ইসমাইল হোসেন বাবু, স্টাফ রিপোর্টার
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় রাজনৈতিক মামলায় আওয়ামী লীগের কর্মী আজাদুর রহমান জিহাদ কারাগারে আছেন। প্রতিপক্ষের ওপর হামলা ও লুটপাটের মামলায় পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তাঁর সমর্থক ও স্বজনেরা ।
সেই সুযোগে তাঁদের প্রতিপক্ষ স্থানীয় আশরাফ সিদ্দিকীর লোকজন উক্ত জমি দখলের পাঁয়তারা শুরু করে। এর অংশ হিসেবে বিরুদ্ধে চারটি দোকান ও দাদার কবরস্থান ভেঙে ফেলে দখলের অভিযোগ উঠেছে। কাটা হয়েছে বেশ কিছু গাছপালাও। সেখানে তোলা হয়েছে ইটের দেয়াল। এখন ভাঙা দোকানের ইটগুলো সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। কুষ্টিয়ার কুমারখালীর কল্যাণপুর বাজার এলাকায় গিয়ে এ ভাঙা-গড়ার দৃশ্য দেখা যায় ।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে দখলের এই অভিযোগের তথ্যও বেরিয়ে আসে। গত কাল বুধবার দুপুরে কল্যাণপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়সংলগ্ন মাঠে গিয়ে দেখা যায়, কয়েক বিঘা জমির চারদিকে বাঁশের চিকন খুঁটিতে বাঁধা লাল পতাকা। গ্রামটি উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নে অবস্থিত ।
১৪৪ ধারা অমান্য করে জমি দখল, ভাঙচুর ও গাছ কাটার বিষয়টি স্বীকার করলেও প্রতিপক্ষের অভিযোগ অস্বীকার করেন আশরাফ সিদ্দিক। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে প্রায় ১৬ বছর প্রকৌশলী জিহাদ ও তাঁর সমর্থকেরা আমাদের প্রায় ১০-১২ বিঘা জমি দখল করে রেখেছিলেন। এখন আওয়ামী লীগ নেই। তাই আমাদের জমি আমরা দখল করে নিয়েছি ।
শিলাইদহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাজেদুর রহমান বলেন, আমার ভাই সমাজপ্রধান আজাদুর রহমান জিহাদ কারাগারে। সে সুযোগে বিএনপির ছত্রচ্ছায়ায় প্রতিপক্ষ আশরাফ সিদ্দিকের পক্ষ আমাদের চারটি দোকান ও দাদা-দাদির কবর ভেঙে দিয়েছে। দোকানের পাশের বাগানের মেহগনি গাছগুলো কেটে নিয়েছে। এখন ইটের দেয়াল দিয়ে ঘিরে নিচ্ছে। আবার মাঠের জমিতেও লাল পতাকা টাঙিয়ে দখল করে নিছে ।
তাঁর ভাষ্য, আদালতে রেকর্ড সংশোধনী ও ভাগ-বাঁটোয়ারা মামলা চলছে। মামলায় আদালত ১৪৪ ধারা জারি করেছেন। কিন্তু প্রতিপক্ষরা আদালতের আদেশ অমান্য করে জবরদখল করে নিয়েছে ।
এলাকাবাসী ও জিহাদের কয়েকজন স্বজন জানান, প্রায় ২০৭ শতাংশ জমি ভোগদখল করে আসছেন গ্রাম্য মাতব্বর আজাদুর রহমান জিহাদ, তাঁর ভাই আওয়ামী লীগ নেতা মাজেদুর রহমান, আরেক চাচাতো ভাই তমিজুর রহমান ও তাঁদের শরিকেরা। ওই জমি নিয়ে প্রতিবেশী আশরাফ সিদ্দিক ও তাঁদের শরিকদের সঙ্গে মামলা চলছে। ২০২২ সালের ২০ ডিসেম্বর ২০৭ শতাংশ জমির ওপর ১৪৪ ধারা জারি করেন আদালত ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আদালতের ১৪৪ ধারা অমান্য করে ১৪ নভেম্বর থেকে কবরস্থান, কৃষিজমি, গাছের বাগানসহ প্রায় ১২ বিঘা জমি দখল করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষ আশরাফ সিদ্দিক গংয়ের বিরুদ্ধে ।
আরও পড়ুনঃ হারিয়ে যাচ্ছে নবান্নের সেই দিনগুলি
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, জমি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কয়েকবার হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে থানায় দুটি মামলাও রয়েছে ।
প্রিন্ট