ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo আমিরাতে বাংলাদেশ রেডিমেড গার্মেন্টস এসোসিয়েশনের বিজয় দিবস পালন Logo তানোরে ভেঁকু দালালদের দৌরাত্ম্য জনজীবন অতিষ্ঠ Logo মাগুরয় কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত Logo মোহনপুরে বিএনপি’র দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে সভাপতি মুনঃ সম্পাদক মাহবুব Logo রাজশাহীর মোহনপুর বিএনপি’র সম্মেলন সভাপতি মুন, সম্পাদক মাহাবুর Logo বিভাগের দাবিতে উত্তাল নোয়াখালী Logo তানোরে নীতিমালা লঙ্ঘন করে গভীর নলকুপ অপারেটরের আবেদন Logo মাধবদীতে হুমায়ুন কবির নামে এক জনকে গুলি করে হত্যা Logo প্রত্যেকটা বাড়িতে গিয়ে তারেক জিয়ার ৩১ দফার দাওয়াত পৌছে দিতে হবে Logo মাত্র একটি কাব্যগ্রন্থ ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ দিয়ে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে নিজেকে ছড়িয়ে দিয়েছেন হেলাল হাফিজ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

বাঘায় পিতা-মাতার কলহে আহত শিশুর মৃত্যু

আব্দুল হামিদ মিঞা, বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি

বিয়ের বয়স পূর্ণ হওয়ার আগে প্রথম বিয়ে করেছিলেন আরিফুল ইসলাম। ৬মাস পর সেই স্ত্রী তাকে তালাক দিয়ে চলে যায়। গত ২বছর আগে দ্বিতীয় বিয়ে করেন আরিফুল ইসলাম। বছর খানেক আগে আরিফুলের দ্বিতীয় স্ত্রী রুকসানা খাতুনের গর্ভে জন্ম নেয় আব্দুর রহিম। পৃথিবীর আলো দেখেও আরিফুল-রুকসানা দম্পতির বিবাহিত জীবনের কলহের জেরে ১ বছর বয়সে চির বিদায় নিয়েছে শিশু সন্তান আব্দুর রহিম।

গত শনিবার (৩০ নভেম্বর) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় শিশু আব্দুর রহিম । শনিবার বিকেলে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে। আরিফুল ইসলাম রাজশাহীর বাঘা উপজেলার মহদিপুর গ্রামের হারান আলীর ছেলে। রুকসানা খাতুন একই উপজেলার পাকুড়িযা গ্রামের আব্দুল খালেকের মেয়ে।

এলাকাবাসীর ভাষ্য, পিতা-মাতার দাম্পত্য জীবনে কলহের বলি হলো শিশু আব্দুর রহিম। সংসার বুঝে ওঠার আগেই বিয়ের কারণে প্রায়শঃ কলহ দেখা দিতো তাদের সংসার জীবনে। সেক্ষেত্রে কাঙ্খিত আদর যত্ন থেকেও বঞ্চিত হয়েছে আব্দুর রহিম।

জানা যায়, এসএসসি পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে তার বন্ধুর বউকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করেন আরিফুল। তার জন্ম তারিখ অনুযায়ী ওই সময়ে বয়স ছিল ১৭ বছর। বিয়ের ৬ মাস পরে তালাক দিয়ে চলে যায় তার প্রথম স্ত্রী। গত ২ বছর আগে উপজেলার পাকুরিয়া গ্রামের আব্দুল খালেকের মেয়ে রুকসানা খাতুনের সাথে পারিবারিক ভাবে দ্বিতীয় বিয়ে করেন আরিফুল। ওই সময় রুকসানার বয়স ছিল ১৫ বছর। দাম্পত্য জীবনের এক বছর পরে তাদের ঘরে জন্ম নেয় শিশু সন্তান আব্দুর রহিম। ২ বছর সংসার করাকালীন সময়ে দাম্পত্য জীবনে কলহ দেখা দেয় আরিফুল-রুকসানা দম্পতির।

রুকসানা জানান, গত বৃহস্পতিবার তার সন্তানকে বুকের দুধ পান করাচ্ছিলেন। পারিবারিক কলহের জেরে তার শ্বাশুরি রাগান্নিত হয়ে সন্তান আব্দুরকে কোল থেকে কেড়ে নিয়ে যায়। ওই সময় আঘাত প্রাপ্ত হয়। সেইদিন রাতে আব্দুর রহিমের প্রচন্ড জ্বর আসে এবং মাথায় এক জায়গায় ফোলা চোখে পড়ে।

আরিফুল ইসলাম জানান, বাড়ির লোকজন মিলে আব্দুল রহিমকে চারঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। উন্নত চিকিৎসার জন্য সেখান থেকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২ দিন চিকিৎসার পর গত ৩০ শে নভেম্বর ভোর রাতে মারা যায় শিশু সন্তান আব্দুল রহিম। তবে দাম্পত্য জীবনে ছোট খাটো ঘটনা ছাড়া বড় ধরনের কলহের কথা অস্বীকার করেছেন আরিফুল।

আব্দুল খালেক জানান, বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের টাকার জন্য তার মেয়েকে মাঝে মধ্যে শারীরিক নির্যাতন করতেন রুকসানার স্বামী সহ শ্বশুর-শাশুড়ি।

তার অভিযোগ অস্বীকার করে হারান আলী বলেন, এমন কোন ঘটনা ঘটেনি। তাদের নাতি আব্দুর রহিম অসুস্থ হওয়ায় তাকে মেডিকেল এ নিয়ে যাওয়া হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।

বাঘা থানার ওসি আবু সিদ্দিক জানান, ঘটনা জানার পর সরেজমিন সেখানে গিয়ে কথা বলে অভিযোগ করার মতো তেমন কিছু তথ্য যায়নি। এ বিষয়ে কেউ অভিযোগও করেননি। পরে লাশ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

আমিরাতে বাংলাদেশ রেডিমেড গার্মেন্টস এসোসিয়েশনের বিজয় দিবস পালন

error: Content is protected !!

