ঢাকা , শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

ফলো আপ

কুষ্টিয়া বিদ্যুতায়িত হয়ে নিমেষে শেষ পুরো পরিবার, মা-বাবা ও মেয়ে

পাশাপাশি সারিবদ্ধ ভাবে রাখা স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানের নিথরদেহ দেখে প্রতিবেশিদের কান্না

পাশাপাশি সারিবদ্ধ ভাবে রাখা স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানের নিথরদেহ দেখে প্রতিবেশিদের চোখের পানি কেউ ধরে রাখতে পারেনি। বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নিজ বাড়িতে বাবা-মা ও মেয়ের মৃত্যু লাশ দেখে সবাই হতভম্ব। মূহুরতের মধ্যে খবর ছড়িয়ে পরলে একনজর দেখার জন্য ভিড় ও কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং বি ব্লকের ৩৯৩নং বাসা এলাকায় সকলেই কান্নায় বাতাস ভারি হয়ে যায়।

 

গতকাল বুধবার (২৩ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হাউজিং কদমতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

জানাগেছে, শহরের হাউজিং এলাকায় ঘর ঝাড়ু দেওয়ার সময় ছিঁড়ে পড়া  তারে জড়িয়ে বিদ্যুতায়িত হন গৃহবধু রুপা খাতুন (৩৫)। তাকে বাঁচাতে এগিয়ে যায় স্বামী আ: সালাম(৪০) ও তাঁদের একমাত্র মেয়ে সাবা খাতুন (১৩) বিদ্যুতায়িত হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ সময় সালামের ভাতিজা  সিয়াম (১৩) গুরুত্বর আহত হয়। এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে। পরে তাকে কুষ্টিয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি সালামের ভাতিজা  সিয়াম (১৩)গুরুত্বর আহত,দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা: সজীব উদ্দিন স্বাধীন জানান সে  এখন ভালো আছে।

পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বুধবার দুপুরের দিকে কুষ্টিয়ায় বৃষ্টি শুরু হয়। এতে ঘরের মধ্যে বৃষ্টির পানি জমে যায়। এজন্য বিদ্যুতের মেইন সুইচ বন্ধ করতে যায় সালাম। এসময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় সালাম। তাকে বাঁচাতে প্রথমে স্ত্রী রুপা এগিয়ে আসে। এতে সেও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। পরে মেয়ে সাবা ও ভাতিজা সিয়াম যায়। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে।

হতাহতদের হাসপাতালে নিয়ে আসা প্রতিবেশী রাজিব বলেন, বিকেলে সালামের বাড়িতে গিয়ে দেখতে পাই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে সালাম ও তার স্ত্রী-মেয়ে এবং ভাতিজা ঘরের মেঝেতে পড়ে রয়েছে। সে সময় স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক ৩ জনকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত সালামের চাচাতো ভাই সাইদুল জানান, সালামের শহরের জেলখানা মোড়ের ফটোকপির দোকান রয়েছে। দুপুরে খাবার খাওয়ার জন্য সে বাড়িতে এসেছিল। ওই সময় ঘরের ভেতর পরিবারের সবাই অবস্থান করছিল। একদিন আগেই বাড়িতে ইলেকট্রিকের কাজ করিয়েছিলেন বলে জানান তিনি।

 

রুপা খাতুনের ভাই সাইদুল ইসলাম বলেন, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আমার বোন, দুলাভাই ও ভাগ্নির মৃত্যু হয়েছে। জেলখানা মোড়ে দুলাভাইয়ের ফটোকপির দোকান রয়েছে আমার। ভাগ্নি সাবা হাউজিং প্রাইমারি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণিতে লেখাপড়া করত। সার্ভিস লাইনের তারে ত্রুটি থাকায় বৃষ্টির পানিতে ওয়াশরুমের টিনের চাল বিদ্যুতায়িত হয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানান পশ্চিমাঞ্চল বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী অনুপম চক্রবর্তী।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

