যশোর সেক্রেড হার্ট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত শহরের মিস্ত্রিখানা রোডে (গাড়িখানা) ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন। তারা বিদ্যালয়ের প্রবেশপথ বন্ধ করে কোনো স্থাপনা তৈরির পরিকল্পনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, “যশোর সেক্রেড হার্ট মাধ্যমিক বিদ্যালয় একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যা ১৯৫৩ সাল থেকে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে আসছে। বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং চলাচলের উপযুক্ত রাস্তার অভাবে প্রতিদিন যাতায়াতের ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি হয়।”
১৯৭৪ সালে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন জানিয়ে বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রবেশপথ ব্যবহারের অনুমতি নেওয়া হয়েছিল। সেই সময়, পুরনো কসবা মৌজার ১৪৪৪ নং দাগের সরকারি জমির কিছু অংশ যাতায়াতের জন্য ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়। বর্তমানে প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী ও অভিভাবক এই পথটি ব্যবহার করে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করেন।
বক্তারা আরও বলেন, “আগে যে রাস্তাটি ব্যবহার করা হতো, তা ছিল অত্যন্ত বিপদজনক ও ঝুঁকিপূর্ণ। বর্তমান রাস্তাটি অনেক নিরাপদ এবং শিশুদের আনা-নেওয়ার জন্য অত্যন্ত সুবিধাজনক। অভিভাবকরা এই রাস্তাটি ব্যবহারে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।”
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, সহকারী শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেন, নবম শ্রেণির ছাত্রী অথৈ সাহা, সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী নাজিয়া খান, অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ইয়াসিন জামান, সপ্তম শ্রেণির ছাত্র শাহরিয়ার আলম, ফাইয়াজ ইসলাম সিয়াম, তহসিন হাসান দিপু, তাহমিদ আজাদ, সাবেক শিক্ষার্থী সৌভিক আহম্মেদ, প্রতিবেশী মনিরা বেগম প্রমুখ।
এর আগে, গত সোমবার বিদ্যালয়ের অভিভাবকরা একই দাবিতে যশোরের জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিস্টার ভেরোনিকা যমুনা রোজারিও বলেন, “শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য ১৯৭৪ সালের ১৯ আগস্ট তৎকালীন জেলা প্রশাসক এম আক্তার আলী ডিসি বাংলোর সামনের রাস্তা প্রদান করেছিলেন। সম্প্রতি বর্তমান জেলা প্রশাসক আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন যে, এই গেটটি বন্ধ করতে হবে, কারণ এখানে ম্যাজিস্ট্রেট বাসভবন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “যদি গেটটি বন্ধ করা হয়, তাহলে হাজার হাজার শিক্ষার্থীর জন্য এটি বড় ধরনের ভোগান্তির কারণ হবে।”
এদিকে, জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “বিদ্যালয়ের প্রধান ফটক দক্ষিণ পাশে হলেও সেটি শুধুমাত্র বিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও শিক্ষকরা ব্যবহার করেন। ডিসি বাংলো’র সামনের ফটকটি অস্থায়ী এবং সেখানে ম্যাজিস্ট্রেট বাসভবন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এটি আমাদের কর্মকর্তা ও ম্যাজিস্ট্রেটদের জন্য নিরাপদ নয়। তবে, ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা এখনও চূড়ান্ত হয়নি, এবং স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি যে, ভবন নির্মাণের জন্য যতটুকু জায়গা প্রয়োজন, ততটুকু ব্যবহার করা হবে।”
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কোনো ধরনের দ্বন্দ্বে জড়াতে চান না এবং আশাবাদী যে, জেলা প্রশাসক তার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবেন এবং শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুবিধা বজায় থাকবে।
প্রিন্ট