বাঘায় পিতা-মাতার কলহে আহত শিশুর মৃত্যু

আপডেট টাইম : ০৭:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৪
আব্দুল হামিদ মিঞা, বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি :

আব্দুল হামিদ মিঞা, বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি

বিয়ের বয়স পূর্ণ হওয়ার আগে প্রথম বিয়ে করেছিলেন আরিফুল ইসলাম। ৬মাস পর সেই স্ত্রী তাকে তালাক দিয়ে চলে যায়। গত ২বছর আগে দ্বিতীয় বিয়ে করেন আরিফুল ইসলাম। বছর খানেক আগে আরিফুলের দ্বিতীয় স্ত্রী রুকসানা খাতুনের গর্ভে জন্ম নেয় আব্দুর রহিম। পৃথিবীর আলো দেখেও আরিফুল-রুকসানা দম্পতির বিবাহিত জীবনের কলহের জেরে ১ বছর বয়সে চির বিদায় নিয়েছে শিশু সন্তান আব্দুর রহিম।

গত শনিবার (৩০ নভেম্বর) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় শিশু আব্দুর রহিম । শনিবার বিকেলে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে। আরিফুল ইসলাম রাজশাহীর বাঘা উপজেলার মহদিপুর গ্রামের হারান আলীর ছেলে। রুকসানা খাতুন একই উপজেলার পাকুড়িযা গ্রামের আব্দুল খালেকের মেয়ে।

এলাকাবাসীর ভাষ্য, পিতা-মাতার দাম্পত্য জীবনে কলহের বলি হলো শিশু আব্দুর রহিম। সংসার বুঝে ওঠার আগেই বিয়ের কারণে প্রায়শঃ কলহ দেখা দিতো তাদের সংসার জীবনে। সেক্ষেত্রে কাঙ্খিত আদর যত্ন থেকেও বঞ্চিত হয়েছে আব্দুর রহিম।

জানা যায়, এসএসসি পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে তার বন্ধুর বউকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করেন আরিফুল। তার জন্ম তারিখ অনুযায়ী ওই সময়ে বয়স ছিল ১৭ বছর। বিয়ের ৬ মাস পরে তালাক দিয়ে চলে যায় তার প্রথম স্ত্রী। গত ২ বছর আগে উপজেলার পাকুরিয়া গ্রামের আব্দুল খালেকের মেয়ে রুকসানা খাতুনের সাথে পারিবারিক ভাবে দ্বিতীয় বিয়ে করেন আরিফুল। ওই সময় রুকসানার বয়স ছিল ১৫ বছর। দাম্পত্য জীবনের এক বছর পরে তাদের ঘরে জন্ম নেয় শিশু সন্তান আব্দুর রহিম। ২ বছর সংসার করাকালীন সময়ে দাম্পত্য জীবনে কলহ দেখা দেয় আরিফুল-রুকসানা দম্পতির।

রুকসানা জানান, গত বৃহস্পতিবার তার সন্তানকে বুকের দুধ পান করাচ্ছিলেন। পারিবারিক কলহের জেরে তার শ্বাশুরি রাগান্নিত হয়ে সন্তান আব্দুরকে কোল থেকে কেড়ে নিয়ে যায়। ওই সময় আঘাত প্রাপ্ত হয়। সেইদিন রাতে আব্দুর রহিমের প্রচন্ড জ্বর আসে এবং মাথায় এক জায়গায় ফোলা চোখে পড়ে।

আরিফুল ইসলাম জানান, বাড়ির লোকজন মিলে আব্দুল রহিমকে চারঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। উন্নত চিকিৎসার জন্য সেখান থেকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২ দিন চিকিৎসার পর গত ৩০ শে নভেম্বর ভোর রাতে মারা যায় শিশু সন্তান আব্দুল রহিম। তবে দাম্পত্য জীবনে ছোট খাটো ঘটনা ছাড়া বড় ধরনের কলহের কথা অস্বীকার করেছেন আরিফুল।

আব্দুল খালেক জানান, বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের টাকার জন্য তার মেয়েকে মাঝে মধ্যে শারীরিক নির্যাতন করতেন রুকসানার স্বামী সহ শ্বশুর-শাশুড়ি।

তার অভিযোগ অস্বীকার করে হারান আলী বলেন, এমন কোন ঘটনা ঘটেনি। তাদের নাতি আব্দুর রহিম অসুস্থ হওয়ায় তাকে মেডিকেল এ নিয়ে যাওয়া হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।

বাঘা থানার ওসি আবু সিদ্দিক জানান, ঘটনা জানার পর সরেজমিন সেখানে গিয়ে কথা বলে অভিযোগ করার মতো তেমন কিছু তথ্য যায়নি। এ বিষয়ে কেউ অভিযোগও করেননি। পরে লাশ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়।


প্রিন্ট