খাবারে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে একই পরিবারের পাঁচজনকে অজ্ঞান করে এক বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটেছে। বুধবার সন্ধ্যায় ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা পৌরসভার মিঠাপুর গ্রামে হেমায়েত শেখের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় অসুস্থ পাঁচজনকে আলফাডাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লে´ে ভর্তি করা হয়েছে। অসুস্থরা হলেন- বাড়ির প্রধান কর্তা হেমায়েত শেখ, তার স্ত্রী বেবি বেগম, মেয়ে হিরা মনি, ছেলে বিপ্লব শেখ ও ৮ বছরের শিশু সন্তান মুজাহিদ শেখ।
হেমায়েত শেখের স্ত্রী বেবি বেগম জানান, বুধবার দুপুরে রান্না করে খাবার টেবিলে রেখে ননদের বাসায় তরকারি দিতে যায়। কিছুক্ষণপর আমরা পরিবারের সবাই দুপুরে খাবার খাই একসাথে। আমরা কখন যে অজ্ঞান হয়ে পড়েছি জানি না। রাতে যখন জ্ঞান ফেরে তখন আমারা হাসপাতালে ভর্তি। জানতে পেরেছিলাম আমাদের পাশের বাড়ির লোকজন আমাদের না দেখে সন্ধ্যার দিকে হাঁকডাক শুরু করে। তখন আমাদের সাড়াশব্দ না থাকায় ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে দেখতে পায় আমরা অচেতন হয়ে পড়ে আছি।
হাসপাতালে শুয়ে সকালে খবর পেলাম আমার শাশুড়িকে বেঁধে রেখে বাড়ির সবকিছু চুরি করে নিয়েছে চোরেরা। ঘরে থাকা দেড় ভরি স্বর্ণলঙ্কার, নগদ টাকা, তিনটি মোবাইল ও কাপড়সহ মোট প্রায় তিন লক্ষ টাকার মালামাল চুরি করে নিয়েছে চোরেরা।
হেমায়েত শেখের মা রিজিয়া বেগম (৬৫) জানান, হেমায়েতের পরিবারের সবাইকে যখন হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ওই দিন রাতে তার ঘরে ছিলাম।
মাঝ রাতে ৮ থেকে ১০ জনের মুখোশ পরা একদল লোক এসে আমার হাত বেঁধে ফেলে। আমার সামনে অস্ত্র ধরে রাখে যাহাতে আমি চিৎকার করতে না পারি। চোরেরা সব কিছু চুরি করে পালিয়ে গেলে আমি চিৎকার দিলে পাশের বাড়ির লোকজন এগিয়ে আসে।
আলফাডাঙ্গা পৌসভার ৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো.শাহাবুল জানান, হেমায়েত শেখ আমাদের প্রতিবেশি। সন্ধ্যার সময় খবর পেলাম তাদের পরিবারের পাঁচজন সদস্য চেতনানাশক খাবার খেয়ে অজ্ঞান হয়ে আছে। পরবর্তীতে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে। হেমায়েতের ছোট ভাই বদিয়ার ও আমাকে বলে যায় একই পরিবারের সবাইকে যখন চেতনানাশক কিছু খেয়ে অজ্ঞান করেছে। বাড়িতে ভালো করে পাহারা বসাতে। আমি তাদের বলেছিলাম তাদের ঘরে তালা মেরে পাহারা দিতে। কিন্তু সেই ঘরে ছিল হেমায়েতের মা। সুনেছি অজ্ঞাত কিছু লোকজন তার মাকে বেঁধে বাড়ির মালামাল চুরি করে নিয়েছে।
আলফাডাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরি পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নাজমুল হাসান বলেন, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া একই পরিবারের ৫ জন
সদস্য বর্তমানে সুস্থ রয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে খাবারে চেতনানাশক কিছু মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আলফাডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সেলিম রেজা বলেন, বুধবার সন্ধ্যায় ঘটনা ঘটার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। হেমায়েত শেখের ভাই ও স্থানীয় কাউন্সিলরকে বলে আসা হয়েছে যেহেতু অজ্ঞান পাটি এটা করেছে নিশ্চই তাদের কোনো উদ্দেশ্যে থাকতে পারে। রাতে বাড়িতে ভাল করে পাহারা দেওয়ার জন্য বলা হয়। তাহার সেটা না করে এক বৃদ্ধাকে রেখেছে বাড়িতে। সুনেছি গভীর রাতে ওই ঘরে প্রবেশ করে স্বর্ণলংকার, তিনটি মোবাইল ও টাকা চুরি করে নিয়েছে।
প্রিন্ট