ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় যৌতুকের টাকার জন্য ইলমা জামান (২৩) নামে গৃহবধূকে নির্যাতন ও শ্বাসরোধ করে হত্যা চেষ্টা করার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও শশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় স্বামী স্বপন শেখ (৩৮) তাঁর ছোট ভাই সিবাদুল শেখ ও তাদের মা-বাবাসহ পরিবারের ৫ জনের নামে মঙ্গলবার রাতে মামলা দিয়েছেন ইলমা জামানের পিতা ইকরামুজ্জামান মোল্যা। ওই দিন রাতেই স্বামী স্বপন শেখকে আটক করেছে পুলিশ।
লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, পাঁচ বছর আগে কাশিয়ানী উপজেলার বরাশুর গ্রামের ইকরামুজ্জামান মোল্যার মেয়ে ইলমা জামানের সাথে বিবাহ হয় আলফাডাঙ্গা উপজেলার কুমুরতিয়া গ্রামের কুবাদ শেখের ছেলে কাঠ মিস্ত্রি স্বপন শেখের সাথে সামাজিক ভাবে বিবাহ হয়। দুই বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তান তাদের। বিয়ের পর থেকে স্বামী স্বপন শেখ ও তার পরিবারের লোকজন যৌতুকের জন্য চাপ দেয়। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে পর্যায়ক্রমে সাড়ে ৪ লাখ টাকা যৌতুক ও মালামাল উপহার হিসেবে দেন। এর পরেও স্বামীর বাড়ির লোকজন তাঁর ওপর নির্যাতন অব্যহত রাখে।
চলতি বছরের (৪ মে) যৌতুকের জন্য খুব মারধর করে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় ইলমাকে। ওই সময় অসুস্থ ইলমাকে তাঁর পরিবারের লোকজন ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা করান। এ ঘটনায় স্থানীয় ভাবে সালিস-মীমাংসার মাধ্যমে নিস্পত্তি হয়। সেখানে শর্ত থাকে ইলমাকে কখনো যৌতুকের জন্য নির্যাতন করবে না স্বামীর বাড়ির লোকজন। এরপর কিছু দিন ভালোভাবে চলে তাদের সংসার। পরবর্তীতে যৌতুকের জন্য আবারও নির্যাতন শুরু করে। গত (১৬ সেপ্টেম্বর) সোমবার সকালে স্বামীসহ পরিবারের লোকজন এক লাখ টাকার যৌতুকের জন্য মারধর করে, শ্বাসরোধ করে হত্যা চেষ্টা চালায়। খবর পেয়ে বাবার বাড়ির লোকজন ইলামাকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে কাশিয়ানী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
স্বামী স্বপন শেখ জানান, আমার স্ত্রীকে কখনোই যৌতুকের জন্য মারধর করা হয়নি। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। পরিবারের লোকজন যৌতুক চাওয়া ও নির্যাতনের ঘটনা অস্বীকার করেন।
আলফাডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সেলিম রেজা জানান, নারী নির্যাতন মামলায় স্বপন শেখকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। বাকি আসামীদের গ্রেপ্তার করার জন্য তৎপর রয়েছে পুলিশ।