বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনে মাগুরার মহম্মদপুরে দুই আন্দোলনকারী নিহত হয়েছেন এবং অপর একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
এ সময় শহরের উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় এবং উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন অফিস, ইউএনও’র বাসভবনে ব্যাপক ভাংচুর এবং অগ্নিসংযোগ করে। রবিবার দুপুরে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনে এই ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- আমিনুর রহমান কলেজের একাদশ বর্ষের ছাত্র উপজেলা সদরে ব্যাপারীপাড়ার ইউনুচ আলীর ছেলে আহাদ আলী এবং বালিদিয়া গ্রামের কানু শেখের ছেলে এইচএসসি পরীক্ষার্থী সুমন শেখ। গুলিবিদ্ধ ছাত্রটি হলো- বাবুখালী ইউনিয়নের
হরিনাডাঙ্গা গ্রামের কলম শিকদারের ছেলে, ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রবিন শিকদার।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রবিবার সকালে আন্দোলনকারীরা ক্রমাগত আমিনুর রহমান কলেজ মাঠে জড়ো হতে থাকে। এ সময় সামনে ও প্রেট্রল পাম্প এলাকায় পুলিশ, আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠনের সাথে আন্দোলনকারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। পরে পুলিশ রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে কিন্তু আন্দোলনকারীদের তোপের মুখে পড়ে পুলিশ পিছু হটতে বাধ্য হয়। এতে কয়েকজন পুলিশ সদস্য ও বেশকিছু আন্দোলনকারী ছাত্ররা আহত হয়।
এ সময় কয়েকজন আন্দোলনকারীকে পুলিশ আটক করেছে এ খবরে তারা উল্লাস করে শহরে প্রবেশ করে প্রথমে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে ব্যাপক ভাংচুর এবং আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এরপর তারা থানা অভিমুখে যাত্রা শুরু করে। পুলিশ বাধা দিয়ে তাদের গতিরোধ করতে ব্যার্থ হলে সংঘবদ্ধ আন্দোলনকারীরা থানার মধ্যে ঢোকার চেষ্টা করলে পুলিশ গুলি ছুড়তে বাধ্য হয়।
এ সময় তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়। দুইজন ঘটনাস্থলেই মারা যায় এবং অন্যজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
তিনজন ছাত্র মারা গেছে এমন সংবাদ পেয়ে আন্দোলনকারী সহ¯্রাধীক বিক্ষুদ্ধ জনতা উপজেলা পরিষদের প্রধান গেইট ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বাসভবন, উপজেলা চেয়ারম্যানের বাসভবন ও বেশ কয়েকটি অফিসে ব্যাপক ভাংচুর ও অগ্নি সংযোযোগের ঘটনা ঘটায়। এ সময় ইউএনও’র ব্যবহৃত গাড়ি ও ৪০টি মটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
প্রিন্ট