রবিউল ইসলাম রুবেল, স্টাফ রিপোর্টার
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় পূর্ব শত্রুতার জেরে জালাল মাতবরের চাচতো ভাই গোলাম রসুলের বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করার অভিযোগ উঠেছে জামসেদ, সোহেল ও উজ্জল শেখের লোকজনের বিরুদ্ধে।
বুধবার ৪ ডিসেম্বর উপজেলার পাঁচুরিয়া ইউনিয়নের যোগীবরাট গ্রামে গোলাম রসুলের বাড়ি ঘর ও ইজিবাইক ভাঙচুর করে টাকা, স্বর্ণালংকার ও আসবাবপত্রসহ একটি নতুন বাইসাইকেল লুট করে নিয়ে গিয়েছে দূর্বৃত্তরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৩ বছর আগে যোগীবরাট গ্রামের মো. জালাল মাতবরের ভাতিজা শহিদের ছেলে কলেজ ছাত্র মো. শরিফুল ইসলামকে একই গ্রামের ২ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. জামসেদ গ্রুপের লোকজন যোগীবরাট মাদ্রাসা মোড় থেকে হামলা চালিয়ে গুরুত্বর আহত করে। পরে চিকিৎসারত অবস্থায় কলেজ ছাত্র শরিফুল ইসলাম মারা যায়। এ নিয়ে মো. জালাল মাতবর বাদী হয়ে ২৬ জনকে আসামী করে আলফাডাঙ্গা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। সেই মামলা তুলে নিতে জামসেদ মাতবরের লোকজন জালাল মাতবের লোকজনকে চাপ প্রয়োগ করে।
মামলা তুলে না নেয়ায় চলতি বছরের আগস্ট মাসে জালাল মাতবরের চাচাতে ভাই এনামুলের বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। সে বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় আরেকটি মামলা দায়ের করেন এনামুলের মা মিলি বেগম। সেই মামলা তুলে নিতে জামসেদ শেখ(৫৫), আবু সাইদ মেম্বরের ছেলে সোহেল শেখ, ও মুনসুর শেখের ছেলে উজ্জল শেখ চাপ প্রয়োগ করেন। বাড়ি ভাঙচুরের মামলা তুলে না নেয়ার কারণে জালাল মাতবরের আরেক চাচতো ভাই গোলাম রসুলের বাড়ি ঘর ভাঙচুর লুটপাট করে ৪ ডিসেম্বর সকালে। এ হামলায় তাদের ঘরের বেড়া কুপিয়ে ভাঙচুরে করে ঘরে ঢুকে সকল আসবাবপত্র তছনছ করে টাকা, স্বর্ণালংকার, ধান, ও বাইসাইকেল নিয়ে যায়। সেই সাথে গোলাম রসুলের ইজিবাইক ভাঙচুর করে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেছে।
গোলাম রসুল বলেন, আমি আগে ঢাকায় চাকরী করতাম। আমার সাথে কারো শত্রুতা ছিলনা। আর আমি কোন মারামারিতে জরিত না। তারপরেও আমাকে জামসেদের লোকজন এনামুলের বাড়ি ঘর ভাঙচুর ও হত্যা মামলা তুলে নিতে আমাকে হুমকি দেয়। আমি তাদের বলেছিলাম আমি এ বিষয়ে কিছু জানিনা। আপনারা তাদের সাথে গিয়ে মিটমাট করেন। এ কথা বলার পরে আবু সাইদের ছেলে সোহেল বলে জানবি যখন তোকে ধরবো তখন ঠিকই জানবি। তার দুই দিন পরে আমার বাড়িতে হামলা চালানো হয়। এর তিব্র নিন্দা জানাই। সেই সাথে এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
মো. জালাল মাতবর বলেন, আমার ভাতিজাকে জামসেদ, সোহেল, ও উজ্জলের লোকজন মারপিট ও চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কোপ দিয়ে হত্যা করে। পরে মামলা তুলে নিতে ওই দূর্বৃত্তরা আমাদের লোকজনের বাড়তে একাধিক বার হামলা চালিয়ে লাখ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করেছে। আমরা এী বিচার চাই।
মো. জামসেদ শেখ বলেন, মাছ চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে, আমার ও জালাল মাতবরের লোকজনের তর্কতর্কি হয়। তার পরে শাহিদের ছেলে শরিফুল আমাদের লোকজনের উপর হামলা চালাতে গিয়ে আঘাত লেগে চিকিৎসারত অবস্থয় মারা যায়। এর পরে তারা আমাদের নামে হত্যা মামলা দিয়ে বাড়ি ঘর ছড়া করে। পুরুষ শূন্য হওয়ায় ওই জালাল গ্রুপের লোকজন আমাদের বাড়িঘ ভাঙচুর ও লুটপাট করে মালামাল আসবাবপত্র নিয়ে যায়। এখন দিন ফিরেছে। তাই আমাদের লোকজন তাদের উপর হামলা চালিয়েছে।
আলফাডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ হারুন অর রশিদ বলেন, বাড়িঘর ভাঙচুরের ঘটনায় খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। এ বিষয়ে এখনো কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। লিখিত পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রিন্ট