কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার বহল বাড়িয়া এলাকায় পদ্মার ভাঙনে জাতীয় বিদ্যুৎ সঞ্চালন গ্রিডের একটি টাওয়ার নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে টাওয়ারটি সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ে নদীতে। তবে আগে থেকেই বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়ায় বিদ্যুৎ সঞ্চালনায় কোনো প্রভাব পড়েনি।
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেডের (পিজিসিবি) ঈশ্বরদী সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম জানান, ঝুঁকি বিবেচনায় সপ্তাহখানেক আগে থেকেই ওই সঞ্চালন লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল।
পাউবোর কুষ্টিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান বলেন, টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে নদীতে ২ থেকে ৩ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। নদীর গতিপথ পরিবর্তনের কারণে নদীর ডান তীরে কুষ্টিয়ার অংশে ভাঙন বাড়ছে। ভাঙনকবলিত কয়েকটি স্থান শনাক্ত করা হয়েছে। সেখানে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। নদীতে এখন পানি বেশি। পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হবে। সব প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে আছে।
এলাকাবাসী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রতিবছরের মতো এবারও পদ্মার ভাঙনের কবলে পড়েছে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা ও মিরপুর উপজেলার চারটি ইউনিয়ন। চরম আতঙ্কে দিন কাটছে এলাকার হাজারো মানুষের। গত এক মাসে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে কয়েক শ হেক্টর ফসলি জমি। হুমকির মুখে পড়েছে বসতবাড়ি, সড়ক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ সুমন আলী বলেন, যে অবস্থা, যেকোনো সময় কুষ্টিয়া ঈশ্বরদী মহাসড়ক ভেঙে যাবে। গ্রামসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিলীন হয়ে যাবে। রাতে ঘুম আসে না। আমরা অসহায়। কেউ কিছু করছে না। প্রধান উপদেষ্টার কাছে খবরটা পৌঁছে দেন। ভাঙন রক্ষায় যেন দ্রুত কাজ শুরু করে।
টাওয়ারটি পদ্মায় বিলীন হওয়ার পরও বিদ্যুৎ সঞ্চালনে কোনো অসুবিধা হচ্ছে না বলে জানান এই প্রকৌশলী।
তিনি বলেন, এর আগে ভেড়ামারা থেকে রাজবাড়ীতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হতো। এখন বিকল্প হিসেবে ফরিদপুর থেকে রাজবাড়ীতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে।
এর আগে পদ্মার ভয়াবহ ভাঙনে কুষ্টিয়া ও ভেড়ামারা উপজেলার কয়েক শ’ হেক্টর ফসলিজমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে পড়েছে বসতঘর, কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী জাতীয় মহাসড়কও।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) শারমিন আখতার বলেন, নদীভাঙন হচ্ছে এটা সত্য। প্রায় দিনই সেখানে আন্দোলন হচ্ছে। স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানানো হয়েছে।
প্রিন্ট