ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার রানাপশা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকসহ মোট ১৩ জন শিক্ষক কর্মরত আছেন। তবে, বিদ্যালয়ে বর্তমানে তিনটি শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে। স্কুলে তৃতীয় শ্রেণির দুজন কর্মী রয়েছেন, যাদের মধ্যে একজন কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর এবং একজন অফিস সহকারী।
এমন পরিস্থিতিতে, বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী জ্যোতি রানি বিশ্বাসকে পাঠদান করানোর অভিযোগ উঠেছে। যদিও সংশ্লিষ্ট বিষয়ের শিক্ষকরা উপস্থিত থাকেন, তবুও জ্যোতি রানি বিশ্বাসকে শ্রেণী পাঠদান করতে বলা হয়। জানা গেছে, জ্যোতি রানির বাবা বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা এবং তিনি বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকেই শিক্ষার্থীদের পাঠদান শুরু করেন। তার কাছে এই দায়িত্ব দেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাবুল চক্রবর্তী।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় দুই মাস ধরে ল্যাব অপারেটর আখি হাওলাদার বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত আছেন, ফলে ষষ্ঠ শ্রেণির পাঠদান করছেন জ্যোতি রানি বিশ্বাস।
বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, “শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে এসে আড্ডা দেন, আর আমাদের অফিস সহকারী জ্যোতিকে দিয়ে পাঠদান করান। এছাড়া, লায়লা ম্যাডাম নামে এক শিক্ষিকা শ্রেণিকক্ষে এসে পান খান, মেকআপ করেন এবং টিকটক ভিডিও বানান। তিনি আমাদের দিয়ে সিঙ্গারা আনান, মোবাইলে টাকা রিচার্জ করান।”
শিক্ষার্থীদের মতে, স্বাস্থ্য বিষয়ক বইটি পুরুষ শিক্ষক দ্বারা পাঠানো হয় এবং ছেলেমেয়ে একসাথে ওই ক্লাসে অংশ নেয়। সুমন স্যার নামে এক শিক্ষক বেত থাকা সত্ত্বেও হাত দিয়ে তাদের মারধর করেন। শিক্ষার্থীরা আরও জানান, তারা পড়াশোনা করতে চায়, কিন্তু শিক্ষকরা তাদের পরীক্ষায় ফেল করানোর ভয় দেখিয়ে বাধ্য করছেন।
অফিস সহকারী জ্যোতি রানী বিশ্বাস বলেন, “আমি যোগদানের পর থেকেই ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ক্লাস নিচ্ছি। আমার প্রধান শিক্ষক স্যারের নির্দেশেই আমি ক্লাস নিচ্ছি।”
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাবুল চক্রবর্তী কথা বলতে রাজি হননি।
আরও পড়ুনঃ সাতৈর বাজার বণিক সমিতি নির্বাচনে সভাপতি নাজিরঃ সম্পাদক মোকাম্মেল
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আনোয়ার আজীম বলেন, “অফিস সহকারী দিয়ে ক্লাস করানোর নিয়ম নেই। এর আগেও তাকে নিষেধ করা হয়েছে। বিষয়টি আমরা সরেজমিন গিয়ে পর্যালোচনা করব।”
প্রিন্ট