রাজশাহীর তানোরে গ্রামীণ জনপদের অধিবাসীদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের, বিশেষ করে মেয়ে শিক্ষার ক্ষেত্রে তানোর মহিলা ডিগ্রী কলেজ একটি অনন্য অবদান রেখে চলেছে। এই কলেজটি গ্রামীণ পরিবেশেও আধুনিক শিক্ষাদান প্রদান করে, যা শহরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে তুলনীয়। কলেজটির অবস্থান তানোর উপজেলা সদর থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে, তানোর-চৌবাড়িয়া রাস্তার চাপড়া বাজারে। এখানে একটি অত্যন্ত মনোরম ও নিরিবিলি পরিবেশ বিরাজমান, যেখানে কোনো ধরনের হৈহুল্লোড় বা কোলাহল নেই।
গ্রামীণ পরিবেশে অবস্থিত, তবে এখানে আধুনিক মানসম্মত শিক্ষাদানের কোনো কমতি নেই। শহরের নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মতো আধুনিক সুযোগ-সুবিধা বা উপকরণ হয়তো এখানে পাওয়া না গেলেও, পাঠদানের মান এবং শিখন প্রক্রিয়া অনেকটাই তাতে সমৃদ্ধ। কলেজটিতে অত্যন্ত দক্ষ এবং অভিজ্ঞ শিক্ষক মণ্ডলী রয়েছেন, যারা বিষয়ভিত্তিক আধুনিক পদ্ধতিতে শিক্ষাদান করে শিক্ষার্থীদের পাবলিক পরীক্ষায় ধারাবাহিক সাফল্য অর্জন নিশ্চিত করেছেন।
কলেজের অধ্যক্ষ, অনুকুল কুমার ঘোষ, তার আন্তরিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে কলেজটির মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। কলেজ পরিচালনা কমিটি, অভিভাবক এবং শিক্ষকদের সহায়তায় প্রতিষ্ঠানের বর্তমান সাফল্য সম্ভব হয়েছে। অধ্যক্ষ ও শিক্ষকদের অবিরাম প্রচেষ্টার ফলস্বরূপ, কলেজে শতভাগ উপস্থিতি নিশ্চিত করা, টেকশই পাঠদান প্রদান এবং শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে স্বপ্ন বিনির্মাণ সম্ভব হয়েছে।
এছাড়াও, উন্নত এবং বাস্তবসম্মত শিক্ষার জন্য কলেজে নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও বিশ্লেষণ চলছে। তানোর মহিলা কলেজের মাধ্যমে গ্রামীণ জনপদের মেয়েরা তাদের বাড়ির কাছে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে, যা তাদের জীবনে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে। শহর বা গ্রাম কোনো বিষয় নয়; প্রতিষ্ঠানের প্রধানের সদিচ্ছা থাকলে, সুন্দর পরিবেশে মানসম্মত শিক্ষা প্রদান সম্ভব, এবং তানোর মহিলা কলেজ তার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
এখানে নিয়মিত বিতর্ক প্রতিযোগিতা, চিত্রাঙ্কন, খেলা-ধূলা, এবং বিভিন্ন জাতীয় দিবস উদযাপন করা হয়, যা শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে, এবং তাদের সৃজনশীল ও মননশীল হিসেবে গড়ে তুলছে। কলেজের অবকাঠামো, শিক্ষাপোকরণ, জনবল, শিক্ষার্থী এবং পাবলিক পরীক্ষায় ভালো ফলাফল অর্জন করে এটি একেবারে প্রশংসনীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিগণিত হয়েছে।
এছাড়াও, কলেজে প্রায় ৬০ জন ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর শিক্ষার্থী নিঃশুল্ক হোস্টেলে থাকা অবস্থায় শিক্ষা লাভ করছে। এই সব বিষয় মাথায় রেখে সচেতন মহল কলেজটির দ্রুত সরকারি করণ দাবি করছেন। বরেন্দ্র জনপদের মানুষের আশাবাদ, সরকার তানোর মহিলা কলেজটিকে সরকারি মর্যাদা প্রদান করলে নারী শিক্ষা বিস্তারে আরও বড় ভূমিকা রাখা সম্ভব হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে, তানোর মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অনুকুল কুমার ঘোষ বলেন, “বহু সীমাবদ্ধতার মধ্যেও আমরা মানসম্মত শিক্ষা প্রদানের প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমাদের একটি একাডেমিক ভবনের প্রয়োজন, তাতে নারী শিক্ষা বিস্তারে আরও বড় অবদান রাখতে পারব।”
- আরও পড়ুনঃ বোয়ালমারীতে বীজ ও সার বিতরণ
তানোর মহিলা কলেজটি শিক্ষা এবং সৃজনশীলতার ক্ষেত্রে এক অভূতপূর্ব মডেল সৃষ্টি করেছে, যা গ্রামীণ এলাকায় শিক্ষার মান উন্নয়নে একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রিন্ট