মোঃ রনি আহাম্মেদ রাজু, মাগুরা জেলা প্রতিনিধি
মাগুরা শালিখা উপজেলার ধনেশ্বরগাতী ইউনিয়নের সীংড়া বাজারে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়ন উপলক্ষে আলোচনা সভা ও বর্ণাঢ্য র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। মঙ্গলবার ৩ ডিসেম্বর বিকাল ৪ টার সময় সিংড়া তিলখড়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠ প্রাঙ্গনে, শালিখা উপজেলা ১নং ধনেশ্বরগাতী ইউনিয়নের ছাত্রদল, যুবদল,সেচ্ছাসেবক দল সহ অন্যান্য সহযোগি সংগঠনের সকল নেতৃবৃন্দের আয়োজনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
শালিখা উপজেলা যুবদলের আহবায়ক মোঃ সোহেল মুন্সী এর সভাপতিত্বে ও শালিখা উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক শ্রী পরেশ রায় এর সঞ্চালনায় ভিডিও কলের মাধ্যমে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্য সচিব এস এম রবিউল ইসলাম নয়ন। আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মাগুরা জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম আবু তাহের সবুজ।
প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন, মাগুরা জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ আহম্মেদ। এছাড়াও উপস্থিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, শালিখা থানার ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক মোঃ আলামিন হোসেন, শালিখা উপজেলা বিএনপি সদস্য মোঃ সাবুর আলী মোল্লা, যুবদল নেতা মহাসীন মোল্লা, জেলা যুবদলের সদস্য সাদ আলী বিশ্বাস, মাগুরা সদর থানা যুবদলের আহবায়ক মোঃ কুতুবউদ্দিন উদ্দিন রানা, জেলা যুবদলের কোষাধ্যক্ষ মোঃ আবু রেজা মিলন, শালিখা থানা যুবদলের নেতা আশরাফুল ইসলাম আশা, বিএনপি নেতা রেজা ঢালী সহ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এসময়ে শালিখা উপজেলার ৭ টি ইউনিয়ন থেকে আগত ছাত্রদল, যুবদল, সেচ্ছাসেবক দল সহ বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতা ও কর্মী বৃন্দগণ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্য সচিব এস এম রবিউল ইসলাম নয়ন, ভিডিও কলে তিনি সকলকে একত্রিত হয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের হাতকে শক্তিশালী করার আহবান জানান এবং আগামীতে যাকে মনোনয়ন দেওয়া হয় তাকেই ধানের শীষে ভোট দিতে বলেন। একই সাথে তিনি আওয়ামীলীগ ও তার দোসরদের সাথে সকলকে সকল প্রকার সম্পর্ক বিছিন্ন করা সহ বিচারের নামে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে বলেন।
তিনি আরও জানান ৩১ দফা গুলো হলো ১. জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংবিধান সংস্কার কমিশন গঠন ২. সম্প্রীতিমূলক রাষ্ট্রসত্ত্বা (Rainbow-Nation) ও ‘জাতীয় সমন্বয় কমিশন (‘National Reconciliation commission’) গঠন। ৩. অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচনকালীন দল নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পুনঃপ্রবর্তন। 8. আইনসভা, মন্ত্রীসভা, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও বিচার বিভাগের মাঝে ক্ষমতার ভারসাম্যা প্রতিষ্ঠা। ৫. প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের সময়সীমা অনুর্ধ্ব পরপর দুই মেয়াদ নির্ধারণ। ৬. বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন বিষিষ্ট ব্যক্তিদের সমন্বয়ে আইন সভায় উচ্চকক্ষের প্রবর্তন। ৭. সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন। ৮. নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার এবং সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধি সংশোধন। ৯. স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরনে সকল রাষ্ট্রীয়, সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের পুনর্গঠন ও শক্তিশালীকরন। ১০. বর্তমান বিচার ব্যবস্থার সংস্কারের জন্য জুডিশিয়াল কমিশন গঠন, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনঃপ্রবর্তন ও সংবিধানের আলোকে বিচারপতি নিয়োগ আইন প্রণয়ন।
১১. গগণমূখী ও জনকল্যাণমূলক প্রশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে। প্রশাসনিক সংস্কার কমিশন গঠন। ১২. মিডিয়া কমিশন গঠন করে তথ্য ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ। ১৩. দুর্নীতি প্রতিরোধে দৃশ্যমান কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ ও ন্যায়পাল নিয়োগ। ১৪. সর্বস্তরে আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা। ১৫. আত্মনির্ভরশীল জাতীয় অর্থনীতি গড়ে তোলার লক্ষ্যে অর্থনৈতিক সংস্কার কমিশন গঠন। ১৬. ধর্মীয় স্বাধীনতার সর্বোচ্চ ও কার্যকর নিশ্চয়তা প্রদান। ১৭. মুদ্রাস্ফীতি ও ও দ্রব্যমূল্যর হ্রাস-বৃদ্ধির আলোকে শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করা। ১৮. প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ এবং নবায়নযোগ্য ও মিশ্র জ্বালানী ব্যবহারে অগ্রাধিকার দিয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ খাত আধুনিকায়ন। ১৯. জাতীয় স্বার্থের অগ্রাধিকার নিশ্চিত করে বৈদেশিক সম্পর্ক উন্নয়ন। ২০. প্রতিরক্ষা বাহিনীর অদিকতর আধুনিকায়ন ও সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সকল বিতর্কের উর্ধ্বে রাখা। ২১. প্রশাসন ও সেবা বিকেন্দ্রীকরণের লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলি স্বশাসিত ও ক্ষমতাবান করা। ২২. শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ও স্বীকৃত প্রদান। ২৩. কর্মসংস্থানকে অগ্রাধিকার দিয়ে আধুনিক ও যুগোপযোগী যুব উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়ন ও বেকার ভাতা প্রবর্তন।
২৪. নারীর মর্যাদা সুরক্ষা ও ক্ষমতায়নে যথাযথা পদক্ষেপ গ্রহণ। ২৫. চাহিদা ও জ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা বাস্তবায়নের মাধ্যমে ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষম শিক্ষিত জনগোষ্ঠী গড়ে তোলা। ২৬. “সবার জন্য স্বাস্থ্য” এবং “সার্বজনীন চিকিৎসা” ব্যবস্থা কার্যকর করা। প্রাথমিক ও প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পর্যন্ত সংখ্যক প্রশিক্ষিত নারী ও পুরুষ পল্লী স্বাস্থ্যকর্মীর ব্যবস্থা করা এবং সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগের চিকিৎসা, শিক্ষা ও গবেষণা সুবিধা নিশ্চিত করা। ২৭. কৃষকের উৎপাদন ও বিপণন সুরক্ষা দিয়ে কৃষি পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা। ২৮. সড়ক, রেল, নৌ পথের আধুনিকায়ন ও বহুমাত্রিক যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা। ২৯. জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সংকট ও প্রাকৃতিক দুযৌগ মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ এবং নদী শাসন ও খাল খননের উদ্যোগ গ্রহণ করা। ৩০. তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, মহাকাশ গবেষণা এবং আণবিক শক্তির উন্নয়ন ও সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা। ৩১. যুগোপযোগী, পরিকল্পিত, পরিবেশ বান্ধব আবাসন এবং নগরায়ন নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন।
প্রিন্ট