মহম্মদপুরে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে পৃথক দুটি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। দুটি হত্যাকাণ্ডই নৃশংস হওয়ায় এলাকার মানুষের মধ্যে ভীতির সঞ্চার হয়েছে। এ ঘটনার পর গত বুধবার মহম্মদপুর থানার ওসি তারক বিশ্বাস এবং ওসি (তদন্ত) মামুন বিশ্বাসকে বদলি করা হয়েছে। তবে মাগুরার পুলিশ সুপার জহিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, এই দুই কর্মকর্তাকে স্বাভাবিক বদলি করা হয়েছে।
চলতি মাসের ৬ তারিখ সকালে উপজেলার কালুকান্দি গ্রামের মহম্মদপুর-মাগুরা সড়কের পাশের পরিত্যক্ত একটি পুকুর থেকে এক মাথা ও পাহীন আজিজুর রহমান (৩০) নামের এক যুবকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত যুবক মাগুরা সদর উপজেলার সংকোচখালী গ্রামের মৃত মুজিবুর রহমানের ছেলে। আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের ৮ দিন পর ১৪ জুন দুপুরে মাগুরার সংকোচখালী গ্রামের যুবক চিকিৎসক আশরাফ আলী বিশ্বাসকে যশোরের শার্শা থেকে আটক করেন র্যাব সদস্যরা। এ সময় তিনি র্যাবের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করেন। আশরাফ সদর উপজেলার মালিক গ্রামের আহমেদ আলী বিশ্বাসের ছেলে।
জানা যায়, আজিজুরের ব্যবসায়িক ক্লায়েন্ট আর্থিক লেনদেনের সূত্র ধরে গত ৫ জুন দুপুরে মাগুরা শহরের বেলতলার হোমিও চিকিৎসক আশরাফ তারই হিজামা অ্যান্ড হোমিও সেন্টারের কাচে ঘেরা ঘরের পেছনের কক্ষে মাত্র আড়াই হাজার টাকার জন্য আজিজুরকে নির্মমভাবে হত্যা করে।
আজিজুর হত্যাকাণ্ডের দুই সপ্তাহের মাথায় পলাশবাড়ীয়া ইউনিয়নের উত্তর-পূর্বপাড়া এলাকায় গত শনিবার বিকেলে স্কুল শিক্ষক আলাউদ্দিন ওরফে পাখি মোল্যাকে মসজিদের ভেতরে হত্যা করে প্রতিপক্ষের লোকজন। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ তিন ব্যক্তিকে আটক করে। জানা যায়, ঘটনার দিন বিকেলে পাখি মোল্যা উত্তর-পূর্বপাড়া মসজিদে আসরের নামাজ আদায় করার সময় একই গ্রামের রাসেল মোল্যা, রবিউল মোল্যা ও বাশী মোল্যার নেতৃত্বে তার ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। তাকে ফরিদপুর মেডিকেলে ভর্তি করা হলে রাত সাড়ে ১০টায় সেখানে তিনি মারা যান। এ ঘটনার পরদিন পুলিশ ওই গ্রামের রাসেল, কামরুল ও সোহেলকে আটক করে জেলহাজতে পাঠায়।
ঘটনার পরদিন আলাউদ্দিন হত্যার ঘটনায় তার স্ত্রী শাহিদা বেগম বাদী হয়ে ছয়জনকে আসামি করে ২১ জুন সোমবার সকালে মহম্মদপুর থানায় মামলা করেন। পৃথক দুটি হত্যাকাণ্ডের পর মহম্মদপুর থানার ওসি তারক বিশ্বাস ও ওসি (তদন্ত) মামুন বিশ্বাসকে মাগুরার ডিবি কার্যালয়ে বদলি করা হয়েছে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন মামুন বিশ্বাস।
মাগুরার পুলিশ সুপার জহিরুল ইসলাম সময়ের প্রত্যাশাকে বলেন, দুই কর্মকর্তারই স্বাভাবিক বদলি হয়েছে। দুটি হত্যাকাণ্ডেরই মূল আসামিদের আটক করা হয়েছে।
প্রিন্ট