ঢাকা , সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

ডাক্তারের অভাবে ৭ বছরে শুরু হয়নি এনজিওগ্রাম ও হার্টের রিং স্থাপনের চিকিৎসা

একজন হার্টের রোগীর পূর্নাঙ্গ সেবা দেওয়ার জন্য সিসিইউ, আইসিইউ, ক্যাথল্যাবসহ প্রয়োজনীয় সকল সুবিধা থাকলেও শুধু একজন ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিষ্ট চিকিৎসক ও টেকনিশিয়ান না থাকায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৭ বছরেও শুরু হয়নি এনজিওগ্রাম ও হার্টের রিং স্থাপনের চিকিৎসা।

ফলে ফরিদপুর, রাজবাড়ী, মাদারীপুর, শরিয়তপুরসহ আশে পাশের জেলার হাজার হাজার দরিদ্র রোগী অসহায় রোগীরা সরকারি ভাবে হার্টের উন্নত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

 

এদিকে ফরিদপুর মেডিকেলে অবকাঠামোগত উন্নয়নে বাইরে চকচক করলেও ভিতরে অনেকটা রহস্যে ঘেরা। কোটি কোটি টাকার ভবন আর অর্ধশত কোটি টাকার চিকিসার কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ব্যবহার হচ্ছে না বছরের পর বছর। বক্সবন্দী পরে থেকে অনেক মালামাল নষ্টও হচ্ছে। তবে এগুলো কারো যেন কোন মাথা ব্যাথা নেই।

 

২০১৭ সালে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৭৫ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে সে সময়ে বহু আলোচিত পর্দ্দা কেলেঙ্কারির কালো তালিকা ভূক্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আহম্মেদ এন্টার প্রাইজ। জাতীয় বক্ষব্যাধী ইনষ্টিটিউট ও হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তার সাজ্জাদ মুন্সীর ওই প্রতিষ্ঠান থেকে ৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা মূল্যের ক্যাথল্যাব, ২৩ কোটি ৮৯ লাখ টাকা মূল্যের এমআরআই মেশিণ, ৪ কোটি ৮২ লাখ টাকা মূল্যের ডিজিটাল এক্সরে মেশিন, রেডিও থেরাপী মেশিণসহ অর্ধশত কোটি টাকার যন্ত্রপাতি রোগীদের কোন কাজে আসছে না।

 

ফলে হার্টের সমস্যা নিয়ে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রোগীরা এনজিওগ্রাম বা হার্টে রিং স্থাপন করতে পারছেন না। যারা সমস্যা নিয়ে ভর্তি হন তাদের বাধ্য আশে পাশে গড়ে উঠা বিভিন্ন ক্লিনিকি ও হাসপাতাল গুলোতে অধিক টাকায় সেবা নিতে বাধ্য হচ্ছে। কেউ কেউ অর্থভাবে চিকিৎসা নিতে না পেরে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। ফলে বিনা চিকিৎসায় অনেকের মৃত্যু হচ্ছে। অথচ সরকারিভাবে এই সেবা চালু করা গেলে সল্প খরচে রোগীরা সেবা নিতে পারতেন।
নারী নেত্রী ও সুশীল নাগরিক অ্যাডভোকেট শিপ্্রা গোস্বামী বলেন, আশাকরি যথাযত কৃর্তপক্ষ দ্রত ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শূনপদ গুলোতে চিকিসক নিয়োগে তৎপর হবেন। এতে করে জেলার কয়েক লক্ষ মানুষের সঠিক ও দ্রুত চিকিৎসা নিশ্চিত হবে।

 

ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি কবিরুল ইসলাম সিদ্দিকী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অবকাঠামো ও যন্ত্রপাতি ক্রয়ের নামে গত কয়েক বছর সেখানে ব্যাপক কমিশন বানিজ্য লুটপাট হয়েছে। শত শত কোটি টাকা ব্যয়ে ভবন ও চিকিৎসা সরঞ্জাম কিনলেও তার গুনগতমান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। যার ফলে এসব যন্ত্রপাতি দিয়ে রোগীর সেবা দিতে পারছে না।

 

তিনি বলেন, হাসপাতালের ব্যবস্থাপনাও ব্যাপক অনিয়ম রয়েছে যার কারণে এই হাসপাতালে রোগীরা প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছে। আমরা ফরিদপুরবাসী এর থেকে পরিত্রাণ চাই।

 

হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. কামালউদ্দিন আহম্মেদ বলেন,আমাদের হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগে দীর্ঘদিন অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, রেজিষ্টার, সহকারীসহ বেশ কয়েকটি পদ শূন্য রয়েছে। একজন বিশেষজ্ঞ ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিষ্ট চিকিৎসক ও টেকনিশিয়ান হলেই আমরা আমাদের হাসপাতালে হার্টের এনজিওগ্রাম ও রিং স্থাপনের মতো উন্নত চিকিৎসা শুরু করতে পারি।

 

 

তবে এসব বিষয়ে কথা বলতে হাসপাতালের পরিচাল ডা. হুমায়ূন কবিরকে একাধিক বার তার মুঠোফোনে কল করে পাওয়া যায়নি।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

error: Content is protected !!

