ঢাকা , রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo বালিয়াকান্দির ‘উকুন খোটা’ স্কুল এখন দেশসেরা হওয়ার অপেক্ষায় Logo তানোরের নারায়নপুর স্কুলে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান Logo বাঘায় গলা কেটে হত্যা, নিহতের ভাইরা ভাই রায়হান গ্রেপ্তার Logo গোপালগঞ্জে দূর্নীতি ও প্রতারণা করা সেই ত্রাণ কর্মকর্তার তদন্ত শুরু Logo কুষ্টিয়ায় জেল পলাতক আসামি রুবেল গ্রেফতার Logo আলফাডাঙ্গা প্রেসক্লাবসহ সেবাদান প্রতিষ্ঠানের পাশে দাঁড়ালেন আদিত্য ফাউন্ডেশন Logo ফরিদপুর জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক শামীম তালুকদার গ্রেপ্তার Logo এবার ২১ দিনের মধ্যে জবাব দিতে আদানিকে সমন পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র Logo মাগুরা শ্রীপুরে মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী গ্রেফতার Logo রাশিয়ার কুরস্কে ৪০ শতাংশ এলাকার দখল হারিয়েছে ইউক্রেন
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

৫০ লাখ টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ সাবেক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে

ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের বিভিন্ন ফান্ডের টাকা শূন্য করে ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিশ্বনাথ রায়ের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ করেছেন মো. আব্দুর রহমান নামে এক অভিভাবক।

 

দুদকে অভিযোগ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঠাকুরগাঁওয়ের উপ-পরিচালক তাহসিন মুনাবীল হক।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক বলেন, সাবেক এই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিশ্বনাথ রায় ১৯৯৪ সালে  সহকারী শিক্ষক পদে যোগদান করেন। ২০২৪ সালের ১৬ ই জানুয়ারি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পদে বসে এবং ৫ ই মে পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। তাই এ তিন মাসের ব্যবধানে বিদ্যালয়ের ফান্ড থেকে এত টাকা উত্তোলন করাকে নজিরবিহীন ঘটনা বলে মনে করছেন প্রতিষ্ঠানটির অনেক শিক্ষক ।

বিভিন্ন তথ্য মতে জানা যায়,  বিদ্যালয়ের বিভিন্ন ফান্ড হতে ৪০ হতে ৫০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন সাবেক এই প্রধান শিক্ষক।  বিদ্যালয়ের সবগুলো ফান্ড এখন প্রায় শূন্য। বিদ্যালয়ের মাস্টার রোলের কর্মচারী ও মসজিদের ইমাম-মোয়াজ্জেনের বেতন দিতে পারছেন না বর্তমান প্রধান  শিক্ষক।

 

খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, পৌর শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সততা প্রিন্টিং প্রেস, তাতীপাড়ায় বুক সেন্টার ও চৌরাস্তায় অবস্থিত ডেকোরেশনের দোকানে বিদ্যালয়ের নামে কয়েক লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে।

 

বিদ্যালয়টির বর্তমান প্রধান শিক্ষক মতাহার উল আলম  বলেন, তিনি ফান্ডের টাকা থেকে কাজ করার কথা বলেছেন ৷ তবে আমাকে ভাউচার জমা দেননি ৷ আমি যখন চার্জ বুঝে পাই তখন বিভিন্ন ফান্ডে প্রায় ৮ লাখ টাকা পেয়েছি। ফান্ডে টাকা কম থাকায় মাষ্টার রোলে কর্মচারীদের বেতন দেয়া সম্ভব হচ্ছে না ৷ আর বিদ্যালয়ের কেনাকাটার অনেক বকেয়া রয়েছে বিভিন্ন দোকানে। আমি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি ফান্ডিং বাড়ানোর জন্য ৷

 

প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিশ্বনাথ রায়ের বিরুদ্ধে আনা টাকা আত্মসাতের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিদ্যালয়ের ছাত্রদের আন্দোলনের তোপের মুখে বর্তমান প্রধান শিক্ষক মতাহার  উল আলমের আদেশে একজনকে আহ্বায়ক করে নয় সদস্যের একটি ইন্টারনাল অডিট টিম গঠন করা হয়েছে।

 

অডিট টিম আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক দায়িত্বে আসার পর ক্ষমতা নেওয়া থেকে বর্তমান প্রধান শিক্ষকের নিকট ক্ষমতা হস্তান্তরের আগ পর্যন্ত ব্যাংক স্টেটমেন্টের ভিত্তিতে সকল আয় ব্যায়ের হিসাব বের করার নির্দেশ দিয়েছেন। উল্লেখ্য যে, প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিশ্বনাথ রায় বর্তমান পিআরএল ভোগ করছেন।

 

অভিযুক্ত সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিশ্বনাথ রায়ের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ অভিযোগটি সত্য না। আমি বিদ্যালয়ের অনেক গুলো কাজ করেছি। বিদ্যালয়ের রাজা স্যার এসব বিষয়ে সবকিছু অবগত রয়েছেন ৷ তাকে জিজ্ঞেস করলে জানতে পারবেন ৷

 

দুদকের জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক তাহসিন মুনাবীল হক বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি হেড অফিসে পাঠানো হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে ৷

 

বিদ্যালয়টির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মাহবুবর রহমান বলেন, আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে আমাদের কাছে প্রতিষ্ঠানের কোন ফাইল আসে না। সে কারনে এ বিষয়ে জানার বা বলার কোন সুযোগ নেই ৷

 

 

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা রংপুর অঞ্চলের উপ-পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমাদের কেউ জানাননি বা অভিযোগ করেননি। শুনেছি তিনি অবসরে চলে গেছেন। তবে অভিযোগের সত্যতা পেলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব ৷


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

বালিয়াকান্দির ‘উকুন খোটা’ স্কুল এখন দেশসেরা হওয়ার অপেক্ষায়

error: Content is protected !!

