পড়ে রয়েছে অযত্ন আর অবহেলায়। বাড়িটিকে ঘিরে বিভিন্ন সময় নানা উদ্যোগের কথা শোনা গেলেও তা বাস্তবে রূপ নেয়নি কখনো। দিনের পর দিন অযত্ন আর অবহেলায় পড়ে আছে কবির ব্যবহৃত জিনিসপত্র। বাড়িতে দর্শনার্থীদের জন্য নেই কোনো টয়লেট বা বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা। নেই বিশ্রামাগার। কবির লেখা বই পাওয়া যায় না তাঁর বাড়িতে। বাড়ির পাশে জসীম স্মৃতি জাদুঘর করা হলেও সেটি প্রচারের অভাবে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে।
অভিযোগ রয়েছে, সন্ধ্যা নামলেই মাদকসেবীরা জাদুঘরের অভ্যন্তরে বসে অসামাজিক কার্যকলাপ করে থাকে, যা দেখার কেউ নেই। বিগত বছরগুলোতে কবির জন্মবার্ষিকী ঘিরে মাসব্যাপী ‘জসীম পল্লীমেলা’ অনুষ্ঠিত হয়ে এলেও কয়েক বছর ধরে তা বন্ধ থাকার পর গত বছর পুনরায় শুরু হয় মেলা। কিন্তু এ বছর মেলা হবে কি না জানেন না কেউই। স্থানীয় সাংবাদিক পান্না বালা বলেন, জন্ম আর মৃত্যুবার্ষিকীতেই কেবল কবিকে স্মরণ করা হয়। এটি ঠিক নয়। কবির প্রতি আমাদের সবার দরদ থাকতে হবে।
কবি পরিবারের স্বজন হারুন অর রশিদ বলেন, কবির বাড়িটি নিয়ে বিভিন্ন সময় সরকারের তরফ থেকে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও বাস্তবে কিছুই হয়নি। পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করার মধ্য দিয়ে পল্লী কবির বাড়িটিকে দর্শনীয় স্থান বানানো গেলে ভক্তরা এখানে এসে পরিতৃপ্ত হবেন।
প্রিন্ট