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

ডাক্তারের অভাবে ৭ বছরে শুরু হয়নি এনজিওগ্রাম ও হার্টের রিং স্থাপনের চিকিৎসা

আপডেট টাইম : ০২:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
সময়ের প্রত্যাশা ডেস্ক রিপোর্ট :

একজন হার্টের রোগীর পূর্নাঙ্গ সেবা দেওয়ার জন্য সিসিইউ, আইসিইউ, ক্যাথল্যাবসহ প্রয়োজনীয় সকল সুবিধা থাকলেও শুধু একজন ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিষ্ট চিকিৎসক ও টেকনিশিয়ান না থাকায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৭ বছরেও শুরু হয়নি এনজিওগ্রাম ও হার্টের রিং স্থাপনের চিকিৎসা।

ফলে ফরিদপুর, রাজবাড়ী, মাদারীপুর, শরিয়তপুরসহ আশে পাশের জেলার হাজার হাজার দরিদ্র রোগী অসহায় রোগীরা সরকারি ভাবে হার্টের উন্নত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

 

এদিকে ফরিদপুর মেডিকেলে অবকাঠামোগত উন্নয়নে বাইরে চকচক করলেও ভিতরে অনেকটা রহস্যে ঘেরা। কোটি কোটি টাকার ভবন আর অর্ধশত কোটি টাকার চিকিসার কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ব্যবহার হচ্ছে না বছরের পর বছর। বক্সবন্দী পরে থেকে অনেক মালামাল নষ্টও হচ্ছে। তবে এগুলো কারো যেন কোন মাথা ব্যাথা নেই।

 

২০১৭ সালে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৭৫ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে সে সময়ে বহু আলোচিত পর্দ্দা কেলেঙ্কারির কালো তালিকা ভূক্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আহম্মেদ এন্টার প্রাইজ। জাতীয় বক্ষব্যাধী ইনষ্টিটিউট ও হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তার সাজ্জাদ মুন্সীর ওই প্রতিষ্ঠান থেকে ৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা মূল্যের ক্যাথল্যাব, ২৩ কোটি ৮৯ লাখ টাকা মূল্যের এমআরআই মেশিণ, ৪ কোটি ৮২ লাখ টাকা মূল্যের ডিজিটাল এক্সরে মেশিন, রেডিও থেরাপী মেশিণসহ অর্ধশত কোটি টাকার যন্ত্রপাতি রোগীদের কোন কাজে আসছে না।

 

ফলে হার্টের সমস্যা নিয়ে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রোগীরা এনজিওগ্রাম বা হার্টে রিং স্থাপন করতে পারছেন না। যারা সমস্যা নিয়ে ভর্তি হন তাদের বাধ্য আশে পাশে গড়ে উঠা বিভিন্ন ক্লিনিকি ও হাসপাতাল গুলোতে অধিক টাকায় সেবা নিতে বাধ্য হচ্ছে। কেউ কেউ অর্থভাবে চিকিৎসা নিতে না পেরে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। ফলে বিনা চিকিৎসায় অনেকের মৃত্যু হচ্ছে। অথচ সরকারিভাবে এই সেবা চালু করা গেলে সল্প খরচে রোগীরা সেবা নিতে পারতেন।
নারী নেত্রী ও সুশীল নাগরিক অ্যাডভোকেট শিপ্্রা গোস্বামী বলেন, আশাকরি যথাযত কৃর্তপক্ষ দ্রত ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শূনপদ গুলোতে চিকিসক নিয়োগে তৎপর হবেন। এতে করে জেলার কয়েক লক্ষ মানুষের সঠিক ও দ্রুত চিকিৎসা নিশ্চিত হবে।

 

ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি কবিরুল ইসলাম সিদ্দিকী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অবকাঠামো ও যন্ত্রপাতি ক্রয়ের নামে গত কয়েক বছর সেখানে ব্যাপক কমিশন বানিজ্য লুটপাট হয়েছে। শত শত কোটি টাকা ব্যয়ে ভবন ও চিকিৎসা সরঞ্জাম কিনলেও তার গুনগতমান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। যার ফলে এসব যন্ত্রপাতি দিয়ে রোগীর সেবা দিতে পারছে না।

 

তিনি বলেন, হাসপাতালের ব্যবস্থাপনাও ব্যাপক অনিয়ম রয়েছে যার কারণে এই হাসপাতালে রোগীরা প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছে। আমরা ফরিদপুরবাসী এর থেকে পরিত্রাণ চাই।

 

হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. কামালউদ্দিন আহম্মেদ বলেন,আমাদের হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগে দীর্ঘদিন অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, রেজিষ্টার, সহকারীসহ বেশ কয়েকটি পদ শূন্য রয়েছে। একজন বিশেষজ্ঞ ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিষ্ট চিকিৎসক ও টেকনিশিয়ান হলেই আমরা আমাদের হাসপাতালে হার্টের এনজিওগ্রাম ও রিং স্থাপনের মতো উন্নত চিকিৎসা শুরু করতে পারি।

 

 

তবে এসব বিষয়ে কথা বলতে হাসপাতালের পরিচাল ডা. হুমায়ূন কবিরকে একাধিক বার তার মুঠোফোনে কল করে পাওয়া যায়নি।


প্রিন্ট