গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর যশোরে কোন হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কিংবা মন্দিরে হামলা হয়নি। গত ১৭ বছরে যেটুকু হয়েছে তা অতি উৎসাহীদের কারণে। এখন যারা সংখ্যালঘু নির্যাতন হচ্ছে বলে প্রতিবাদ করছে ৫ আগস্টের পর চারদিন তারা কোথায় ছিল? হিন্দুদের রক্ষার জন্য তারা কাদের সাথে কথা বলেছিল।
আমাদের সংগঠন বিভিন্ন জায়গায় কথা বলেছে। বেশিরভাগ জায়গায় আওয়ামী লীগের সমর্থক এক গ্রুপের হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন আরেক গ্রুপের বাড়িঘরে হামলা করেছে। বরং বিএনপি জামায়াতের লোকজন পাহারা দিয়ে হিন্দুদের সুরক্ষা দিয়েছে। রোববার (১১ আগস্ট) বিকালে যশোর শহরের দড়াটানা ভৈরব চত্ত্বরে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের সম্প্রীতি সমাবেশে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সংসদের ভাইস চেয়ারম্যান ও যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি দেবাশীষ দাস সভাপতির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
অ্যাড. দেবাশীষ দাস আরো বলেন, পার্শ্ববর্তী একটি দেশের কিছু মিডিয়া সংখ্যালঘু নির্যাতনের জিগির তুলছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, যখন ভারতে বাবরী মসজিদ ভাঙা হয়েছিল তখনো যশোরে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন হয়নি। বরাবরই একটি দল ও তাদের সমর্থকরা হিন্দুদেরই নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে আসছে। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, গুজবে ভীত হয়ে তার পরিচিত ঝিনাইদহ এবং সাতক্ষীরার তালার দু’পরিবার অন্যত্র গিয়ে আশ্রয় নেয়। তাদের বাড়িঘর মুসলিমরা পাহারা দিয়ে রাখে এবং তাদের নিয়ে বাড়িতে তারাই পৌঁছে দেয়। বিভিন্ন জায়গায় এখনো মুসলিমরা হিন্দুদের বাড়ি পাহারা দিচ্ছে।
দেবাশীষ দাস বলেন, যারা লুটপাট করে এরা কোনো দলের হতে পারে না। এরা দুষ্কৃতিকারী। তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে অনুরোধ করে বলেন, দয়া করে কেউ অসত্য তথ্য প্রচার করবেন না। এটি খুবই ভয়ংকর। এটির মাধ্যমে বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের যুগ্ম মহাসচিব বাবু নির্মল বিট বলেন, গত ১৭ বছর বিভিন্ন সময় হিন্দুদের ওপর হামলা হয়েছে তখন কারো মাথাব্যথা ছিল না। এখন হাতেগোনা কোনো কোনো সংগঠনের নেতাদের সংখ্যালঘুদের প্রতি দরদ উতলে পড়ছে। যখন বিশ্বজিৎকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল তখন তারা কোথায় ছিল। বর্তমানে কিছু লোক হিন্দু সম্প্রদায়কে বিভক্ত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্ট যশোর জেলার সাবেক আহ্বায়ক অধ্যাপক অলোক কুমার ঘোষ সংখ্যালঘু নির্যাতনের উদাহরণ দিতে গিয়ে বলেন, বাঘারপাড়ার ভাঙ্গুড়া কলেজের অধ্যক্ষ আওয়ামী লীগ নেতা নিখিল আঢ্যের কারণে আওয়ামী লীগের আরেকটি গ্রুপের হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন চরম ক্ষুব্ধ ছিল। তারাই ৫ আগস্টের পর অপর গ্রুপের সুবিধাভোগীদের বাড়ি ভাঙচুর করেছে। আর তার দায় চাপাচ্ছে অন্যদের ওপর। যারা অতি উৎসাহী হয়ে অন্যদের নির্যাতন করেছে তারাই এখন কমবেশি সেটা ফেরত পাচ্ছে।
- আরও পড়ুনঃ সাংবাদিক ফারুক হোসেন আর নেই !
সংগঠনের মণিরামপুর থানার নেতা অরূপ মিত্র বলেন, মণিরামপুরে বিএনপি জামায়াতের নেতারা পাহারা দিয়ে হিন্দুদের সুরক্ষা দিচ্ছেন। অথচ তাদের দেখাশোনার জন্য তিনটি সংগঠন রয়েছে। তারা কী কাজ করেছে।
প্রিন্ট