মাছে ভাতে বাঙ্গালী এ প্রবাদের প্রচলন বহুকাল থেকে। কিন্তু পুকুর এবং নদী ভরাট ও কৃষিতে কীটনাশকের অবাধ ব্যবহারের ফলে নওগাঁর আত্রাই উপজেলায় বর্তমানে দেশি প্রজাতির মাছের আকাল দেখা দিয়েছে। আত্রাইসহ অনান্য নদী নাব্য কমে যাওয়াসহ নানা কারণে এখানে জীব বৈচিত্র্য ধ্বংসের ফলে দেশি মাছের অভাব দেখা দিয়েছে বলে যানা যায়। জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব আর মানবসৃষ্ট নানা কারনে মাছ মারাত্বক ভাবে বিপন্ন। খাল বিলে মাছের এই আকাল হটাৎ করে দেখা দেয়নি এই সংকট কয়েক বছর ধরে।
কারণ হিসেবে স্হানীয় বাসিন্দা এবং জেলেরা বলেছেন অধিক ফলনের আশায় জমিতে ইউরিয়া সার ও কীটনাশক ব্যবহারের কারণে নদী ও খাল বিলে মাছ পাওয়া যায় না। ভরা মৌসুমে ও খাল বিল এবং জলাশয়ে মাছ কম থাকে। এছাড়া গত বছর আগাম বন্যার পর দ্রুত পানি নেমে যাওয়ায় অধিকাংশ নদ নদীসহ জলাশয়ে স্বাভাবিক পানি ছিল না।
এতে করে মাছে প্রজনন এবং বিচরণ ক্ষেত্র কমে যাওয়ায় এ বছর নদ নদীতেও মাছের উৎপাদন কমে গেছে মানুষ তাদের আমিষের চাহিদা পূরণ করে মাছ থেকে এই সময় টাতে সাধারণত খাল বিল শুকিয়ে মাছের ব্যাপক আমদানি হতো। মার্চ এবং এপ্রিল মাসকে মাছের মৌসুম বলা হয় কিন্তু এবছর বাতিক্রম বজারে মাছ নেই। বর্তমানে মাছের দাম গত দুই মাসে প্রাই দ্বিগুণ বেড়ে গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ক্রেতার তুলনায় বাজারে মাছের সরবারাহ নেই বললেই চলে।
ফলে এখন থেকেই স্হানীয় বাজার এবং হাট গুলোতে বিশেষ করে দেশি মাছের দাম আরও বেড়েছে। উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে এক কেজি দেশি কৈ মাছ বিক্রি হচ্ছে ৫০০টাকায় এবং এক কেজি শিং ও মাগুর মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকায়। ৩০০টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে পাপদা মাছ। টেংরা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকায়। দাম বেড়েছে ছোট মাছ পুঁটি,মলা,ধেলা,টেংরা, চেলা, বজুরির ও। আত্রাই এর বাসিন্দা শিক্ষক রুহুল আমীন বলেন এমনিতেই চালসহ প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম ক্রয় ক্ষমতার বহিরে চলে গেছে।বর্তমানে মাছের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের মতো পরিবার গুলো পরেছে বিপাকে।
ব্যাবসাহি আজিজ বলেন আত্রাইয়ে মাছের দাম কম ও সহজেই পাওয়া যায় দীর্ঘ দিন ধরে চালু এ কথাটি এখন মিথ্যা হতে চলেছে। একসময় লোকজন বলত আত্রাই ঘাট মাছের জন্য বিখ্যাত। এ কথার এখন কোন যুক্তি কথা নেই। মাছ ব্যবসাহি বিজয় বলেন বাজারে মাছের চাহিদা একদম কমে গেছে তাছাড়া খাল বিল জলাশয় জলমহাল থেকে প্রচুর মাছে বাজারে আসত এবছর তাও আসছে না মাছের দাম এবছর দ্বিগুণের ও বেশি। আমরা ব্যবসাহিরা কুলে উঠতে পারছি না। চাকরিজীবী সদরুল লুৎফর আইনজীবী সহকারী উসমানসহ অন্তত দশ জনের সাথে কথা বলে জানা গেছে মাস শেষে যে পরিমাণ বেতন পান তারা তাদিয়ে কোন রকমে সংসার চলত। কিন্তু গত কয়েক মাসে হাঠাৎ করে পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন আর ভাতের থালায় মাছ তুলতে পারছেন না। ছেলে মেয়েদের সামনে নিজেদের খুবই অসহায় মনে হয়।
উপজেলা সিনিয়র মস্য কর্মকর্তা পলাশ অধীকারি বলেন গত বছর আগাম বন্যার পর পানি নেমে যাওয়ায় এবং অকাল বন্যায় ফিসারিও বন্ধ জলাশয়ের মাছ পানিতে ভেসে যাওয়ায় ও এবছর তুলনামুলক মাছের উৎপাদন কম হয়েছে। ফলে বাজারে মাছের আকাল দেখা দিয়েছে।
প্রিন্ট