৫০ লাখ টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ সাবেক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে

আপডেট টাইম : ০২:৫৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
জসীমউদ্দীন ইতি, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি :

ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের বিভিন্ন ফান্ডের টাকা শূন্য করে ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিশ্বনাথ রায়ের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ করেছেন মো. আব্দুর রহমান নামে এক অভিভাবক।

 

দুদকে অভিযোগ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঠাকুরগাঁওয়ের উপ-পরিচালক তাহসিন মুনাবীল হক।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক বলেন, সাবেক এই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিশ্বনাথ রায় ১৯৯৪ সালে  সহকারী শিক্ষক পদে যোগদান করেন। ২০২৪ সালের ১৬ ই জানুয়ারি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পদে বসে এবং ৫ ই মে পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। তাই এ তিন মাসের ব্যবধানে বিদ্যালয়ের ফান্ড থেকে এত টাকা উত্তোলন করাকে নজিরবিহীন ঘটনা বলে মনে করছেন প্রতিষ্ঠানটির অনেক শিক্ষক ।

বিভিন্ন তথ্য মতে জানা যায়,  বিদ্যালয়ের বিভিন্ন ফান্ড হতে ৪০ হতে ৫০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন সাবেক এই প্রধান শিক্ষক।  বিদ্যালয়ের সবগুলো ফান্ড এখন প্রায় শূন্য। বিদ্যালয়ের মাস্টার রোলের কর্মচারী ও মসজিদের ইমাম-মোয়াজ্জেনের বেতন দিতে পারছেন না বর্তমান প্রধান  শিক্ষক।

 

খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, পৌর শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সততা প্রিন্টিং প্রেস, তাতীপাড়ায় বুক সেন্টার ও চৌরাস্তায় অবস্থিত ডেকোরেশনের দোকানে বিদ্যালয়ের নামে কয়েক লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে।

 

বিদ্যালয়টির বর্তমান প্রধান শিক্ষক মতাহার উল আলম  বলেন, তিনি ফান্ডের টাকা থেকে কাজ করার কথা বলেছেন ৷ তবে আমাকে ভাউচার জমা দেননি ৷ আমি যখন চার্জ বুঝে পাই তখন বিভিন্ন ফান্ডে প্রায় ৮ লাখ টাকা পেয়েছি। ফান্ডে টাকা কম থাকায় মাষ্টার রোলে কর্মচারীদের বেতন দেয়া সম্ভব হচ্ছে না ৷ আর বিদ্যালয়ের কেনাকাটার অনেক বকেয়া রয়েছে বিভিন্ন দোকানে। আমি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি ফান্ডিং বাড়ানোর জন্য ৷

 

প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিশ্বনাথ রায়ের বিরুদ্ধে আনা টাকা আত্মসাতের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিদ্যালয়ের ছাত্রদের আন্দোলনের তোপের মুখে বর্তমান প্রধান শিক্ষক মতাহার  উল আলমের আদেশে একজনকে আহ্বায়ক করে নয় সদস্যের একটি ইন্টারনাল অডিট টিম গঠন করা হয়েছে।

 

অডিট টিম আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক দায়িত্বে আসার পর ক্ষমতা নেওয়া থেকে বর্তমান প্রধান শিক্ষকের নিকট ক্ষমতা হস্তান্তরের আগ পর্যন্ত ব্যাংক স্টেটমেন্টের ভিত্তিতে সকল আয় ব্যায়ের হিসাব বের করার নির্দেশ দিয়েছেন। উল্লেখ্য যে, প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিশ্বনাথ রায় বর্তমান পিআরএল ভোগ করছেন।

 

অভিযুক্ত সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিশ্বনাথ রায়ের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ অভিযোগটি সত্য না। আমি বিদ্যালয়ের অনেক গুলো কাজ করেছি। বিদ্যালয়ের রাজা স্যার এসব বিষয়ে সবকিছু অবগত রয়েছেন ৷ তাকে জিজ্ঞেস করলে জানতে পারবেন ৷

 

দুদকের জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক তাহসিন মুনাবীল হক বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি হেড অফিসে পাঠানো হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে ৷

 

বিদ্যালয়টির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মাহবুবর রহমান বলেন, আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে আমাদের কাছে প্রতিষ্ঠানের কোন ফাইল আসে না। সে কারনে এ বিষয়ে জানার বা বলার কোন সুযোগ নেই ৷

 

 

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা রংপুর অঞ্চলের উপ-পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমাদের কেউ জানাননি বা অভিযোগ করেননি। শুনেছি তিনি অবসরে চলে গেছেন। তবে অভিযোগের সত্যতা পেলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব ৷


প্রিন্ট