কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নইমুদ্দীন সেন্টু কে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা।
সোমবার (৩০ সেপ্টোম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ইউনিয়ন পরিষদে তার নিজ কার্যালয়ে এই হত্যা কান্ডের ঘটনা ঘটে।
নিহত নইমুদ্দীন সেন্টু ফিলিপনগর বাজারপাড়ার মৃত মুতালিব সরকারের ছেলে।
জানা গেছ, চেয়ারম্যান নইমুদ্দীন সেন্টু আগে বিএনপির রাজনীতি করলেও পরে আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত হন। দৌলতপুর থানার পুলিশের এসআই খসরু আলম হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ফিলিপনগর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব রাশিদুল ইসলাম বলেন, চেয়ারম্যান ইউনিয়ন পরিষদের অফিস কক্ষে বসে কাজ করছিলেন। আনুমানিক বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রথমে জানালা দিয়ে চেয়ারম্যানকে পেছন থেকে গুলি করা হয়। এরপর কক্ষে ঢুকে আবারও গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।
সন্ত্রাসীদের গুলিতে ফিলিপনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নঈমুদ্দিন সেন্টুর মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে চেয়ারম্যানের লোকজন দেশীয় অস্ত্রে সজ্বিত হয়ে অত্র এলাকায় বাড়ি-ঘর ভাংচুর, ও সশস্ত্র তান্ডলীলা চালায়। এসময় তিন টি বাড়িতে অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে দৌলতপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, প্রতিদিনের মতো সকালে ইউনিয়ন পরিষদের কর্যালয়ের নিজ কক্ষে বসে কাজ করছিলেন চেয়ারম্যান নইমুদ্দীন সেন্টু । বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চেয়ারের পেছনে থাকা জানালা দিয়ে দুর্বৃত্তরা তাকে কয়েক রাউন্ড গুলি করে। গুলির শব্দে স্থানীয়রা ছুটে গেলে তাদেরকেও লক্ষ্য করে গুলি চালায় সন্ত্রাসীরা। এরপর স্থানীয়রা চেয়ারম্যানের কক্ষে তালা মেরে রাখে। এ ঘটনার পর এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে চেয়ারম্যানের লোকজন ইউনিয়ন পরিষদে আসলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশকে ঘটনাস্থলে যেতে বেগ পেতে হয়। সাংবাদিকরা ছবি নিতে গেলে তাদের উপর চড়াও হয় একটি পক্ষ।
কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ কান্তি নাথ বলেন, চেয়ারম্যান নিজ কক্ষের চেয়ারেই বসে ছিলেন। তাকে পেছন থেকে জানালা দিয়ে গুলি করেছে দুর্বৃত্তরা। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। ওই এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। পুলিশ ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, বিএনপির রাজনীতি করলেও রাজনীতিতে তিনি নিস্ক্রিয় ছিলেন। আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে হাত মিলিয়ে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছেন। বিভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে তার সখ্যতা ছিল।
দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি রেজা আহমেদ বাচ্চু মোল্লা বলেন, চেয়ারম্যান নঈমুদ্দিন সেন্টু এক সময় উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ছিলেন। দীর্ঘদিন তিনি নিরপেক্ষ ছিলেন। রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন না।
এ বিষয়ে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মাহবুবুর রহমান বলেন, ইউপি সদস্যরা বলছিল , পূর্ব শত্রুতা ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। তবে ঘটনা তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে।
- আরও পড়ুনঃ ফের হাজতে সাবেক এমপি রমেশ চন্দ্র
এদিকে স্থানীয় সাংবাদিকরা এ ঘটনার সংবাদ, ভিডিও সংগ্রহ করতে গেলে তাদেরকে বাধা দেওয়া হয়।
প্রিন্ট