জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বলেছেন আমরা ভুল করেছি, ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শেষ সময়ে কুষ্টিয়ায় একটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। কয়েকজন মারা গেছেন। এটা আশা করিনি। সব মিলিয়ে একটা ক্রান্তিকাল পার করছি। এটা থেকে বের হতে সেনাবাহিনী একা পারবে না। আপনাদের সহযোগিতা দরকার।’
বৃহস্পতিবার বিকেলে কুষ্টিয়ায় এক মতবিনিময় সভায় যশোর সেনানিবাসের ৫৫ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মোহাম্মদ মাহবুবুর রশীদ এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, এখন ভেঙে পড়ার সময় না, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সবাই কাজ করে যাব। আগামীর ভোরটা হবে নতুন ভোর।
বিকেলে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিশেষ সভায় মাহবুবুর রশীদ উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন। এ সময় সেখানে জেলা প্রশাসক মো. এহেতেশাম রেজা, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য সোহরাব উদ্দীন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সরকার, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি সুজা উদ্দীন, জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার জামিল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুষ্টিয়ার সমন্বয়ক তৌকির আহমেদ, কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি আল মামুন সাগর, টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আনিসুজ্জামান ডাবলুসহ কয়েকটি সরকারি দপ্তরের প্রধানেরা উপস্থিত ছিলেন।
জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সরকার বলেন, পুলিশকে যত দ্রুত সম্ভব অ্যাকটিভ হতে হবে।
সেখানে জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার জামিল বলেন, ছাত্রদের এই অর্জন যাতে কোনোভাবেই কোনো রাজনৈতিক দলের কাছে চুরি হয়ে না যায়, সে ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে।
বিভিন্ন গ্রামে হামলা ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটছে জানিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুষ্টিয়ার সমন্বয়ক তৌকির আহমেদ বলেন, এগুলো প্রতিরোধে এই মুহূর্ত থেকে সেনাবাহিনীর টহল জোরদার করতে হবে।
জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি সুজা উদ্দীন বলেন, যারা কুষ্টিয়ায় শহীদ হয়েছেন, তাদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আগামী দিনে কুষ্টিয়াকে সুন্দর করে সাজাতে কাজ করা হবে।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সোহরাব উদ্দীন বলেন, বিভিন্ন জায়গায় হাট, ঘাট, জমি দখলের খবর শোনা যাচ্ছে। লুটতরাজ হচ্ছে। এতে যদি আমাকেও সম্পৃক্ত থাকতে প্রমাণ পাওয়া যায়, তবে আমার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেন। যাকে পাবেন তাকে ধরে নিয়ে আসেন।
জেলা প্রশাসক এহেতেশাম রেজা বলেন, আমিও সবার পক্ষ থেকে ক্ষমা চাচ্ছি। নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন বলেন, জেলার পুলিশ সদস্যরা এখনো ট্রমার মধ্যে রয়েছে। তাদের স্বাভাবিক হতে একটু সময় লাগবে। তাদের কাউন্সেলিং করছি। বিগত কয়েক দিনের ঘটনার জন্য আমি ক্ষমা চাচ্ছি।
- আরও পড়ুনঃ আগামীকাল দেশে ফিরছেন ড. ইউনূস
সাংবাদিকসহ আরও কয়েকজন ব্যক্তির ছোট ছোট বক্তব্য শোনার পর সমাপনী বক্তব্যে মেজর জেনারেল মোহাম্মদ মাহবুবুর রশীদ বলেন, কুষ্টিয়া শান্তির জেলা ও সংস্কৃতির রাজধানী। একটু পরে সরকার গঠনের পর আশা করছি এখানে পূর্ণ স্বাভাবিকতা ফিরে আসবে। নতুন করে শুরু করব। আপনারা সবাই সহযোগিতা করবেন।
প্রিন্ট