বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপে কারণে ভারি বৃষ্টিপাতে যশোর পৌর শহরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। সেসব এলাকায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। টানা বর্ষণে দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ন আয় ও জলাবদ্ধ এলাকার মানুষ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জেলার ১৪০ হেক্টর জমির আগাম শীতকালীন সবজির ক্ষেত। গতকাল শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টা থেকে রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টা পর্যন্ত এ জেলায় ১৪০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে যশোর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিস। বৃষ্টিপাতের এই ধারা অব্যাহত থাকার পূর্বাভাস রয়েছে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্মচাপের কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার থেকেই যশোরে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। কখনো ভারী, কখনো হালকা এই বৃষ্টিপাত শনিবার বিকেল পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত যশোরে ১০৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃষ্টিপাতের এই ধারা অব্যাহত থাকার পূর্বাভাস রয়েছে।
এদিকে রবিবার সকাল থেকে যশোর শহর ঘুরে দেখা গেছে, ভারী বর্ষণে তলিয়ে গেছে যশোর পৌর এলাকার নিম্নাঞ্চল। বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে শহরের বেজপাড়া, টিবি ক্লিনিকপাড়া, স্টেডিয়ামপাড়া, মোল্লাপাড়া, শংকরপুর, মিশনপাড়া, উপশহর, চাঁচড়া, কারবালা, এমএম কলেজ এলাকা, নাজিরশংকরপুর, বকচর, আবরপুরসহ বেশ কয়েকটি এলাকার অধিকাংশ সড়ক। এসব এলাকার ড্রেন ছাপিয়ে উপচে পড়া পানি সড়ক পার হয়ে ঘরের মধ্যেও ঢুকে পড়েছে। জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে এসব এলাকার মানুষেরা। ভেসে গেছে বিভিন্ন এলাকার পুকুর ও মাছের ঘের।
যশোর পৌরসভার ৫, ৬ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডে অনেক মানুষের বসতঘরে পানি ঢুকেছে। জলাবদ্ধতায় তীব্র ভোগান্তিতে পড়েছেন ওইসব ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। পৌর এলাকার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের শংকরপুর চোপদারপাড়া এলাকার বাসিন্দা জাহিদুল ইসলাম জানান, তাদের গোটা এলাকা পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বাড়িঘরে পাানি উঠেছে। ঘরের ভেতরে হাঁটু পানি। আগে ড্রেনের মাধ্যমে এই পানি হরিণার বিলে নেমে যেতো। এখন সেখানে বড় বড় বিল্ডিং হওয়ায় ড্রেন বন্ধ হয়ে গেছে। পানি নামতে পারছে না। শহরের পানি এই এলাকায় এসে জমা হচ্ছে।
এদিকে টানা ভারি বর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যশোর জেলায় বিভিন্ন এলাকার আগাম শীতকালীন সবজির ক্ষেত। যোগাযোগ করা হলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের উপ- পরিচালক ড. সুশান্ত কুমার তরফদার বলেন, ‘শনিবার থেকে শুরু হওয়া ভারী বর্ষণে যশোর জেলার ১৪০ হেক্টর সবজির খেত পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এসব খেতে কৃষকেরা আগাম শীতকালীন সবজি যেমন- টমেটো, পাতাকপি, ফুলকপি ও পালংশাক চাষাবাদ করেছিলেন।’
- আরও পড়ুনঃ তানোরে টানা বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত
তিনি আরও বলেন, ‘এখন পর্যন্ত শতকরা ২৫ ভাগ কৃষি জমি বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে ক্ষতির পরিমাণ আরো বৃদ্ধি পাবে। সারাদেশে মোট সবজি চাহিদার প্রায় ৭০ ভাগ যশোর জেলা থেকে চাষাবাদ করে সরবরাহ করেন কৃষকেরা।’
|