রাজশাহীর বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, চিকিৎসক, সিনিয়র স্টাফ নার্সসহ সকল কর্মচারীর বিরুদ্ধে ভয়-ভীতি প্রদর্শন, অশালীন ভাষায় গালিগালাজ এবং চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মাইক্রোবাস চালক বুলবুল আহমেদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, বুলবুল আহমেদ হাসপাতালের পরিবেশকে অস্থিতিশীল করে তুলেছে এবং নিয়মিতভাবে রোগীদের সেবা নিতে বাধা দিয়ে চাঁদা দাবি করছে। এর ফলে হাসপাতালের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী দিন দিন প্রাণনাশের শঙ্কায় রয়েছেন। এর আগেও বুলবুল আহমেদ বিভিন্ন রোগীকে জিম্মি করে টাকা আদায় এবং চড়-থাপ্পড় মেরে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সর্বশেষ শনিবার (৯ নভেম্বর) বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের শিশু ওয়ার্ডে ঘটেছে এ ঘটনায়। সকাল ১০:৪০ মিনিটে উত্তর মিলিকবাঘা গ্রামের গোলাম মোস্তফার তিন বছরের শিশু মোস্তাকিনকে শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। জুনিয়র কনসালটেন্ট (শিশু) ডাঃ ফেরদৌসী বেগম রোগীকে পর্যবেক্ষণ করেন এবং শিশুর খিচুনিসহ অন্যান্য উপসর্গ দেখে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন।
রোগীর অভিভাবকরা শিশুকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য মাইক্রো ড্রাইভার বুলবুল আহমেদ ও অনিককে নিয়ে আসেন। তবে এ সময় তারা দ্রুত রোগীকে রামেক হাসপাতালে পাঠানোর বিষয়টি অস্বীকার করেন এবং সিনিয়র নার্সদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। পরে তারা নার্স এবং চিকিৎসকদের মারধর, হামলা ও ভাঙচুরের হুমকি দেয়। তাদের হামলার শিকার হতে হতে স্থানীয় আনসার সদস্যদের সহায়তায় ঘটনাস্থল থেকে রক্ষা পায় স্বাস্থ্যকর্মীরা। তবে এই ঘটনাটি ঘটানোর পর, আধা ঘণ্টা দেরি হলে শিশুটির মৃত্যু হতে পারত।
এই ঘটনায় উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ আসাদুজ্জামান আশাদ বাদী হয়ে বাঘা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। তার অভিযোগ, বুলবুল আহমেদ সরকারি কাজে বাধা প্রদান করে এবং চিকিৎসা সেবা ব্যাহত করে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে চেয়েছেন। তিনি বলেন, এই ধরনের কার্যকলাপ পূর্ব পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে, যাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে অপমানিত ও অপদস্থ করা যায়।
রোগীর অভিভাবক গোলাম মোস্তফা জানান, রামেক হাসপাতালে নেওয়ার জন্য বুলবুল আহমেদকে জানানো হলে সে রোগীর অবস্থা দেখে চিকিৎসক-নার্সদের সঙ্গে ঝামেলা শুরু করে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, “এ ঘটনা জানার পর আমি রোগীর কাছে গেলে বুলবুল আহমেদ, অনিক এবং কিছু বহিরাগত মারমুখি হয়ে ওঠে। তবে স্থানীয়দের সহায়তায় স্টাফরা অফিস কক্ষে ফিরে আসেন।”
তিনি বলেন, এর আগেও বুলবুল আহমেদ কর্তব্যরত চিকিৎসককে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করেছে এবং এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটে থাকে।
এ ব্যাপারে বাঘা থানার ওসি জানান, অভিযোগের প্রেক্ষিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রিন্ট