ফলো আপ

কুষ্টিয়া বিদ্যুতায়িত হয়ে নিমেষে শেষ পুরো পরিবার, মা-বাবা ও মেয়ে

আপডেট টাইম : ০৬:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪
ইসমাইল হোসেন বাবু, স্টাফ রিপোর্টার :

পাশাপাশি সারিবদ্ধ ভাবে রাখা স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানের নিথরদেহ দেখে প্রতিবেশিদের চোখের পানি কেউ ধরে রাখতে পারেনি। বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নিজ বাড়িতে বাবা-মা ও মেয়ের মৃত্যু লাশ দেখে সবাই হতভম্ব। মূহুরতের মধ্যে খবর ছড়িয়ে পরলে একনজর দেখার জন্য ভিড় ও কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং বি ব্লকের ৩৯৩নং বাসা এলাকায় সকলেই কান্নায় বাতাস ভারি হয়ে যায়।

 

গতকাল বুধবার (২৩ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হাউজিং কদমতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

জানাগেছে, শহরের হাউজিং এলাকায় ঘর ঝাড়ু দেওয়ার সময় ছিঁড়ে পড়া  তারে জড়িয়ে বিদ্যুতায়িত হন গৃহবধু রুপা খাতুন (৩৫)। তাকে বাঁচাতে এগিয়ে যায় স্বামী আ: সালাম(৪০) ও তাঁদের একমাত্র মেয়ে সাবা খাতুন (১৩) বিদ্যুতায়িত হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ সময় সালামের ভাতিজা  সিয়াম (১৩) গুরুত্বর আহত হয়। এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে। পরে তাকে কুষ্টিয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি সালামের ভাতিজা  সিয়াম (১৩)গুরুত্বর আহত,দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা: সজীব উদ্দিন স্বাধীন জানান সে  এখন ভালো আছে।

পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বুধবার দুপুরের দিকে কুষ্টিয়ায় বৃষ্টি শুরু হয়। এতে ঘরের মধ্যে বৃষ্টির পানি জমে যায়। এজন্য বিদ্যুতের মেইন সুইচ বন্ধ করতে যায় সালাম। এসময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় সালাম। তাকে বাঁচাতে প্রথমে স্ত্রী রুপা এগিয়ে আসে। এতে সেও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। পরে মেয়ে সাবা ও ভাতিজা সিয়াম যায়। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে।

হতাহতদের হাসপাতালে নিয়ে আসা প্রতিবেশী রাজিব বলেন, বিকেলে সালামের বাড়িতে গিয়ে দেখতে পাই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে সালাম ও তার স্ত্রী-মেয়ে এবং ভাতিজা ঘরের মেঝেতে পড়ে রয়েছে। সে সময় স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক ৩ জনকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত সালামের চাচাতো ভাই সাইদুল জানান, সালামের শহরের জেলখানা মোড়ের ফটোকপির দোকান রয়েছে। দুপুরে খাবার খাওয়ার জন্য সে বাড়িতে এসেছিল। ওই সময় ঘরের ভেতর পরিবারের সবাই অবস্থান করছিল। একদিন আগেই বাড়িতে ইলেকট্রিকের কাজ করিয়েছিলেন বলে জানান তিনি।

 

রুপা খাতুনের ভাই সাইদুল ইসলাম বলেন, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আমার বোন, দুলাভাই ও ভাগ্নির মৃত্যু হয়েছে। জেলখানা মোড়ে দুলাভাইয়ের ফটোকপির দোকান রয়েছে আমার। ভাগ্নি সাবা হাউজিং প্রাইমারি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণিতে লেখাপড়া করত। সার্ভিস লাইনের তারে ত্রুটি থাকায় বৃষ্টির পানিতে ওয়াশরুমের টিনের চাল বিদ্যুতায়িত হয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানান পশ্চিমাঞ্চল বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী অনুপম চক্রবর্তী।


প্রিন্ট